আকাশ
আব্দুল্লাহ আল-মুতী
আব্দুল্লাহ আল-মুতী
প্রশ্ন- ১ রোগ নির্ণয়ে প্রাচীন পদ্ধতি
রফিক সাহেব একজন চিকিৎসক। চিকিৎসা করার পাশাপাশি তিনি রোগীর স্বজনদের রোগ-শোকের খবরও নিতেন। হাত দিয়ে রোগীর মাথা, কপাল ও পেট টিপে রোগ নির্ণয় করে ওষুধ দিতেন। আধুনিক পদ্ধতিতে রোগ নির্ণয় করতে বললেও তিনি তাঁর পদ্ধতিকেই উপযুক্ত মনে করতেন। রফিক সাহেবের ছেলে সুমন এখন বিখ্যাত চিকিৎসক। সুমন সাহেবের রোগ নির্ণয়ের প্রক্রিয়াই ভিন্ন। আলট্রাসনোগ্রাফি, ইসিজি, এক্সরে ইত্যাদির মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করে তিনি চিকিৎসা করেন। আধুনিক ধ্যান-ধারণা এবং গবেষণাই বিজ্ঞানের জগতে ব্যাপক গতি এনে দিয়েছে।
রফিক সাহেব একজন চিকিৎসক। চিকিৎসা করার পাশাপাশি তিনি রোগীর স্বজনদের রোগ-শোকের খবরও নিতেন। হাত দিয়ে রোগীর মাথা, কপাল ও পেট টিপে রোগ নির্ণয় করে ওষুধ দিতেন। আধুনিক পদ্ধতিতে রোগ নির্ণয় করতে বললেও তিনি তাঁর পদ্ধতিকেই উপযুক্ত মনে করতেন। রফিক সাহেবের ছেলে সুমন এখন বিখ্যাত চিকিৎসক। সুমন সাহেবের রোগ নির্ণয়ের প্রক্রিয়াই ভিন্ন। আলট্রাসনোগ্রাফি, ইসিজি, এক্সরে ইত্যাদির মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করে তিনি চিকিৎসা করেন। আধুনিক ধ্যান-ধারণা এবং গবেষণাই বিজ্ঞানের জগতে ব্যাপক গতি এনে দিয়েছে।
ক. ‘চাঁদোয়া’ অর্থ কী?
খ. প্রবন্ধটির নাম ‘আকাশ’ রাখার কারণ ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের রফিক সাহেবের মধ্যে ‘আকাশ’ শীর্ষক প্রবন্ধের কোন দিকটি উঠে এসেছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “আধুনিক ধ্যান-ধারণা এবং গবেষণাই বিজ্ঞানের জগতে ব্যাপক গতি এনে দিয়েছে” উদ্দীপক এবং আকাশ প্রবন্ধের আলোকে বিশ্লেষণ কর।
ক) ‘চাঁদোয়া’ শব্দের অর্থ শামিয়ানা বা কাপড়ের ছাউনি।
খ) আকাশ সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য থাকায় প্রবন্ধটি নাম ‘আকাশ’ রাখা হয়। সার্থক নামকরণ সাহিত্য শিল্পের অন্যতম প্রধান গুণ। নামকরণের মাধ্যমে শিল্পীমনের মননশীলতায় পরিচয় পাওয়া যায়। একটি সুন্দর ও সার্থক শিরোনামের মাধ্যমে সমগ্র রচনায় ধরন ও বক্তব্য আভাসিত হয়। ‘আকাশ’ প্রবন্ধের নামকরণ করা হয়েছে বিষয়বস্তুকে কেন্দ্র করে। এ প্রবন্ধে আকাশের বিভিন্ন পরীক্ষা, নিরীক্ষা ও গবেষণায় দিক বর্ণনা করা হয়েছে। তাই প্রবন্ধটির নাম ‘আকাশ’ রাখা হয়েছে।
গ ‘আকাশ’ শীর্ষক প্রবন্ধের প্রাচীন মানুষের আকাশ সম্পর্কে যেরূপ ধারণা ছিল উদ্দীপকের রফিক সাহেবের চিকিৎসা পদ্ধতির মধ্যেও সেদিকটি উঠে এসেছে।
উদ্দীপকে রফিক সাহেব একজন গ্রাম্য ডাক্তার। ডাক্তারি পেশায় তিনি খুবই আন্তরিক। তবে ডাক্তার হিসেবে তার রোগ নির্ণয়ের পদ্ধতিটা ছিল প্রাচীন। তিনি রোগীর মাথা, পেট, কপাল ইত্যাদি টিপেই রোগ নির্ণয় করতেন। আধুনিক পদ্ধতিতে রোগ নির্ণয়ের কথা বললেও তিনি তার পদ্ধতি উপযুক্ত বলে মনে করতেন।
‘আকাশ’ প্রবন্ধেও আমরা দেখি প্রাচীনকালের মানুষ আকাশ সম্পর্কে ভাবত আকাশটা বুঝি পৃথিবীর একটা কঠিন ঢাকনা। আবার কখনো ভাবত আকাশটা পরতে পরতে ভাগ করা। মানুষের এসব ধারণা সত্যি নয়। কিন্তু প্রাচীন যুগের মানুষ এসবের কিছুই জানত না। তারা তাদের ধারণাকেই সত্য বলে মনে করত। অর্থাৎ উদ্দীপকের রফিক সাহেবের মধ্যেও ‘আকাশ’ প্রবন্ধের দিকটি উঠে এসেছে যা প্রাচীন, সেকেলে ও অনুমান নির্ভর ধারণা।
ঘ “আধুনিক ধ্যান-ধারণা এবং গবেষণাই বিজ্ঞানের জগতে ব্যাপক গতি এনে দিয়েছে ‘উদ্দীপক এবং ‘আকাশ’ প্রবন্ধের’ এ উক্তিটি যথার্থ।
‘আকাশ’ প্রবন্ধে আমরা দেখি গবেষণার ফলে উঠে এসেছে আকাশ সম্পর্কে নানা তথ্য-উপাত্ত। যা প্রাচীনকালের মানুষের ধারণার অতীত। শূন্যে মহাকাশযান পাঠিয়ে বিজ্ঞানীরা নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছেন, গবেষণা চালাচ্ছেন। আধুনিক সময়কে ব্যবহার করে তারা পৃথিবীর অন্তত কয়েকশ মাইল উপর দিয়ে মহাকাশযান প্রেরণ করছে। এ থেকে প্রেরিত অসংখ্য ফটো বা ভিডিও থেকে মানুষ আবহাওয়ার খবর পাচ্ছে। যা বিজ্ঞানের অবদানের ফলে সম্ভব হয়েছে।
উদ্দীপকের সুমন সাহেবের চিকিৎসা পদ্ধতিও তেমনি আধুনিক সময়ের প্রেক্ষাপটে তিনি তার বাবার মতো লতাপাতায় বিশ্বাসী নন। তার চিকিৎসা পদ্ধতি আধুনিক। তিনি আলট্রাসনোগ্রাফি, ইসিজি, এক্সরের মতো আধুনিক পদ্ধতি গ্রহণ করেছেন। ‘আকাশ’ প্রবন্ধে আধুনিক সময়ের প্রেক্ষিতে মহাকালের বিচিত্র ধারণার মতো সুমন সাহেবের চিকিৎসা পদ্ধতি আধুনিক বিজ্ঞানের অবদানকে ধারণ করেছে।
তাই আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, আধুনিক ধ্যান-ধারণা এবং গবেষণা বিজ্ঞানের জগতে ব্যাপক উন্নতির জোয়ার এনে দিয়েছে।
অতিরিক্ত সৃজনশীল, প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্ন- ১ যোগাযোগের প্রাচীন পদ্ধতি
একদিন শারমিন সন্ধ্যাবেলায় রেডিওতে খবর শুনছিল। আবহাওয়ার আগাম বার্তা শুনে শারমিন অবাক হয়ে গেল। আগামীকাল কী হবে মানুষ আজ তা নির্দ্বিধায় বলতে পারে। এটা দেখে সে আরো বিস্মিত হলো। মামা বললেন, প্রাচীনকালে মানুষ সব কাজ অনুমানের ভিত্তিতে করত। একস্থান থেকে অন্যস্থানে খবর পাঠাত পায়রার মাধ্যমে। আগুন জ্বালিয়ে, ঘণ্টা বাজিয়ে, বিকট শব্দ করে কিংবা আলোর প্রতিফলন ঘটিয়ে মানুষ যোগাযোগ করার চেষ্টা করত। আগুন জ্বালিয়ে ধোঁয়ার সৃষ্টি করে দূরের মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করা হতো। এটাই ছিল যোগাযোগের উত্তম পদ্ধতি।
ক. প্রাচীনকালে আকাশকে কী মনে করা হতো? ১
খ. মেঘের রং কালো হয় কেন? ব্যাখ্যা কর। ২
গ. উদ্দীপকের শারমিনের অবাক হওয়ার মধ্য দিয়ে ‘আকাশ’ প্রবন্ধের কোন দিকটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. “উদ্দীপকের শারমিনের মামা যোগাযোগ ব্যবস্থার যে বর্ণনা দিয়েছেন তার সঙ্গে বিজ্ঞানসম্মত যোগাযোগ ব্যবস্থার যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে” ‘আকাশ’ প্রবন্ধের আলোকে মন্তব্যটির যথার্থতা বিশ্লেষণ কর। ৪
ক প্রাচীনকালে আকাশকে মানুষের মাথার ওপর একটা কিছুর কঠিন ঢাকনা মনে করা হতো।
খ সূর্যরশ্মি বড় পানি কণার ভেতর দিয়ে যেতে না পারলে মেঘের রং কালো হয়।
আসলে সাদা মেঘে রয়েছে জলীয়বাষ্প জমে তৈরি ছোট ছোট অসংখ্য পানির কণা। কখনো এসব কণার গায়ে বাষ্প জমার ফলে ভারী হয়ে বড় পানির কণা তৈরি হয়। তখন সূর্যের আলো তার ভেতর দিয়ে আসতে পারে না, আর তাই মেঘের রং হয় কালো।
গ উদ্দীপকের শারমিনের অবাক হওয়ার মধ্য দিয়ে ‘আকাশ’ প্রবন্ধে বর্ণিত বিজ্ঞানের ছোঁয়ায় মানুষের ধারণার যে পরিবর্তন হয়েছে সে দিকটি ফুটে উঠেছে।
‘আকাশ’ প্রবন্ধে আবদুল্লাহ আল-মুতী আকাশ নিয়ে মানুষের প্রাচীন কল্পনার বেড়াজাল বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে ভেঙে দিয়েছেন। একসময় বিজ্ঞানীরা মহাকাশে বেলুন পাঠাত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য। আর বর্তমানে মহাকাশযানে চেপে মানুষ মহাশূন্যে ছুটে বেড়াচ্ছে। মহাকাশযান থেকে পৃথিবীর ছবি তুলে আবহাওয়ার আগাম খবর পাঠানো হচ্ছে, যা একসময় মানুষ কল্পনাও করতে পারেনি। ‘আকাশ’ প্রবন্ধে যেসব আবিষ্কারের কথা বলা হয়েছে তা সত্যিই আজকের জন্য বিস্ময়কর।
উদ্দীপকের শারমিন বিজ্ঞানের নতুন আবিষ্কার রেডিওতে আবহাওয়ার পূর্বাভাস শুনে অবাক হয়েছে। শারমিন বুঝতে পারছে না কী করে মানুষ আবহাওয়ার আগাম বার্তা জানতে পারে। একসময় যেখানে মানুষকে কাল্পনিক ধ্যান-ধারণার ওপর নির্ভর করতে হতো। বিজ্ঞানের অগ্রগতি মানুষকে আধুনিক ও গতিশীল করেছে। তাই বলা যায়, শারমিনের অবাক হওয়ার মধ্যদিয়ে ‘আকাশ’ প্রবন্ধের নতুন আবিষ্কারের বিষয়টিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে।
ঘ ‘উদ্দীপকের শারমিনের মামা যে যোগাযোগ ব্যবস্থার বর্ণনা দিয়েছেন তাঁর সঙ্গে বিজ্ঞানসম্মত যোগাযোগ ব্যবস্থার যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে’ মন্তব্যটি যথার্থ।
‘আকাশ’ প্রবন্ধে মহাকাশ সম্পর্কে মানুষের প্রাচীন ধারণার ব্যাখ্যা করা হয়েছে। আজ বিজ্ঞানের অবদানে যোগাযোগ ব্যবস্থার এতই উন্নতি হয়েছে যে মানুষ নিজেই মহাকাশযানে চেপে সফর করছে পৃথিবীর উপর থেকে বহুস্তর পর্যন্ত। মহাকাশযান থেকে প্রতিদিন পৃথিবীর ছবি তুলে আবহাওয়ার খবর দেয়া হচ্ছে। বিজ্ঞানের অবদানে যোগাযোগের এতই উন্নতি হয়েছে, মানুষ ঘরে বসেই কথা বলছে বিভিন্ন দেশের মানুষের সঙ্গে। বিজ্ঞানের অবদানে ঘরে বসেই জানা যাচ্ছে কোথায়, কখন আবহাওয়া কেমন হবে।
উদ্দীপকের শারমিনের মামা শারমিনের কাছে যোগাযোগ ব্যবস্থার যে বর্ণনা দিয়েছেন তা হলো প্রাচীনকালে মানুষ অনুমানের ওপর নির্ভর করে করত। মানুষ একস্থান থেকে অন্যস্থানে খবর পাঠাত পায়রার মাধ্যমে। প্রাচীনকালের মানুষ আগুন জ্বালিয়ে, ঘণ্টা বাজিয়ে, বিকট শব্দ করে কিংবা আলোর প্রতিফলন ঘটিয়ে একস্থান থেকে অন্যস্থানে যোগাযোগ করার চেষ্টা করত। শারমিনের মামা এ পদ্ধতিকেই উত্তম পদ্ধতি মনে করতেন। কিন্তু এ পদ্ধতি ছিল অনিশ্চয়তায় ভরা।
তাই বলা যায়, শারমিনের মামা যে যোগাযোগ ব্যবস্থার বর্ণনা দিয়েছেন তার সঙ্গে বিজ্ঞানসম্মত যোগাযোগ ব্যবস্থায় যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে।
প্রশ্ন- ২ আকাশ জয়ে আধুনিক পদ্ধতি
আকাশ পথে মানুষ চলাচল করবে এটা একসময় হাস্যকর কথা ছিল। তখনকার দিনে মানুষ ভাবত আকাশ দিয়ে পাখি ছাড়া শুধু জিন-পরিরাই চলাচল করতে পারে। ধীরে ধীরে মানুষের চিন্তার পরিবর্তন এলো। পাখির মতো ভঙ্গি করে, পাখির মতো পিঠে মোমের বিশাল ডানা লাগিয়ে, গ্যাস বেলুনে চেপে মানুষ আকাশে ওড়ার প্রচেষ্টা চালাল। অবশেষে মানুষ সফল হলো। আবিষ্কার করল উড়োজাহাজ। সময়ের আবর্তনে উড়োজাহাজেরও পরিবর্তন এসেছে। এখন বহু রকমের উড়োজাহাজ রয়েছে। আবিষ্কার হয়েছে মহাকাশযান। আকাশকে জয় করে মানুষ এখন স্বাধীনভাবে উড়াল দিচ্ছে। [ভোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
ক. আবদুল্লাহ আল-মুতী কী ধরনের সাহিত্য রচনা করে জনপ্রিয় হয়েছেন? ১
খ. মহাকাশযান থেকে মানুষ কীভাবে আবহাওয়ার খবর পেয়ে থাকে- ব্যাখ্যা কর। ২
গ. উদ্দীপকে ‘আকাশ’ প্রবন্ধের কোন দিকটি ফুটে উঠেছে- বুঝিয়ে লেখ। ৩
ঘ. “উদ্দীপকে ‘আকাশ’ প্রবন্ধের আংশিক ভাবের স্ফুরণ ঘটেছে, সম্পূর্ণ ভাবের নয়।” মন্তব্যটির মূল্যায়ন কর। ৪
ক আবদুল্লাহ আল-মুতী শিশুদের জন্য বিজ্ঞানবিষয়ক জনপ্রিয় সাহিত্য রচনা করে জনপ্রিয় হয়েছেন।
খ মহাকাশযান থেকে পৃথিবীর ছবি তোলার মাধ্যমে মানুষ প্রতিদিনের আবহাওয়ার খবর পেয়ে থাকে।
বর্তমানে বিজ্ঞানের অবদানে মানুষ মহাশূন্যে ছুটে বেড়াচ্ছে। মহাকাশযান থেকে দিনরাত পৃথিবীর ছবি তোলা হচ্ছে। জানা যাচ্ছে কোথায় কখন আবহাওয়া কেমন হবে। কোন দেশে কেমন ফসল হচ্ছে সে খবরও মানুষ এখন ঘরে বসে জানতে পারছে। বিজ্ঞানের অবদানে দূরদেশের সঙ্গে যোগাযোগ অনেকটা সহজ হয়ে উঠেছে।
গ উদ্দীপকে ‘আকাশ’ প্রবন্ধের আকাশ জয়ের বিষয়টি ফুটে উঠেছে।
মানুষ কীভাবে আকাশ জয় করেছে, সে আলোচনাই উদ্দীপকে ফুটে উঠেছে। পূর্বে মানুষ ধারণাও করত না যে, আকাশ পথে মানুষ চলাচল করবে। ধীরে ধীরে মানুষের চিন্তার পরিবর্তন এলো। প্রাথমিক অবস্থায় কেউ পিঠে পাখির ডানার মতো বিশাল মোমের ডানা লাগিয়ে উড়তে চেষ্টা করল। তারপর গ্যাস বেলুন আবিষ্কার হলো। বেলুনে করেও মানুষ আকাশে উড়ল, তারপর বিজ্ঞান আর থেমে থাকেনি। আবিষ্কার করল উড়োজাহাজ। অগ্রগতির ধারায় মানুষ রকেট আবিষ্কার করে মহাকাশও জয় করে ফেলল।
‘আকাশ’ প্রবন্ধে আমরা দেখতে পাই, আকাশের রহস্য অনুসন্ধান করতে প্রথমে বিজ্ঞানীরা যন্ত্রসহ বেলুন পাঠাত মহাকাশে। রকেট আবিষ্কারের পরও মানুষ মহাকাশে যাওয়ার সাহস করেনি। রকেটের মধ্যে যন্ত্রপাতি রেখে শূন্য রকেট পাঠাত। এরপর মানুষ সাহসী হয়ে উঠল। অবিশ্বাস্য গতি আর প্রতিকূল পরিবেশে বেঁচে থাকার কৃত্রিম ক্ষেত্র আবিষ্কার করে মহাকাশযানে চেপে বসল মানুষ। তাই উপর্যুক্ত আলোচনা শেষে বলা যায় উদ্দীপকে ‘আকাশ’ প্রবন্ধে মানুষের আকাশ জয়ের দিকটিই মূলত ফুটে উঠেছে।
ঘ ‘উদ্দীপকে আকাশ’ প্রবন্ধের আংশিক ভাবের স্ফুরণ ঘটেছে, সম্পূর্ণ ভাবের নয়” এ মন্তব্যটি যথার্থ।
‘আকাশ’ প্রবন্ধে আকাশ সংশ্লিষ্ট সব তথ্যের উপস্থাপন রয়েছে। আকাশ সম্পর্কে মানুষের প্রচলিত বদ্ধমূল, বিজ্ঞানের ধারাবাহিক উন্নতি ইত্যাদি ধারণা সকল বিষয় আলোচিত হয়েছে। যার পূর্ণ ছাপ আমরা উদ্দীপকে পাই না।
উদ্দীপকে আমরা শুধু বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রার ধারাবাহিকতায় আকাশ সংক্রান্ত সাফল্যের গল্প বলা হয়েছে। ‘আকাশ’ প্রবন্ধের মূল বিষয় আকাশ সংক্রান্ত বিষয়ে বিজ্ঞানের সাফল্য নয়। আকাশ বিষয়ে প্রচলিত সাধারণ মানুষের ভ্রান্ত ধারণা ও তার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও তুলে ধরা হয়েছে। ‘আকাশ’ প্রবন্ধে মানুষের সনাতন ধারণার পাশাপাশি বিজ্ঞানের জয়যাত্রার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। ‘আকাশ’ প্রবন্ধে আকাশ বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য আলোচিত হয়েছে। আর উদ্দীপকে শুধুমাত্র মানুষের আকাশ জয়ের কথা ফুটে উঠেছে, যা ‘আকাশ’ প্রবন্ধের আংশিক ভাব ফুটিয়ে তোলে, সমগ্র ভাব নয়।
পরিশেষে বলা যায় যে, ‘উদ্দীপকে শুধু আকাশ প্রবন্ধের আংশিকভাবের স্ফুরণ ঘটেছে।
প্রশ্ন- ৩ আকাশ সম্পর্কে প্রাচীন ধারণা
আফসান রাতের বেলায় ঘরের দাওয়ায় বসে তার দাদুর মুখ থেকে গল্প শুনছিল। হঠাৎ আকাশের দিকে তাকিয়ে দাদুকে প্রশ্ন করল, আচ্ছা দাদু, এই বিশাল আকাশটা কীসের তৈরি? আর রাতে ও দিনে আকাশের রং বিভিন্ন রকম হয় কেন? আফসানের প্রশ্নের জবাবে দাদু বললেন, আকাশটা হলো আমাদের মাথার ওপর একটা কঠিন ঢাকনা। আর আকাশ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রূপ ধারণ করে। এগুলো আকাশের খেয়াল খুশিমতো হয়ে থাকে। আফসান অবাক হয়ে শোনে এসব কথা। দাদু আরো বললেন আকাশের মহাশূন্যে অনেক দৈত্যদানব বসবাস করে। তারা যখন একস্থান থেকে অন্যস্থানে ছোটাছুটি করে তখন ঝড়-তুফানের সৃষ্টি হয়। এসব কথা শুনে আফসান ভয়ে দাদুর কোলে মুখ লুকায়।
ক. নাইট্রোজেন কী? ১
খ. মহাকাশযান থেকে কেন দিনরাত পৃথিবীর ছবি তোলা হয়? ২
গ. আকাশ সম্পর্কে আফসানের দাদুর প্রাচীন ধারণার সঙ্গে তোমার পঠিত ‘আকাশ’ প্রবন্ধে কী ধরনের দ্বন্দ্ব দেখা যায়? বর্ণনা কর। ৩
ঘ. ‘আকাশ সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ’ আফসানের দাদুর প্রাচীন ধারণাকে পাল্টে দিতে পারে।’- ‘আকাশ’ প্রবন্ধের আলোকে মন্তব্যটির সত্যতা বিচার কর। ৪
ক নাইট্রোজেন একটি বর্ণহীন গ্যাস।
খ মহাকাশযান থেকে দিনরাত পৃথিবীর ছবি তোলার কারণ হলো এসব ছবি দ্বারা সর্বক্ষণ পৃথিবীর বিভিন্ন অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হয়।
প্রতিনিয়তই পৃথিবীর বিভিন্ন অবস্থার পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে। আবহাওয়া, জলবায়ু ইত্যাদির বিপর্যয় যেকোনো সময় যেকোনো স্থানেই হতে পারে। পৃথিবীপৃষ্ঠে বসে এসব বিপর্যয়ের পূর্বাভাস পাওয়া সম্ভব নয়। দূরের আকাশে অবস্থানের মাধ্যমে শক্তিশালী যন্ত্রের সাহায্যে এসব দুর্যোগ ও পরিবর্তনের পূর্বাভাস সহজে পাওয়া যায় বলেই মহাকাশযান থেকে দিনরাত পৃথিবীর ছবি তোলা হচ্ছে।
গ আকাশ সম্পর্কে উদ্দীপকের আফসানের দাদুর প্রাচীন ধারণার সঙ্গে ‘আকাশ’ প্রবন্ধের বৈজ্ঞানিক সত্যতার দ্বন্দ্ব দেখা যায়।
একসময় আকাশকে মনে করা হতো মানুষের মাথার ওপর বিশাল একটা ঢাকনা। প্রকৃতপক্ষে এটি হচ্ছে বায়ুর এক বিশাল স্তর। এখানে প্রায় বিশটি বর্ণহীন গ্যাস মিশে আছে। বায়ুমণ্ডলে বিভিন্ন গ্যাসের অণু ছড়িয়ে আছে বলে আকাশ নীল দেখায়।
উদ্দীপকের আফসানের দাদু আকাশ সম্পর্কে প্রাচীন ধারণা পোষণ করেন। তিনি আফসানের কাছে আকাশের যে গল্প বলেছেন তা একান্তই অনুমাননির্ভর, যার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। তাই বলা যায় আফসানের দাদুর এই প্রাচীন ও অনুমাননির্ভর ধারণার সঙ্গে ‘আকাশ’ প্রবন্ধের বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণের দ্বন্দ্ব দেখা যায়।
ঘ “‘আকাশ’ প্রবন্ধের বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ আফসানের দাদুর প্রাচীন ধারণাকে পাল্টে দিতে পারে” মন্তব্যটি সত্য।
উদ্দীপকের আফসানের দাদুর ধারণা ছিল আকাশ বুঝি মানুষের মাথার ওপর কোনো কঠিন কিছুর বিশাল একটা ঢাকনা। তাঁর মতে আকাশের রঙের ভিন্নতা আকাশের খেয়াল খুশিমতো হয়ে থাকে। এছাড়া আমাদের মাথার ওপর যে অসীম শূন্যতা সেখানে দৈত্যদানবরা বসবাস করে। তাদের তাণ্ডবলীলার কারণেই পৃথিবীতে ঝড়বৃষ্টি হয়।
‘আকাশ’ প্রবন্ধে আমরা এ সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যাখ্যা পাই। আমরা মাথার ওপর যে বিশাল আকাশ দেখতে পাই তা আসলে বায়ুমণ্ডলের বিশাল স্তর। আকাশ নীল দেখায় বায়ুমণ্ডলে নানা গ্যাসের অণু ছড়িয়ে আছে বলে। সকাল-দুপুর-সন্ধ্যার আকাশ হুবহু এক রকম থাকে না। কারণ পৃথিবীর ওপরকার বায়ুমণ্ডল। মানুষ বর্তমানে মহাকাশযানের মাধ্যমে মহাশূন্যে ছুটে বেড়াচ্ছে। মহাকাশযান থেকে প্রতিদিন তোলা হচ্ছে পৃথিবীর ছবি। দূরদেশের সঙ্গে যোগাযোগ আজ অনেকটা সহজ হয়েছে। আকাশ প্রবন্ধের এ বিষয়গুলো আফসানের দাদু জানলে তাঁর প্রাচীন ধারণার পরিবর্তন আসবে।
তাই বলা যায় ‘আকাশ’ প্রবন্ধের বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ আফসানের দাদুর প্রাচীন ধারণাকে পাল্টে দিতে পারে।
গ ‘আকাশ’ শীর্ষক প্রবন্ধের প্রাচীন মানুষের আকাশ সম্পর্কে যেরূপ ধারণা ছিল উদ্দীপকের রফিক সাহেবের চিকিৎসা পদ্ধতির মধ্যেও সেদিকটি উঠে এসেছে।
উদ্দীপকে রফিক সাহেব একজন গ্রাম্য ডাক্তার। ডাক্তারি পেশায় তিনি খুবই আন্তরিক। তবে ডাক্তার হিসেবে তার রোগ নির্ণয়ের পদ্ধতিটা ছিল প্রাচীন। তিনি রোগীর মাথা, পেট, কপাল ইত্যাদি টিপেই রোগ নির্ণয় করতেন। আধুনিক পদ্ধতিতে রোগ নির্ণয়ের কথা বললেও তিনি তার পদ্ধতি উপযুক্ত বলে মনে করতেন।
‘আকাশ’ প্রবন্ধেও আমরা দেখি প্রাচীনকালের মানুষ আকাশ সম্পর্কে ভাবত আকাশটা বুঝি পৃথিবীর একটা কঠিন ঢাকনা। আবার কখনো ভাবত আকাশটা পরতে পরতে ভাগ করা। মানুষের এসব ধারণা সত্যি নয়। কিন্তু প্রাচীন যুগের মানুষ এসবের কিছুই জানত না। তারা তাদের ধারণাকেই সত্য বলে মনে করত। অর্থাৎ উদ্দীপকের রফিক সাহেবের মধ্যেও ‘আকাশ’ প্রবন্ধের দিকটি উঠে এসেছে যা প্রাচীন, সেকেলে ও অনুমান নির্ভর ধারণা।
ঘ “আধুনিক ধ্যান-ধারণা এবং গবেষণাই বিজ্ঞানের জগতে ব্যাপক গতি এনে দিয়েছে ‘উদ্দীপক এবং ‘আকাশ’ প্রবন্ধের’ এ উক্তিটি যথার্থ।
‘আকাশ’ প্রবন্ধে আমরা দেখি গবেষণার ফলে উঠে এসেছে আকাশ সম্পর্কে নানা তথ্য-উপাত্ত। যা প্রাচীনকালের মানুষের ধারণার অতীত। শূন্যে মহাকাশযান পাঠিয়ে বিজ্ঞানীরা নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছেন, গবেষণা চালাচ্ছেন। আধুনিক সময়কে ব্যবহার করে তারা পৃথিবীর অন্তত কয়েকশ মাইল উপর দিয়ে মহাকাশযান প্রেরণ করছে। এ থেকে প্রেরিত অসংখ্য ফটো বা ভিডিও থেকে মানুষ আবহাওয়ার খবর পাচ্ছে। যা বিজ্ঞানের অবদানের ফলে সম্ভব হয়েছে।
উদ্দীপকের সুমন সাহেবের চিকিৎসা পদ্ধতিও তেমনি আধুনিক সময়ের প্রেক্ষাপটে তিনি তার বাবার মতো লতাপাতায় বিশ্বাসী নন। তার চিকিৎসা পদ্ধতি আধুনিক। তিনি আলট্রাসনোগ্রাফি, ইসিজি, এক্সরের মতো আধুনিক পদ্ধতি গ্রহণ করেছেন। ‘আকাশ’ প্রবন্ধে আধুনিক সময়ের প্রেক্ষিতে মহাকালের বিচিত্র ধারণার মতো সুমন সাহেবের চিকিৎসা পদ্ধতি আধুনিক বিজ্ঞানের অবদানকে ধারণ করেছে।
তাই আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, আধুনিক ধ্যান-ধারণা এবং গবেষণা বিজ্ঞানের জগতে ব্যাপক উন্নতির জোয়ার এনে দিয়েছে।
অতিরিক্ত সৃজনশীল, প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্ন- ১ যোগাযোগের প্রাচীন পদ্ধতি
একদিন শারমিন সন্ধ্যাবেলায় রেডিওতে খবর শুনছিল। আবহাওয়ার আগাম বার্তা শুনে শারমিন অবাক হয়ে গেল। আগামীকাল কী হবে মানুষ আজ তা নির্দ্বিধায় বলতে পারে। এটা দেখে সে আরো বিস্মিত হলো। মামা বললেন, প্রাচীনকালে মানুষ সব কাজ অনুমানের ভিত্তিতে করত। একস্থান থেকে অন্যস্থানে খবর পাঠাত পায়রার মাধ্যমে। আগুন জ্বালিয়ে, ঘণ্টা বাজিয়ে, বিকট শব্দ করে কিংবা আলোর প্রতিফলন ঘটিয়ে মানুষ যোগাযোগ করার চেষ্টা করত। আগুন জ্বালিয়ে ধোঁয়ার সৃষ্টি করে দূরের মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করা হতো। এটাই ছিল যোগাযোগের উত্তম পদ্ধতি।
ক. প্রাচীনকালে আকাশকে কী মনে করা হতো? ১
খ. মেঘের রং কালো হয় কেন? ব্যাখ্যা কর। ২
গ. উদ্দীপকের শারমিনের অবাক হওয়ার মধ্য দিয়ে ‘আকাশ’ প্রবন্ধের কোন দিকটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. “উদ্দীপকের শারমিনের মামা যোগাযোগ ব্যবস্থার যে বর্ণনা দিয়েছেন তার সঙ্গে বিজ্ঞানসম্মত যোগাযোগ ব্যবস্থার যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে” ‘আকাশ’ প্রবন্ধের আলোকে মন্তব্যটির যথার্থতা বিশ্লেষণ কর। ৪
ক প্রাচীনকালে আকাশকে মানুষের মাথার ওপর একটা কিছুর কঠিন ঢাকনা মনে করা হতো।
খ সূর্যরশ্মি বড় পানি কণার ভেতর দিয়ে যেতে না পারলে মেঘের রং কালো হয়।
আসলে সাদা মেঘে রয়েছে জলীয়বাষ্প জমে তৈরি ছোট ছোট অসংখ্য পানির কণা। কখনো এসব কণার গায়ে বাষ্প জমার ফলে ভারী হয়ে বড় পানির কণা তৈরি হয়। তখন সূর্যের আলো তার ভেতর দিয়ে আসতে পারে না, আর তাই মেঘের রং হয় কালো।
গ উদ্দীপকের শারমিনের অবাক হওয়ার মধ্য দিয়ে ‘আকাশ’ প্রবন্ধে বর্ণিত বিজ্ঞানের ছোঁয়ায় মানুষের ধারণার যে পরিবর্তন হয়েছে সে দিকটি ফুটে উঠেছে।
‘আকাশ’ প্রবন্ধে আবদুল্লাহ আল-মুতী আকাশ নিয়ে মানুষের প্রাচীন কল্পনার বেড়াজাল বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে ভেঙে দিয়েছেন। একসময় বিজ্ঞানীরা মহাকাশে বেলুন পাঠাত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য। আর বর্তমানে মহাকাশযানে চেপে মানুষ মহাশূন্যে ছুটে বেড়াচ্ছে। মহাকাশযান থেকে পৃথিবীর ছবি তুলে আবহাওয়ার আগাম খবর পাঠানো হচ্ছে, যা একসময় মানুষ কল্পনাও করতে পারেনি। ‘আকাশ’ প্রবন্ধে যেসব আবিষ্কারের কথা বলা হয়েছে তা সত্যিই আজকের জন্য বিস্ময়কর।
উদ্দীপকের শারমিন বিজ্ঞানের নতুন আবিষ্কার রেডিওতে আবহাওয়ার পূর্বাভাস শুনে অবাক হয়েছে। শারমিন বুঝতে পারছে না কী করে মানুষ আবহাওয়ার আগাম বার্তা জানতে পারে। একসময় যেখানে মানুষকে কাল্পনিক ধ্যান-ধারণার ওপর নির্ভর করতে হতো। বিজ্ঞানের অগ্রগতি মানুষকে আধুনিক ও গতিশীল করেছে। তাই বলা যায়, শারমিনের অবাক হওয়ার মধ্যদিয়ে ‘আকাশ’ প্রবন্ধের নতুন আবিষ্কারের বিষয়টিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে।
ঘ ‘উদ্দীপকের শারমিনের মামা যে যোগাযোগ ব্যবস্থার বর্ণনা দিয়েছেন তাঁর সঙ্গে বিজ্ঞানসম্মত যোগাযোগ ব্যবস্থার যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে’ মন্তব্যটি যথার্থ।
‘আকাশ’ প্রবন্ধে মহাকাশ সম্পর্কে মানুষের প্রাচীন ধারণার ব্যাখ্যা করা হয়েছে। আজ বিজ্ঞানের অবদানে যোগাযোগ ব্যবস্থার এতই উন্নতি হয়েছে যে মানুষ নিজেই মহাকাশযানে চেপে সফর করছে পৃথিবীর উপর থেকে বহুস্তর পর্যন্ত। মহাকাশযান থেকে প্রতিদিন পৃথিবীর ছবি তুলে আবহাওয়ার খবর দেয়া হচ্ছে। বিজ্ঞানের অবদানে যোগাযোগের এতই উন্নতি হয়েছে, মানুষ ঘরে বসেই কথা বলছে বিভিন্ন দেশের মানুষের সঙ্গে। বিজ্ঞানের অবদানে ঘরে বসেই জানা যাচ্ছে কোথায়, কখন আবহাওয়া কেমন হবে।
উদ্দীপকের শারমিনের মামা শারমিনের কাছে যোগাযোগ ব্যবস্থার যে বর্ণনা দিয়েছেন তা হলো প্রাচীনকালে মানুষ অনুমানের ওপর নির্ভর করে করত। মানুষ একস্থান থেকে অন্যস্থানে খবর পাঠাত পায়রার মাধ্যমে। প্রাচীনকালের মানুষ আগুন জ্বালিয়ে, ঘণ্টা বাজিয়ে, বিকট শব্দ করে কিংবা আলোর প্রতিফলন ঘটিয়ে একস্থান থেকে অন্যস্থানে যোগাযোগ করার চেষ্টা করত। শারমিনের মামা এ পদ্ধতিকেই উত্তম পদ্ধতি মনে করতেন। কিন্তু এ পদ্ধতি ছিল অনিশ্চয়তায় ভরা।
তাই বলা যায়, শারমিনের মামা যে যোগাযোগ ব্যবস্থার বর্ণনা দিয়েছেন তার সঙ্গে বিজ্ঞানসম্মত যোগাযোগ ব্যবস্থায় যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে।
প্রশ্ন- ২ আকাশ জয়ে আধুনিক পদ্ধতি
আকাশ পথে মানুষ চলাচল করবে এটা একসময় হাস্যকর কথা ছিল। তখনকার দিনে মানুষ ভাবত আকাশ দিয়ে পাখি ছাড়া শুধু জিন-পরিরাই চলাচল করতে পারে। ধীরে ধীরে মানুষের চিন্তার পরিবর্তন এলো। পাখির মতো ভঙ্গি করে, পাখির মতো পিঠে মোমের বিশাল ডানা লাগিয়ে, গ্যাস বেলুনে চেপে মানুষ আকাশে ওড়ার প্রচেষ্টা চালাল। অবশেষে মানুষ সফল হলো। আবিষ্কার করল উড়োজাহাজ। সময়ের আবর্তনে উড়োজাহাজেরও পরিবর্তন এসেছে। এখন বহু রকমের উড়োজাহাজ রয়েছে। আবিষ্কার হয়েছে মহাকাশযান। আকাশকে জয় করে মানুষ এখন স্বাধীনভাবে উড়াল দিচ্ছে। [ভোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
ক. আবদুল্লাহ আল-মুতী কী ধরনের সাহিত্য রচনা করে জনপ্রিয় হয়েছেন? ১
খ. মহাকাশযান থেকে মানুষ কীভাবে আবহাওয়ার খবর পেয়ে থাকে- ব্যাখ্যা কর। ২
গ. উদ্দীপকে ‘আকাশ’ প্রবন্ধের কোন দিকটি ফুটে উঠেছে- বুঝিয়ে লেখ। ৩
ঘ. “উদ্দীপকে ‘আকাশ’ প্রবন্ধের আংশিক ভাবের স্ফুরণ ঘটেছে, সম্পূর্ণ ভাবের নয়।” মন্তব্যটির মূল্যায়ন কর। ৪
ক আবদুল্লাহ আল-মুতী শিশুদের জন্য বিজ্ঞানবিষয়ক জনপ্রিয় সাহিত্য রচনা করে জনপ্রিয় হয়েছেন।
খ মহাকাশযান থেকে পৃথিবীর ছবি তোলার মাধ্যমে মানুষ প্রতিদিনের আবহাওয়ার খবর পেয়ে থাকে।
বর্তমানে বিজ্ঞানের অবদানে মানুষ মহাশূন্যে ছুটে বেড়াচ্ছে। মহাকাশযান থেকে দিনরাত পৃথিবীর ছবি তোলা হচ্ছে। জানা যাচ্ছে কোথায় কখন আবহাওয়া কেমন হবে। কোন দেশে কেমন ফসল হচ্ছে সে খবরও মানুষ এখন ঘরে বসে জানতে পারছে। বিজ্ঞানের অবদানে দূরদেশের সঙ্গে যোগাযোগ অনেকটা সহজ হয়ে উঠেছে।
গ উদ্দীপকে ‘আকাশ’ প্রবন্ধের আকাশ জয়ের বিষয়টি ফুটে উঠেছে।
মানুষ কীভাবে আকাশ জয় করেছে, সে আলোচনাই উদ্দীপকে ফুটে উঠেছে। পূর্বে মানুষ ধারণাও করত না যে, আকাশ পথে মানুষ চলাচল করবে। ধীরে ধীরে মানুষের চিন্তার পরিবর্তন এলো। প্রাথমিক অবস্থায় কেউ পিঠে পাখির ডানার মতো বিশাল মোমের ডানা লাগিয়ে উড়তে চেষ্টা করল। তারপর গ্যাস বেলুন আবিষ্কার হলো। বেলুনে করেও মানুষ আকাশে উড়ল, তারপর বিজ্ঞান আর থেমে থাকেনি। আবিষ্কার করল উড়োজাহাজ। অগ্রগতির ধারায় মানুষ রকেট আবিষ্কার করে মহাকাশও জয় করে ফেলল।
‘আকাশ’ প্রবন্ধে আমরা দেখতে পাই, আকাশের রহস্য অনুসন্ধান করতে প্রথমে বিজ্ঞানীরা যন্ত্রসহ বেলুন পাঠাত মহাকাশে। রকেট আবিষ্কারের পরও মানুষ মহাকাশে যাওয়ার সাহস করেনি। রকেটের মধ্যে যন্ত্রপাতি রেখে শূন্য রকেট পাঠাত। এরপর মানুষ সাহসী হয়ে উঠল। অবিশ্বাস্য গতি আর প্রতিকূল পরিবেশে বেঁচে থাকার কৃত্রিম ক্ষেত্র আবিষ্কার করে মহাকাশযানে চেপে বসল মানুষ। তাই উপর্যুক্ত আলোচনা শেষে বলা যায় উদ্দীপকে ‘আকাশ’ প্রবন্ধে মানুষের আকাশ জয়ের দিকটিই মূলত ফুটে উঠেছে।
ঘ ‘উদ্দীপকে আকাশ’ প্রবন্ধের আংশিক ভাবের স্ফুরণ ঘটেছে, সম্পূর্ণ ভাবের নয়” এ মন্তব্যটি যথার্থ।
‘আকাশ’ প্রবন্ধে আকাশ সংশ্লিষ্ট সব তথ্যের উপস্থাপন রয়েছে। আকাশ সম্পর্কে মানুষের প্রচলিত বদ্ধমূল, বিজ্ঞানের ধারাবাহিক উন্নতি ইত্যাদি ধারণা সকল বিষয় আলোচিত হয়েছে। যার পূর্ণ ছাপ আমরা উদ্দীপকে পাই না।
উদ্দীপকে আমরা শুধু বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রার ধারাবাহিকতায় আকাশ সংক্রান্ত সাফল্যের গল্প বলা হয়েছে। ‘আকাশ’ প্রবন্ধের মূল বিষয় আকাশ সংক্রান্ত বিষয়ে বিজ্ঞানের সাফল্য নয়। আকাশ বিষয়ে প্রচলিত সাধারণ মানুষের ভ্রান্ত ধারণা ও তার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও তুলে ধরা হয়েছে। ‘আকাশ’ প্রবন্ধে মানুষের সনাতন ধারণার পাশাপাশি বিজ্ঞানের জয়যাত্রার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। ‘আকাশ’ প্রবন্ধে আকাশ বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য আলোচিত হয়েছে। আর উদ্দীপকে শুধুমাত্র মানুষের আকাশ জয়ের কথা ফুটে উঠেছে, যা ‘আকাশ’ প্রবন্ধের আংশিক ভাব ফুটিয়ে তোলে, সমগ্র ভাব নয়।
পরিশেষে বলা যায় যে, ‘উদ্দীপকে শুধু আকাশ প্রবন্ধের আংশিকভাবের স্ফুরণ ঘটেছে।
প্রশ্ন- ৩ আকাশ সম্পর্কে প্রাচীন ধারণা
আফসান রাতের বেলায় ঘরের দাওয়ায় বসে তার দাদুর মুখ থেকে গল্প শুনছিল। হঠাৎ আকাশের দিকে তাকিয়ে দাদুকে প্রশ্ন করল, আচ্ছা দাদু, এই বিশাল আকাশটা কীসের তৈরি? আর রাতে ও দিনে আকাশের রং বিভিন্ন রকম হয় কেন? আফসানের প্রশ্নের জবাবে দাদু বললেন, আকাশটা হলো আমাদের মাথার ওপর একটা কঠিন ঢাকনা। আর আকাশ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রূপ ধারণ করে। এগুলো আকাশের খেয়াল খুশিমতো হয়ে থাকে। আফসান অবাক হয়ে শোনে এসব কথা। দাদু আরো বললেন আকাশের মহাশূন্যে অনেক দৈত্যদানব বসবাস করে। তারা যখন একস্থান থেকে অন্যস্থানে ছোটাছুটি করে তখন ঝড়-তুফানের সৃষ্টি হয়। এসব কথা শুনে আফসান ভয়ে দাদুর কোলে মুখ লুকায়।
ক. নাইট্রোজেন কী? ১
খ. মহাকাশযান থেকে কেন দিনরাত পৃথিবীর ছবি তোলা হয়? ২
গ. আকাশ সম্পর্কে আফসানের দাদুর প্রাচীন ধারণার সঙ্গে তোমার পঠিত ‘আকাশ’ প্রবন্ধে কী ধরনের দ্বন্দ্ব দেখা যায়? বর্ণনা কর। ৩
ঘ. ‘আকাশ সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ’ আফসানের দাদুর প্রাচীন ধারণাকে পাল্টে দিতে পারে।’- ‘আকাশ’ প্রবন্ধের আলোকে মন্তব্যটির সত্যতা বিচার কর। ৪
ক নাইট্রোজেন একটি বর্ণহীন গ্যাস।
খ মহাকাশযান থেকে দিনরাত পৃথিবীর ছবি তোলার কারণ হলো এসব ছবি দ্বারা সর্বক্ষণ পৃথিবীর বিভিন্ন অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হয়।
প্রতিনিয়তই পৃথিবীর বিভিন্ন অবস্থার পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে। আবহাওয়া, জলবায়ু ইত্যাদির বিপর্যয় যেকোনো সময় যেকোনো স্থানেই হতে পারে। পৃথিবীপৃষ্ঠে বসে এসব বিপর্যয়ের পূর্বাভাস পাওয়া সম্ভব নয়। দূরের আকাশে অবস্থানের মাধ্যমে শক্তিশালী যন্ত্রের সাহায্যে এসব দুর্যোগ ও পরিবর্তনের পূর্বাভাস সহজে পাওয়া যায় বলেই মহাকাশযান থেকে দিনরাত পৃথিবীর ছবি তোলা হচ্ছে।
গ আকাশ সম্পর্কে উদ্দীপকের আফসানের দাদুর প্রাচীন ধারণার সঙ্গে ‘আকাশ’ প্রবন্ধের বৈজ্ঞানিক সত্যতার দ্বন্দ্ব দেখা যায়।
একসময় আকাশকে মনে করা হতো মানুষের মাথার ওপর বিশাল একটা ঢাকনা। প্রকৃতপক্ষে এটি হচ্ছে বায়ুর এক বিশাল স্তর। এখানে প্রায় বিশটি বর্ণহীন গ্যাস মিশে আছে। বায়ুমণ্ডলে বিভিন্ন গ্যাসের অণু ছড়িয়ে আছে বলে আকাশ নীল দেখায়।
উদ্দীপকের আফসানের দাদু আকাশ সম্পর্কে প্রাচীন ধারণা পোষণ করেন। তিনি আফসানের কাছে আকাশের যে গল্প বলেছেন তা একান্তই অনুমাননির্ভর, যার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। তাই বলা যায় আফসানের দাদুর এই প্রাচীন ও অনুমাননির্ভর ধারণার সঙ্গে ‘আকাশ’ প্রবন্ধের বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণের দ্বন্দ্ব দেখা যায়।
ঘ “‘আকাশ’ প্রবন্ধের বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ আফসানের দাদুর প্রাচীন ধারণাকে পাল্টে দিতে পারে” মন্তব্যটি সত্য।
উদ্দীপকের আফসানের দাদুর ধারণা ছিল আকাশ বুঝি মানুষের মাথার ওপর কোনো কঠিন কিছুর বিশাল একটা ঢাকনা। তাঁর মতে আকাশের রঙের ভিন্নতা আকাশের খেয়াল খুশিমতো হয়ে থাকে। এছাড়া আমাদের মাথার ওপর যে অসীম শূন্যতা সেখানে দৈত্যদানবরা বসবাস করে। তাদের তাণ্ডবলীলার কারণেই পৃথিবীতে ঝড়বৃষ্টি হয়।
‘আকাশ’ প্রবন্ধে আমরা এ সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যাখ্যা পাই। আমরা মাথার ওপর যে বিশাল আকাশ দেখতে পাই তা আসলে বায়ুমণ্ডলের বিশাল স্তর। আকাশ নীল দেখায় বায়ুমণ্ডলে নানা গ্যাসের অণু ছড়িয়ে আছে বলে। সকাল-দুপুর-সন্ধ্যার আকাশ হুবহু এক রকম থাকে না। কারণ পৃথিবীর ওপরকার বায়ুমণ্ডল। মানুষ বর্তমানে মহাকাশযানের মাধ্যমে মহাশূন্যে ছুটে বেড়াচ্ছে। মহাকাশযান থেকে প্রতিদিন তোলা হচ্ছে পৃথিবীর ছবি। দূরদেশের সঙ্গে যোগাযোগ আজ অনেকটা সহজ হয়েছে। আকাশ প্রবন্ধের এ বিষয়গুলো আফসানের দাদু জানলে তাঁর প্রাচীন ধারণার পরিবর্তন আসবে।
তাই বলা যায় ‘আকাশ’ প্রবন্ধের বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ আফসানের দাদুর প্রাচীন ধারণাকে পাল্টে দিতে পারে।
প্রশ্ন- ৪ মানুষের ভ্রান্ত ধারণা
রিপন ও তার ছোটভাই রাহুল মাঠে ক্রিকেট খেলছে, এমন সময় হঠাৎ বৃষ্টি এলে তারা দৌড়ে বাড়ি চলে আসে। রিপন বিজ্ঞানের ছাত্র। রাহুল বৃষ্টিপাতের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে রিপন তাকে উদ্দেশ্য করে বলল, সূর্যের তাপে খালবিল, নদীনালা, সাগর প্রভৃতির পানি গরম হয়ে বাষ্পাকারে বাতাসের সাথে মিশে ভাসতে থাকে। এক সময় বাষ্পগুলো ঘনীভূত হয়ে মেঘের রূপ ধারণ করে। জলীয়বাষ্প ঠান্ডা হলে মেঘগুলো আর আকাশে ভাসতে পারে না। তখন পানির ফোটা হয়ে পৃথিবীতে নেমে আসে। এভাবেই বৃষ্টিপাতের সৃষ্টি হয়। কিন্তু রাহুল এটা কোনোভাবেই বিশ্বাস করতে পারে না। তার বিশ্বাস মঙ্গলগ্রহে নদী আছে। সেখান থেকে পানি নেমে এসেই পৃথিবীতে বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে।
ক. ‘জলীয়বাষ্প’ অর্থ কী?
খ. ‘পৃথিবী বায়ুমণ্ডলের ঢাকনা’ বলতে কী বোঝ?
গ. রাহুলের চিন্তাভাবনায় ‘আকাশ’ প্রবন্ধের কোন দিকটির সাদৃশ্য রয়েছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “বৃষ্টিপাত সম্পর্কে রিপনের ধারণা বিজ্ঞাননিষ্ঠ” ‘আকাশ’ প্রবন্ধের আলোকে বিশ্লেষণ কর।
ক ‘জলীয়বাষ্প’ অর্থ পানির বায়বীয় অবস্থা।
খ পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের ঢাকনা বলতে বায়ুস্তর সমৃদ্ধ আকাশকে বোঝায়।
আকাশ হলো বায়ুর বিপুলস্তর। বায়ুমণ্ডলে বিশটি বর্ণহীন গ্যাস নিয়ে আকাশ সমৃদ্ধ। তাই একে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের ঢাকনা বলা হয়েছে।
গ রাহুলের বৃষ্টিসম্পর্কিত ধারণার সাথে ‘আকাশ’ প্রবন্ধের প্রাচীন মানুষের আকাশ সম্পর্কিত ধারণার সাদৃশ্য রয়েছে।
উদ্দীপকের রাহুল বৃষ্টি বিষয়ে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা সম্পর্কে অবগত নয়। তাই সে ভাবে, মঙ্গলগ্রহের গায়ে অনেক নদী আছে, সেখান থেকে গড়িয়ে পড়া পানিই বৃষ্টিরূপে পৃথিবীতে নেমে আসে। একই চিন্তাভাবনা ‘আকাশ’ প্রবন্ধেও পাওয়া যায়। আসলে আকাশ হলো নিতান্ত গ্যাস ভর্তি ফাঁকা জায়গা। হরহামেশা আমরা যে আকাশ দেখি তা হলো বায়ুমণ্ডলের নানান বর্ণহীন গ্যাসের মিশেল। এমন ধারণা কিন্তু অতীতে ছিল না।
মানুষ কোনো কিছু সম্পর্কে সঠিক ধারণা বা কারণ না জানলে একটা আনুমানিক ধারণা দাঁড় করিয়ে নেয়। পৃথিবী সম্পর্কে মানুষ অনেক আজগুবি কল্পনা করলেও বিজ্ঞান এখন সেসবের সঠিক ব্যাখ্যা দিচ্ছে। অর্থাৎ রাহুলের বৃষ্টি সম্পর্কিত ধারণার সাথে আকাশ প্রবন্ধের প্রাচীন মানুষের আকাশ সম্পর্কিত ধারণার সাদৃশ্য রয়েছে।
ঘ “বৃষ্টিপাত সম্পর্কে রিপনের ধারণা বিজ্ঞাননিষ্ঠ” উক্তিটি ‘আকাশ’ প্রবন্ধের আলোকে যৌক্তিক।
উদ্দীপকের রিপন বিজ্ঞানের ছাত্র হওয়ায় বৃষ্টিপাত সম্পর্কে সঠিক ধারণা গ্রহণ করেছে। বৃষ্টিপাতের কারণে যে পানি আকাশ থেকে নিচে নেমে আসে তা মূলত ভূপৃষ্ঠের পানি।
সবকিছুর পেছনেই একটা বস্তুনিষ্ঠ ও সঠিক কারণ রয়েছে। এসব কারণ যথাযথভাবে ব্যাখ্যা করে বিজ্ঞান।
‘আকাশ’ প্রবন্ধেও আকাশ সম্পর্কিত বৈজ্ঞানিক যুক্তি পাওয়া যায়। আকাশ মূলত গ্যাসভর্তি ফাঁকা স্থান যেখানে বর্ণ ও গন্ধহীন গ্যাস রয়েছে প্রায় বিশটার মতো। উদ্দীপকের রিপন বিজ্ঞানমনস্ক হওয়ায় সে বৃষ্টিপাত সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক যুক্তি গ্রহণ করেছে যা যুক্তিনিষ্ঠ। উপরিউক্ত আলোচনার মাধ্যমে বলা যায়, বৃষ্টিপাত সম্পর্কে রিপনের ধারণা বিজ্ঞাননিষ্ঠ।
অনুশীলনের জন্য সৃজনশীল প্রশ্নব্যাংক (উত্তরসংকেতসহ)
প্রশ্ন- ৫ আকাশ সম্পর্কে ধারণা
কদিন ধরেই জিয়া ভাবছে আকাশের রং দিনের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম হয় কেন? বাবা তার এ ভাবনার সমাধান করে দিলেন। তিনি তাকে বললেন পৃথিবীর উপরিভাগে যে বায়ুমণ্ডল রয়েছে তা পেরিয়ে সূর্যের আলো একেক সময় একেকভাবে পৃথিবীতে আসে। তাই আকাশের রং একেক সময় একেক রকম হয়।
ক. ‘তেরছা’ শব্দের অর্থ কী? ১
খ. মেঘের রং কখন কালো হয়? ২
গ. উদ্দীপকে ‘আকাশ’ প্রবন্ধের কোন বিষয়গুলো খুঁজে পাওয়া যায়- ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপকে ‘আকাশ’ প্রবন্ধের সবগুলো দিক ফুটে ওঠেনি তোমার মতামতের পক্ষে যুক্তি দাও। ৪
ক ‘তেরছা’ শব্দের অর্থ বাঁকা।
খ সূর্যরশ্মি বড় পানির কণার ভেতর দিয়ে যেতে না পারলে মেঘের রং কালো হয়।
মেঘে জলীয় বাষ্পের অসংখ্য পানির কণা আছে। ফলে সূর্যরশ্মি এর ভেতর দিয়ে যেতে পারে না। আর তাই ঘন মেঘের রং কালো হয়।
ঢপষঁংরাব লিংক : প্রয়োগ (গ) ও উচ্চতর দক্ষতার (ঘ) প্রশ্নের উত্তরের জন্য অনুরূপ যে প্রশ্নের উত্তর জানা থাকতে হবে-
গ ‘আকাশ’ প্রবন্ধের সকাল-দুপুর সন্ধ্যায় আকাশের রঙ হুবহু এক না থাকার কারণগুলো তুলে ধর।
ঘ ‘আকাশ’ প্রবন্ধের মূলভাব তুলে ধরে তোমার মতামত দাও।
প্রশ্ন- ৬ তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কে ধারণা
আধুনিক যুগ বিজ্ঞানের যুগ। বিজ্ঞানের নানা আবিষ্কার যেমন রেডিও, টেলিভিশন, টেলিফোন, মোবাইল, কম্পিউটার, ল্যাপটপ ও ইন্টারনেট মানুষের জীবনকে অনেক সুন্দর ও সহজ করে দিয়েছে। রেডিও, টেলিভিশনের মাধ্যমে দেশ-বিদেশের খবর মানুষ ঘরে বসেই পাচ্ছে। টেলিফোন ও মোবাইলের মাধ্যমে মানুষ সহজেই দূরের মানুষের সঙ্গে কথা বলতে পারছে। ইন্টারনেটের ব্যবহারের মাধ্যমে মানুষ যেমন বিশ্বের খবর পাচ্ছে তেমনি খবর পাঠিয়ে দিচ্ছে।
ক. ‘আকাশ’ প্রবন্ধটির লেখক কে? ১
খ. দিনের বিভিন্ন সময়ে আকাশের রূপ কেমন হয়? ২
গ. উদ্দীপকের বিষয়ের সঙ্গে ‘আকাশ’ প্রবন্ধের মিল দেখাও। ৩
ঘ. আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের গুরুত্ব কতটুকু? উদ্দীপক ও ‘আকাশ’ প্রবন্ধের আলোকে বিশ্লেষণ কর। ৪
ক ‘আকাশ’ প্রবন্ধটির লেখক আবদুল্লাহ আল-মুতী।
খ দিনের বিভিন্ন সময়ে আকাশের রূপ বিভিন্ন হয়।
দিনের বেলা সচরাচর আকাশ নীল হয়। ভোরে বা সন্ধ্যায় আকাশের কোনো কোনো অংশে নামে রঙের বন্যা। এ সময়ে কখনো লাল আলোতে ভেসে যায় আকাশ। রাতের আকাশ কালো হয়।
ঢপষঁংরাব লিংক : প্রয়োগ (গ) ও উচ্চতর দক্ষতার (ঘ) প্রশ্নের উত্তরের জন্য অনুরূপ যে প্রশ্নের উত্তর জানা থাকতে হবে-
গ ‘আকাশ’ প্রবন্ধের আলোকে বিজ্ঞানের সাহায্যে তথ্য প্রযুক্তির জয়যাত্রার স্বরূপ তুলে ধর।
ঘ আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির গুরুত্ব বিশ্লেষণ কর।
প্রশ্ন- ৭ বায়ুমণ্ডল সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা
পিয়াস তার বাবাকে জিজ্ঞেস করে, বাবা আকাশ কীসের তৈরি? বাবা বলে, আকাশ বিভিন্ন ধরনের গ্যাস দ্বারা তৈরি। তিনি আরো বলেন, আমরা সচরাচর যে আকাশ দেখি তা কোনো কঠিন পদার্থে তৈরি নয়, তা হলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের ঢাকনা। তখন পিয়াস আবার প্রশ্ন করে বায়ুমণ্ডলে কী কী গ্যাস রয়েছে? বাবা তখন বলেন, নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, কার্বন ডাইঅক্সাইড প্রভৃতি গ্যাস। বাবার উত্তর শুনে পিয়াস অত্যন্ত খুশি হয়।
ক. ‘মিশেল’ শব্দটির অর্থ কী?
খ. আকাশ নীল দেখায় কেন- ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকটি ‘আকাশ’ প্রবন্ধের কোন অংশটির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ? নিরূপণ কর।
ঘ. “উদ্দীপকটিতে ‘আকাশ’ প্রবন্ধের মূল বিষয় উঠে এসেছে” বিশ্লেষণ কর।
ক ‘মিশেল’ শব্দটির অর্থ বিভিন্ন বস্তুর মিলন।
খ. বায়ুমন্ডলে নানা গ্যাসের অণু ছড়িয়ে আছে বলে পৃথিবী থেকে আকাশ নীল দেখায়। বায়ুমণ্ডলের গ্যাসের কণা খুব ছোট মাপের আলোর ঢেউ সহজে ঠিকরে ছিটিয়ে দিতে পারে। এই ছোট মাপের আলোর ঢেউগুলো আমরা দেখি নীল রঙ হিসেবে।
ঢপষঁংরাব লিংক : প্রয়োগ গ) ও উচ্চতর দক্ষতার (ঘ) প্রশ্নের উত্তরের জন্য অনুরূপ যে প্রশ্নের উত্তর জানা থাকতে হবে-
গ. ‘আকাশ’ প্রবন্ধে উল্লিখিত মহাকাশ সম্পর্কিত প্রচলিত ধারণা ও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ‘আকাশ’ প্রবন্ধের মূল বিষয় আলোচনা কর।