প্রশ্ন -৫ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
লিয়াকত ও জহুর দুই বন্ধু। লিয়াকত মুখে আল্লাহকে স্বীকার করে ও অন্তরে বিশ্বাস করে। কিন্তু আসলে এর কোনো প্রতিফলন নেই। সে বলে, অন্তর দিয়ে আল্লাহকে বিশ্বাস করলেই হলো। অপরদিকে, জহুর কমিউনিটি হাসপাতালের ওষুধপত্র সংরক্ষণের দায়িত্বে নিয়োজিত। সে হাসপাতালের ওষুধ গোপনে সরিয়ে বাইরে বিক্রি করে দেয় এবং মানুষের সঙ্গে কথা দিয়ে কথা রক্ষা করে না।
ক. ‘মুহাইমিনুন শব্দের অর্থ কী? ১
খ. আকাইদ বলতে কী বোঝায়? ২
গ. জহুরের কর্মকাণ্ডে কী ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. লিয়াকত কী প্রকৃত ইমানদার? পাঠ্যবইয়ের আলোকে বিশ্লেষণ কর। ৪
৫নং প্রশ্নের উত্তর
ক. মুহাইমিনুন শব্দের অর্থ নিরাপত্তাদানকারী, রক্ষণাবেক্ষণকারী, আশ্রয়দাতা।
খ. ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলোর ওপর বিশ্বাস করার নামই হলো আকাইদ। ইসলাম ধর্মের অনুসারী হওয়ার জন্য সর্বপ্রথম মৌলিক কতিপয় বিষয়ের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করতে হয়। যেমন : আল্লাহ তায়ালা, নবি-রাসুল, ফেরেশতা, আখিরাত ইত্যাদির ওপর বিশ্বাস স্থাপন করা। এগুলোই আকাইদ।
গ. জহুরের কর্মকাণ্ডে নিফাকের বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে।
মুখে ইমানের স্বীকার ও অন্তরে অবিশ্বাস করাকে নিফাক বলে। যে ব্যক্তি এরূপ করে তাকে বলা হয় মুনাফিক। তারা যখন কথা বলে তখন মিথ্যা বলে, ওয়াদা করলে তা ভঙ্গ করে এবং কোনো জিনিস আমানত রাখলে তা খিয়ানত করে। জহুরের কর্মকাণ্ডেও তা প্রকাশ পেয়েছে। সে হাসপাতালের ওষুধ গোপনে সরিয়ে বাইরে বিক্রি করে দেয় যা তার নিকট আমানত ছিল; এছাড়া মানুষের সাথে কোনো কথা দিলেও তা রক্ষা করে না। তার এ লক্ষণগুলো মুনাফিকেরই নিদর্শন। তাই উপরোক্ত আলোচনার দ্বারা এটা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, জহুরের কর্মকাণ্ডে নিফাকের বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে।
ঘ. লিয়াকত প্রকৃত ইমানদার নয়।
ইসলামের যাবতীয় বিষয়ের প্রতি আন্তরিক বিশ্বাস, মৌখিক স্বীকৃতি ও তদানুযায়ী আমল করার নাম হলো ইমান। কেউ যদি শুধু অন্তরে বিশ্বাস করে, কিন্তু মুখে স্বীকার না করে তবে সে প্রকৃতপক্ষে ইমানদার বা মুমিন হিসেবে গণ্য হয় না। আবার মুখে স্বীকার করে অন্তরে বিশ্বাস না করলেও কোনো ব্যক্তি ইমানদার হতে পারে না। বস্তুত আন্তরিক বিশ্বাস, মৌখিক স্বীকতি ও তদনুযায়ী আমলের সমষ্টিই হলো প্রকৃত ইমান।
উদ্দীপকের লিয়াকতের মধ্যে ইমানের সেরকম কোনো লক্ষণ পাওয়া যায় না। লিয়াকত মুখে আল্লাহকে স্বীকার এবং অন্তরে বিশ্বাস করে কিন্তু তার মধ্যে আমলের কোনো প্রতিফলন নেই। তার উচিত ছিল মুখে ও অন্তরে আল্লাহকে স্বীকার করার পাশাপাশি আমলের মাধ্যমে তা কাজে পরিণত করা। যদি কথা ও কাজ এক রকম হতো তবে তাকে খাঁটি ও প্রকৃত ইমানদার বলা হতো। এখন যেহেতু কথা ও কাজে তার মিল নেই তাই তাকে প্রকৃত ইমানদার বলা যায় না।
প্রশ্ন -৬ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
ফুয়াদ ও ফাহিম দুই ভাই। ফুয়াদের বিশ্বাস কিয়ামতের দিন মানুষেরা অস্থির হয়ে প্রধান প্রধান নবিগণের নিকট গিয়ে আল্লাহর কাছে সুপারিশ করার জন্য আবেদন করবে। নবিগণ অক্ষমতা প্রকাশ করলে মানুষের অনুরোধে মহানবি (স) আল্লাহর কাছে সুপারিশ করবেন। পক্ষান্তরে তার ভাই ফাহিম দুনিয়াকেই সবকিছু মনে করে। ফলে সে যে কোনো উপায়ে দুনিয়ার স্বার্থ হাসিল করতে চায়। অন্যায়, অত্যাচার ও অনৈতিক কার্যকলাপ করতে দ্বিধাবোধ করে না।
ক. ‘জান্নাত’ শব্দের অর্থ কী? ১
খ. ‘সালাত হলো জান্নাতের চাবি।’Ñ বুঝিয়ে লেখ। ২
গ. ফুয়াদের উক্ত বিশ্বাসে কোন প্রকারের শাফাআত প্রকাশ পেয়েছে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. ‘ফাহিমের কর্মকাণ্ডে আখিরাতের প্রতি বিশ্বাসের অভাব রয়েছে।’Ñ মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর। ৪
৬নং প্রশ্নের উত্তর
ক. জান্নাত শব্দের অর্থ বাগান, উদ্যান, আবৃত স্থান।খ. সালাত আদায়কারী ব্যক্তি দুনিয়াতে যেমন মর্যাদা পায় তেমনি আখিরাতেও জান্নাত লাভ করবে। সালাত আল্লাহর সঙ্গে আধ্যাত্মিক সংযোগ স্থাপনকারী। সালাতের মাধ্যমেই বান্দা আল্লাহর সবচেয়ে বেশি নৈকট্য লাভ করতে পারে। কারও হাতে কোনো ঘরের চাবি থাকলে যেমন অতি সহজেই ঘরে প্রবেশ করতে পারে তেমনি সালাত আদায়কারীও সহজে জান্নাতের প্রবেশ করবে বিধায় সালাতকে জান্নাতের চাবি বলা হয়েছে।
গ. উদ্দীপকে ফুয়াদের বিশ্বাসে শাফাআতে কুবরা প্রকাশ পেয়েছে।
কিয়ামতের দিন সকল মানুষকে এক বিশাল ময়দানে উপস্থিত করা হলে সূর্য খুব নিকটবর্তী হবে। মানুষ অসহনীয় দুঃখ-কষ্টে নিপতিত হবে। এ সময় সব মানুষ হযরত আদম (আ), হযরত নূহ (আ), হযরত ইবরাহিম (আ), হযরত মুসা (আ) ও হযরত ঈসা (আ)-এর নিকট উপস্থিতি হয়ে হিসাব-নিকাশ শুরু করার জন্য আল্লাহর নিকট শাফাআত করতে অনুরোধ করবেন। সবাই অপারগতা প্রকাশ করলে সব মানুষ মহানবি (স)-এর নিকট উপিস্থিত হবে। মহানবি (স) আল্লাহ তায়ালার নিকট সুপারিশ করবেন। অতঃপর আল্লাহ তায়ালা হিসাব নিকাশ শুরু করবেন। এ শাফায়াতকে বলা হয় শাফাআতে কুবরা। উদ্দীপকের ফুয়াদের বিশ্বাসেও একই কথা ফুটে উঠেছে। সুতরাং ফুয়াদের বিশ্বাসে শাফাআতে কুবরা প্রকাশ পেয়েছে।
ঘ. ‘ফাহিমের কর্মকাণ্ডে আখিরাতে বিশ্বাসের অভাব রয়েছে’Ñ উদ্দীপকের মন্তব্যটি যথাযথ।
ফাহিম দুনিয়াকেই সবকিছু মনে করে। ফলে সে যে কোনো উপায়ে দুনিয়ার স্বার্থ হাসিল করতে চায়। অন্যায়, অত্যাচার ও অনৈতিক কার্যকলাপ করতে দ্বিধাবোধ করে না। ফাহিম যদি আখিরাতে বিশ্বাস করতো তাহলে কোন প্রকার অন্যায় কাজে লিপ্ত হতে পারতো না। কেননা আখিরাতের বিশ্বাস মানুষকে পাপ কাজ থেকে বিরত রাখে। কারণ আখিরাতে বিশ্বাসী ব্যক্তি জানে যে পরকালে তার সকল কর্মের জন্য আল্লাহর নিকট হিসাব দিতে হবে। তাই অন্যায় অত্যাচার, অনৈতিক কার্যকলাপ থেকে সে বিরত থাকে। আর যে ব্যক্তি আখিরাতে বিশ্বাস করে না সে দুনিয়াকেই সবকিছু মনে করে। ফলে যেকোনো উপায়ে দুনিয়ার স্বার্থ হাসিল করতে চায়। অন্যায়, অত্যাচার, অনৈতিক কার্যকলাপ সবকিছুই তার দ্বারা সংঘটিত হয়। যেকোনো পাপ করতে সে দ্বিধাবোধ করে না। যেমনটি উদ্দীপকের ফাহিমের মাঝেও দেখা যায়। সুতরাং, এটাই প্রমাণিত হয় যে, ফাহিমের কর্মকাণ্ডে আখিরাতে বিশ্বাসের অভাব রয়েছে।
Image source by google
সুন্দর হয়েছে,ধারাবাহিকভাবে দিলে ভালো হবে।
ReplyDeleteধন্যবাদ
Delete