ভাবসম্প্রসারণঃ পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি

মূলভাবঃ বাংলা প্রবাদে বলা হয়েছে, "পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি," অর্থাৎ পরিশ্রমই সৌভাগ্যের জন্ম দেয়। এটি একটি গভীর এবং বাস্তবমুখী সত্যকে তুলে ধরে। পরিশ্রম ছাড়া কোনো কাজেই সাফল্য আসে না, এবং পরিশ্রমের মাধ্যমেই মানুষ নিজের সৌভাগ্য তৈরি করতে পারে।


সম্প্রসারিত ভাবঃ প্রকৃতিতে, আমরা দেখি যে প্রতিটি জিনিসই কোনো না কোনো প্রচেষ্টার ফল। উদাহরণস্বরূপ, কৃষক জমিতে ফসল ফলাতে দিনরাত পরিশ্রম করে, তখনই তারা ভালো ফসল পায়। একজন ছাত্র পড়াশোনায় মনোযোগ দিয়ে পরিশ্রম করলে ভালো ফলাফল পায়। এমনকি প্রাকৃতিক দৃষ্টিকোণ থেকেও, গাছের বীজ থেকে বৃক্ষ জন্মায় প্রচুর সময় এবং প্রাকৃতিক পরিশ্রমের মাধ্যমে।

মানুষের জীবনে সফলতা অর্জনের জন্য ধৈর্য, অধ্যবসায়, এবং কঠোর পরিশ্রমের বিকল্প নেই। মহান ব্যক্তিদের জীবনের দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই যে তারা কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে তাদের লক্ষ্যে পৌঁছেছেন। উদাহরণস্বরূপ, বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন, লেখক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সবাই তাদের জীবনে অনেক কষ্ট এবং পরিশ্রম করেছেন এবং সেই পরিশ্রমের ফলেই তারা তাদের লক্ষ্যে পৌঁছেছেন।

আধুনিক বিশ্বের প্রতিটি উন্নত জাতির ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে তারা সবাই নিরন্তর প্রচেষ্টা ও শ্রমের মাধ্যমে উন্নতির শিখরে পৌঁছেছে। একমাত্র কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমেই ব্যক্তিগত বা জাতীয় জীবনে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জন করা সম্ভব। জীবনে সফলতা অর্জনের জন্য পরিশ্রমের কোনো বিকল্প নেই। নিরলস শ্রম ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে মানুষ আজ জীবজগতে শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করেছে। প্রকৃতপক্ষে, পৃথিবীতে মানুষের প্রতিটি সাফল্যের মূলে রয়েছে অক্লান্ত পরিশ্রম ও অধ্যবসায়। পরিশ্রমের সিঁড়ি বেয়ে মানুষ সাফল্যের শিখরে আরোহণ করে।

পরিশ্রম ছাড়া কোনো কিছুই অর্জন করা সম্ভব নয়। মানুষ যখন পরিশ্রম করে, তখন সে নিজের দক্ষতা এবং জ্ঞান বাড়ায়, যা তার সৌভাগ্যকে বাড়িয়ে তোলে। এই প্রবাদটি আমাদের শিখায় যে জীবনে সফলতা এবং সৌভাগ্য অর্জনের জন্য একমাত্র উপায় হলো নিরলস পরিশ্রম করা।

মন্তব্যঃ পরিশ্রম হলো সাফল্যের চাবিকাঠি। এটি মানুষের সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ গড়ে তোলে। যে জাতি যত বেশি পরিশ্রমী, সে জাতি তত উন্নত। ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগত পরিশ্রম এবং সাধনাই একটি জাতির সৌভাগ্যের মূল কারণ। তাই বলা হয়, পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি।
Previous Post Next Post

نموذج الاتصال