এই দেশ এই মানুষ
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর লেখ।
বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে নানা ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর লোকজন বাস করে। তাদের রয়েছে নিজস্ব জীবনযাপন পদ্ধতি, আনন্দ উৎসব। বাংলাদেশের বৃহত্তর ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, নেত্রকোনা, হালুয়াঘাট ও আশপাশের এলাকায় গারো জাতিগোষ্ঠীর বাস। গারোরা নিজেদের ‘অচিকমান্দি’ বা পাহাড়ি মানুষ হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকে। গারো সমাজ মাতৃতান্ত্রিক। অর্থাৎ মা পরিবারের প্রধান ও মেয়েরা সম্পদের উত্তরাধিকারী। বাবা বিয়ের পর স্ত্রীর সাথে শ্বশুরালয়ে থাকেন এবং পরিবারের দেখাশোনা করেন। গারোরা ‘আবেং’ ভাষায় কথা বলে, যার কোনো লিখিত রূপ নেই। আরেকটি ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী হলো ত্রিপুরা। এরা বাংলা বছরের সমাপনী দুদিন এবং নববর্ষের প্রথম দিন ‘বৈসু’ উৎসব পালন করে। তখন গ্রামবাসী গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়ায়, কিশোরীরা কানে ফুল, গলায় টাকার ছড়া, পুঁতির মালা আর হাতে কুঁচিবালা ইত্যাদি পরে আনন্দ উৎসবে মাতে। এই দিন ত্রিপুরা নারীরা ১০৮ প্রজাতির লতাপাতা ও ফলমূল সংগ্রহ করে বাড়িতে রান্না করে ও অতিথিদের আপ্যায়ন করে। বাংলাদেশের আরেকটি উল্লেখযোগ্য জাতিগোষ্ঠী হলো মণিপুরি। তাদের আদিবাস ভারতের আসাম ও মণিপুর রাজ্য। বর্তমানে তারা বাংলাদেশের সিলেট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলায় বাস করে। এরা মূলত কৃষিজীবী। অধিকাংশই সনাতন ধর্মের অনুসারী। মণিপুরি সংস্কৃতি খুবই সমৃদ্ধ।
সঠিক উত্তরটি উত্তরপত্রে লেখ।
১) গারোরা নিজেদের কী হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকে?
(ক) পাহাড়ি মানুষ (খ) নদীর মানুষ (গ) মাটির মানুষ (ঘ) বন মানুষ
২) ‘বৈসু’ উৎসব পালিত হয়
(ক) বিয়ে উপলক্ষ্যে (খ) জন্মদিন উপলক্ষ্যে
(গ) পূজা উপলক্ষ্যে (ঘ) নববর্ষ উপলক্ষ্যে
৩) অনুচ্ছেদটি পড়ে আমরা জানতে পারব
(ক) বাংলাদেশের মানুষের পেশা সম্বন্ধে
(খ) বাংলাদেশের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর পরিচয়
(গ) বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সম্বন্ধে
(ঘ) বাংলাদেশের বিভিন্ন ধর্মের মানুষ সম্বন্ধে
৪) গারো নৃগোষ্ঠীর জীবনধারা দেখার জন্য তোমাকে কোথায় যেতে হবে?
(ক) মৌলভীবাজার (খ) হালুয়াঘাট (গ) হবিগঞ্জ (ঘ) চট্টগ্রাম
৫) গারো, মণিপুরি ও ত্রিপুরারা তৈরি করেছে
(ক) প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য (খ) ধর্মীয় বৈষম্য
(গ) জাতিগত বৈচিত্র্য (ঘ) জাতীয় সমস্যা
নিচে কয়েকটি শব্দ ও শব্দার্থ দেওয়া হলো। উপযুক্ত শব্দটি দিয়ে নিচের বাক্যগুলোর শূন্যস্থান পূরণ কর।
শব্দ অর্থ
সনাতন চিরস্থায়ী
মাতৃতান্ত্রিক মা কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত
উত্তরাধিকারী স্বজনের মৃত্যুর পর সম্পত্তির মালিক
শ্বশুরালয় শ্বশুরবাড়ি
সমাপনী শেষ
সমৃদ্ধ উন্নত
ক) বিলেত একটি সমৃদ্ধ নগরী।
খ) বড় আপা শ্বশুরালয় থেকে আমাদের বাড়ি এলেন।
গ) সভাপতি সাহেব সমাপনী ভাষণ দিলেন।
ঘ) মাতৃতান্ত্রিক পরিবারে মায়েরাই প্রধান।
ঙ) সালাম তার বাবার সম্পত্তির একমাত্র উত্তরাধিকারী।
নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লেখ।
ক) ত্রিপুরারা কোন কোন দিন ‘বৈসু’ উৎসব পালন করে? উৎসবটি তারা যেভাবে পালন করে তা তিনটি বাক্যে লেখ।
উত্তর : ত্রিপুরারা বাংলা বছরের শেষ দুদিন এবং বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন ‘বৈসু’ উৎসব পালন করে। নিচে তিনটি বাক্যে তাদের উৎসব পালন সম্পর্কে লেখা হলো
১) ‘বৈসু’ উৎসবের সময় গ্রামবাসী ত্রিপুরারা গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়ায়।
২) কিশোরীরা কানে পরে ফুল, গলায় ঝোলায় টাকার ছড়া, পুঁতির মালা আর হাতে থাকে কুঁচিবালা।
৩) এই দিন ত্রিপুরা নারীরা ১০৮ প্রজাতির লতাপাতা ও ফলমূল সংগ্রহ করে বাড়িতে রান্না করে ও অতিথিদের আপ্যায়ন করে।
খ) মণিপুরিদের সম্পর্কে পাঁচটি বাক্য লেখ।
উত্তর : মণিপুরিদের সম্পর্কে পাঁচটি বাক্য নিচে উল্লেখ করা হলো-
১) মণিপুরিদের আদি নিবাস ছিল ভারতের আসাম ও মণিপুর রাজ্যে।
২) বাংলাদেশের সিলেট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলায় মণিপুরিরা বাস করে।
৩) মণিপুরিদের মূল পেশা কৃষিকাজ।
৪) মণিপুরিরা মূলত সনাতন ধর্মের অনুসারী।
৫) মণিপুরিদের সংস্কৃতি অত্যন্ত সমৃদ্ধ।
গ) ‘গারো সমাজ মাতৃতান্ত্রিক কথাটি চারটি বাক্যে বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর : গারো সমাজে মায়েরাই পরিবারের প্রধানের ভূমিকা পালন করেনÑ কথাটির মাধ্যমে এ বিষয়টিই বোঝানো হয়েছে। এ সমাজে পুরুষ তাঁর স্ত্রীর সাথে শ্বশুরবাড়িতে থাকেন। পুরুষরাই পরিবার দেখাশোনার কাজ করেন। মেয়েরা সম্পদের উত্তরাধিকারী হয়।
ঘ) গারোরা বাংলাদেশে কোন কোন স্থানে বসবাস করে? ‘আবেং’ সম্পর্কে দুটি বাক্য লেখ।
উত্তর : গারোরা বাংলাদেশের বৃহত্তর ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, টাঙ্গাইল, হালুয়াঘাট ও আশপাশের এলাকাগুলোতে বসবাস করে।
‘আবেং’ হচ্ছে গারোদের নিজস্ব ভাষা। এ ভাষার কোনো লিখিত রূপ নেই।
যুক্তবর্ণ বিভাজন ও বাক্যে প্রয়োগ
উত্তর :
যুক্তবর্ণ বিভাজন যুক্তবর্ণ দিয়ে শব্দ বাক্যে প্রয়োগ
স্ট = স + ট - স্ট্যাম্প - চিঠির খামের ওপর স্ট্যাম্প লাগাতে হয়।
ত্র = ত + র-ফলা ( ্র ) - পত্রিকা - বাবা পত্রিকা পড়ছেন।
ন্ধ = ন + ধ - সন্ধ্যা - সন্ধ্যায় বাড়ি যাব।
ন্দ = ন + দ - পছন্দ - খুকীর পছন্দ লাল জামা।
স্ব = স + ব-ফলা ( ¦ ) - অস্বীকার - লোকটি সব অভিযোগ অস্বীকার করল।
দ্র = দ + র-ফলা ( ্র ) - মুদ্রা - বাংলাদেশের মুদ্রার নাম ‘টাকা’।
ম্প = ম + প - সুসম্পর্ক - আপনজনদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা উচিত। ন্ত = ন + ত - জন্তু - হাতি বিশাল জন্তু।
দ্দ = দ + দ - খদ্দের - দোকানটিতে খদ্দের নেই।
ষ্ঠ = ষ + ঠ - পৃষ্ঠা - বইটিতে ১০০টি পৃষ্ঠা আছে।
চ্ছ = চ + ছ - গুচ্ছ - একগুচ্ছ রজনীগন্ধা কিনেছি।
প্র = প + র-ফলা ( ্র ) - প্রশ্ন - প্রশ্নটি বুঝতে পারিনি