মূলভাবঃ মানুষের মহৎ, উদার ও চরিত্রবান হওয়ার গুণ অন্যের ভালো বা মন্দ আচরণের ওপর নির্ভর করে না। উত্তম স্বভাবের মানুষ কখনো হীন স্বভাবের মানুষের মতো আচরণ করেন না বা করতে পারেন না।
সম্প্রসারিত ভাবঃ "তুমি অধম, তাই বলিয়া আমি উত্তম না হইব কেন?"—এই প্রবাদটি আমাদের সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন ঘটায়। এখানে 'তুমি অধম' বলতে বোঝানো হয়েছে অপর ব্যক্তি যদি কোনো খারাপ কাজ করে, তাহলে আমাদেরও সেই খারাপ কাজটি করার কোনো যুক্তি নেই। এই প্রবাদটি আমাদের নৈতিকতার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়, যে আমরা কেবল অন্যের কাজের ওপর ভিত্তি করে আমাদের নিজের কাজ ঠিক করি না।
এই বাক্যে বলা হয়েছে যে, অন্যের খারাপ কাজ বা দোষত্রুটির প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেই আমরা নিজেদের নৈতিক মানদণ্ডকে কমাতে পারি না। আমাদের উচিত সবসময় উত্তম চরিত্র বজায় রাখা, এমনকি যখন অন্যরা সঠিক পথে না চলতে পারে। এটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, প্রত্যেকের নিজেদের নৈতিকতা ও ন্যায়পরায়ণতার প্রতি দায়িত্ব রয়েছে।
এই প্রবাদটি সমাজের মধ্যে নৈতিকতার ধারণাকে প্রমোট করে, যেখানে আমরা নিজেদের কাজ ও সিদ্ধান্তের জন্য দায়ী এবং অন্যের কাজের প্রভাব আমাদের আচরণের মানদণ্ড ঠিক করতে পারে না। সুতরাং, "তুমি অধম, তাই বলিয়া আমি উত্তম না হইব কেন?" এই প্রশ্নটি আমাদের নিজের এবং সমাজের মঙ্গলার্থে সবসময় উত্তম পথে চলার আহ্বান জানায়।
মন্তব্যঃ মন্দ স্বভাবের মানুষ সাধারণত নিজের ও সমাজের ক্ষতির চিন্তায় মগ্ন থাকে। তারা হিংসা, বিদ্বেষ, এবং অনৈতিকতার পথে পরিচালিত হয়। তবে উত্তম স্বভাবের মানুষের জন্য এমন আচরণ বা চিন্তা অপ্রত্যাশিত এবং অনুচিত। উত্তম স্বভাবের ব্যক্তিরা সবসময় ন্যায়, সততা, এবং সদাচরণের পথে থাকেন এবং অন্যদের কল্যাণে মনোনিবেশ করেন। তাদের মূলনীতি হলো নৈতিকতা ও সৎভাবে জীবন যাপন করা, যা তাদের মন্দ স্বভাবের মানুষের চেয়ে আলাদা করে।