মূলভাবঃ দুর্নীতি একটি সমাজের তথা একটি জাতির জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর এবং ধ্বংসাত্মক। এটি একটি সামাজিক রোগ, যা জাতীয় জীবনের প্রতিটি স্তরে প্রবেশ করে সমাজের অগ্রগতি ও উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে। দুর্নীতি সমাজে অসাম্য, বৈষম্য এবং অবিচারের জন্ম দেয়, যা জাতির সমগ্র কাঠামোকে দুর্বল করে দেয়।
সম্প্রসারিত ভাবঃ দুর্নীতির কারণে সমাজে সঠিক ও ন্যায়বিচারের অভাব দেখা দেয়। এটি একটি সমাজের নৈতিকতা ও মূল্যবোধকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং মানুষকে নৈতিক অবক্ষয়ের পথে ঠেলে দেয়। দুর্নীতির মাধ্যমে অযোগ্য লোকেরা ক্ষমতা ও সম্পদ লাভ করে, যা মেধাবী ও সৎ ব্যক্তিদের প্রাপ্য সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে। এর ফলে সমাজে ন্যায্যতার অভাব দেখা দেয় এবং মানুষ হতাশা ও অস্থিরতার শিকার হয়।
অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও দুর্নীতির নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে। এটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি শ্লথ করে এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা হারায়। দুর্নীতির কারণে সরকারী সম্পদ অপচয় হয় এবং জাতীয় সম্পদের সুষ্ঠু বণ্টন সম্ভব হয় না। এতে দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠী আরও দরিদ্র হয় এবং ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে ব্যবধান বৃদ্ধি পায়।
দুর্নীতি জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও হুমকি স্বরূপ। দুর্নীতির ফলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর কার্যকারিতা কমে যায় এবং অপরাধীরা সহজেই আইনের হাত থেকে বেঁচে যায়। এছাড়াও, দুর্নীতির কারণে দেশি-বিদেশি নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে সমস্যা সৃষ্টি হয়।
মন্তব্যঃ সমাজে সঠিক নৈতিকতা প্রতিষ্ঠা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। ন্যায়বিচার, সততা, এবং স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দুর্নীতি রোধ করা সম্ভব। দুর্নীতি একটি জাতির জীবনে অভিশাপস্বরূপ, যা জাতির উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে প্রধান বাধা। তাই, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং কঠোর আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে একটি সুস্থ ও সমৃদ্ধ সমাজ গঠন করতে হবে।