তৃতীয় অধ্যায়
জীবনের জন্য পানি
সংক্ষিপ্ত উত্তর প্রশ্ন:
০১। পানি চক্র কী?
উত্তর: যে প্রক্রিয়ায় পানি বিভিন্ন অবস্থায় পরিবর্তিত হয়ে ভূপৃষ্ঠে ও বায়ুম-লে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে তা-ই পানি চক্র।
০২। পানি দূষণ প্রতিরোধের ৩টি উদাহরণ দাও।
উত্তর: বিভিন্ন উপায়ে পানি দূষণ প্রতিরোধ করা সম্ভব। তা থেকে তিনটি দেওয়া হল। যেমনÑ
(র) জমিতে কীটনাশক এবং রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমানো।
(রর) নদী বা পুকুরে কাপড় চোপড় না ধোঁয়া।
(ররর) পুকুর, খাল-বিল, নদীতে ময়লা আবর্জনা না ফেলা।
০৩। অনিরাপদ পানি থেকে নিরাপদ পানি পাওয়ার চারটি উপায় লেখ।
উত্তর: অনিরাপদ পানি থেকে নিরাপদ পানি পাওয়ার চারটি উপায় হলোÑ ছাঁকন, থিতানো, ফুটানো ও রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় পানি বিশুদ্ধকরণ।
০৪। বৃষ্টির পর মাটিতে পানি জমা হয়। কিছুক্ষণ পর সেই পানি অদৃশ্য হয়ে যায়। ওই পানি কোথায় যায়?
উত্তর: বৃষ্টির পর মাটিতে পানি জমা হয়। কিছুক্ষণ পর সেই পানি অদৃশ্য হয়ে যায়। ওই পানির কিছু অংশ বাষ্পীভূত হয়ে জলীয় বাষ্পে পরিণত হয়, কিছু অংশ মাটিতে শোষিত হয়ে ভূগর্ভে চলে যায় এবং কিছু অংশ নদীতে গড়িয়ে পড়ে।
০৫। পানির তিনটি অবস্থা কী কী?
উত্তর: সময় ও অবস্থা বেদে পানি বিভিন্ন অবস্থায় থাকে। পানির এ অবস্থাকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। পানির তিনটি অবস্থা হলোÑ কঠিন, তরল ও বায়বীয়।
অতিরিক্ত সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
০১। পানির দুটি প্রাকৃতিক উৎসের নাম লেখ।
উত্তর: পানির দুটি প্রাকৃতিক উৎস হলোÑ বৃষ্টি ও নদী।
০২। মানুষের তৈরি পানির দুটি উৎসের নাম লেখ।
উত্তর: মানুষের তৈরি পানির দুটি উৎস হলো পুকুর ও নলকূপ।
০৩। উদ্ভিদের দেহের শতকরা কত ভাগ পানি?
উত্তর: উদ্ভিদের দেহের শতকরা ৯০ ভাগ পানি।
০৪। জীবের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য কী প্রয়োজন?
উত্তর: জীবের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য পানি প্রয়োজন?
০৫। উদ্ভিদ কীসের সহায়তায় খাদ্য তৈরি করে?
উত্তর: উদ্ভিদ পানির সহায়তায় খাদ্য তৈরি করে।
০৬। খাদ্য পরিপাকে পানি কী হিসেবে কাজ করে?
উত্তর: খাদ্য পরিপাকে পানি মাধ্যম হিসেবে কাজ করে?
০৭। মানবদেহের শতকরা কত ভাগ পানি?
উত্তর: মানবদেহের শতকরা ৬০Ñ৭০ ভাগ পানি।
০৮। আমাদের দেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় রাখতে কী দরকার?
উত্তর: আমাদের দেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় রাখতে পানি দরকার।
০৯। পানি শোধনের দুটি পদ্ধতির নাম লেখ।
উত্তর: পানি শোধনের দুটি পদ্ধতির নাম হলোÑ ছাঁকন ও থিতানো।
১০। পানি চক্র কাকে বলে?
উত্তর: যে প্রক্রিয়ায় পানি বিভিন্ন অবস্থায় পরিবর্তিত হয়ে ভূপৃষ্ঠ ও বায়ুম-লের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে সে প্রক্রিয়াকে পানি চক্র বলে।
১১। পানি দূষণ কী?
উত্তর: পানিতে বিভিন্ন ক্ষতিকর পদার্থে মিশে যে দূষণের সৃষ্টি হয়, সেটিই হলো পানি দূষণ।
১২। জলীয় বাষ্প থেকে কী তৈরি হয়?
উত্তর: জলীয় বাষ্প থেকে মেঘ তৈরি হয়।
১৩। ছাঁকন কী?
উত্তর: যে পদ্ধতিতে পাতলা কাপড় বা ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে পানি পরিষ্কার করা হয় তাকে ছাঁকন বলে।
১৪। থিতানো কাকে বলে?
উত্তর: নদী বা পুকুরের পানি কলস বা পাত্রে কিছুক্ষণ রেখে দিলে উপরের অংশের পানি পরিষ্কার হয় এবং পাত্রের তলায় তলানি জমে। পানিতে থাকা ময়লা সরানোর এই প্রক্রিয়াকে থিতানো বলে।
১৫। পানি দূষণের প্রভাবে সৃষ্টি দুটি পানিবাহিত রোগের নাম লেখ।
উত্তর: পানি দূষণের প্রভাবে সৃষ্ট দুটি পানিবাহিত রোগ হলোÑ ডায়রিয়া ও কলেরা।
১৬। পানি বিশুদ্ধকরণের দুটি রাসায়নিক পদার্থের নাম লেখ।
উত্তর: পানি বিশুদ্ধকরণের দুটি রাসায়নিক পদার্থ হলো ফিটকিরি ও ব্লিচিং পাউডার।
১৭। পানি শোধনের উপায়গুলো লেখ।
উত্তর: পানি শোধনের উপায়গুলো হলোÑ ছাঁকন, থিতানো, ফুটানো এবং রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় পানি বিশুদ্ধকরণ।
১৮। পানি বিশুদ্ধকরণ কী?
উত্তর: মানুষের ব্যবহারের জন্য পানিকে গ্রহণযোগ্য এবং নিরাপদ করার ব্যবস্থাই হলো পানি বিশুদ্ধকরণ।
১৯। ঘনীভবন কী?
উত্তর: বাতাসের জলীয় বাষ্প ঠা-া হয়ে পানিতে পরিণত হয়। বাষ্প থেকে তরলে পরিণত হওয়ার এ প্রক্রিয়াই হলো ঘনীভবন।
২০। বাষ্পীভবন কী?
উত্তর: পানিকে যখন তাপ দেওয়া হয় তখন তা জলীয় বাষ্পে পরিণত হয়। তরল থেকে বাষ্পে পরিণত হওয়ার এ প্রক্রিয়াই হলো বাষ্পীভবন।
বর্ণনামূলক প্রশ্নোত্তর:
০১। বরফসহ পানির গ্লাসের বাইরের অংশ কেন ভিজে যায় তা ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: বরফসহ পানির গ্লাসের বাইরের অংশ ঘনীভবন প্রক্রিয়ায় বাতাসের জলীয় বাষ্পকে পানিতে পরিণত করে বলে তা ভিজে যায়।
পদার্থের বায়বীয় অবস্থা থেকে তরলে পরিণত হওয়াকে বলে ঘনীভবন। পানির গ্লাসে বরফের টুকরা রাখলে গ্লাসটি ঠা-া হয়ে যায়। বায়ু যখন ঠা-া কোনো বস্তুর সংস্পর্শে আসে তখন বায়ুতে থাকা জলীয় বাষ্প ঠা-া হয়ে পানির ফোঁটা হিসেবে জমা হয়। তাই গ্লাসের বাইরের জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে গ্লাসের গায়ে বিন্দু বিন্দু পানি হিসেবে জমা হয়। এ কারণেই বরফসহ পানির গ্লা––––––সের বাইরের অংশ ভিজে যায়।
০২। পানি চক্র ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: যে প্রক্রিয়ায় পানি বিভিন্ন অবস্থায় পরিবর্তিত হয়ে ভূপৃষ্ঠ ও বায়ুম-লের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে তাই পানি চক্র।
পানি চক্রের মাধ্যমে সর্বদাই পানির অবস্থার পরিবর্তন ঘটে। সূর্যের তাপে সাগর ও নদীর পানি বাষ্পীভূত হয়ে জলীয় বাষ্পে পরিণত হয়। বাষ্পীভূত পানি উপরে উঠে ঠা-া ও ঘনীভূত হয়ে পানির বিন্দুতে পরিণত হয়। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পানির বিন্দু একত্রিত হয়ে মেঘ সৃষ্টি কলে। এই মেঘের পানিকণা বড় হয়ে বৃষ্টিপাত হিসেবে আবার ভূপৃষ্ঠে ফিরে আসে। এভাবে ভূপৃষ্ঠের পানি থেকে জলীয় বাষ্প এবং জলীয় বাষ্প থেকে মেঘ, মেঘ থেকে বৃষ্টি হিসেবে পানি আবার ভূপৃষ্ঠে ফিরে আসে। এক উৎস থেকে অন্য উৎসে পানির এরূপ চক্রাকার ঘূর্ণনই হলো পানি চক্র।
০৩। জীবের কেন পানি প্রয়োজন?
উত্তর: জীবের জীবন ধারণের জন্য পানি প্রয়োজন।
পানি ছাড়া জীব তথা উদ্ভিদ ও প্রাণী বেঁচে থাকতে পারে না। উদ্ভিদ খাদ্য তৈরিতে পানি ব্যবহার করে। মাটি থেকে পুষ্টি উপাদান সংগ্রহ এবং শোষণে উদ্ভিদের পানি প্রয়োজন। এছাড়া প্রচ- গরমে পানি উদ্ভিদদেহ শীতল করতে সাহায্য করে। অন্যদিকে প্রাণিদেহের বিভিন্ন অংশে পানি পুষ্টি উপাদান পরিবহন করে। এছাড়াও পুষ্টি উপাদান শোষণে, খাদ্য পরিপাকে এবং দেহের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখতে পানি সাহায্য করে। এসব কারণেই জীবের জন্য পানি প্রয়োজন।
০৪। বাতাসে পানি আছে তা আমরা কীভাবে ব্যাখ্যা করতে পারি?
উত্তর: বাতাসে থাকা জলীয় বাষ্পকে ঘনীভূত করে পানিতে পরিণত করার মাধ্যমে আমরা প্রমাণ করতে পারি বাতাসে পানি আছে। এ বিষয়টি নিচের পরীক্ষার মাধ্যমে প্রমাণ করা যায়Ñ
পরীক্ষাটির জন্য প্রয়োজন একটি কাচের গ্লাস ও কয়েক টুকরা বরফ।শুরুতে কাচের গ্লাসে কয়েক টুকরা বরফ নিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিই। গ্লাসের বাইরের দিক পর্যবেক্ষণ করি। দেখা যাবে সেখানে ফোঁটা ফোঁটা পানি জমেছে। এ পানি গ্লাসের ভেতরের বরফ থেকে আসেনি। বরফের ঠা-ার কারণে গ্লাসটি ঠা-া হয়েছে। আর সে ঠা-ার সংস্পর্শে বায়ুতে থাকা জলীয় বাষ্প ঠা-া হয়ে পানি কণায় পরিণত হয়েছে। এ থেকে বলা যায়, বাতাসে পানি আছে।
০৫। পুকুরের পানি থেকে আমরা কীভাবে নিরাপদ পানি পেতে পারি?
উত্তর: পুকুরের দূষিত পানি মানুষের জন্য নিরাপদ নয়। আমরা পুকুরের পানিকে নি¤েœাক্ত কয়েকটি উপায়ে শোধন করে নিরাপদ পানি হিসেবে গ্রহণ করতে পারি।
ছাঁকন: পুকুরের পানিকে পাতলা কাপড় বা ছাঁকনি দ্বারা ছেঁকে পরিষ্কার করা যায়। তবে এই প্রক্রিয়ায় প্রাপ্ত পানি পরিষ্কার হলেও তা জীবাণুমুক্ত নয়। তাই নিরাপদ পানির জন্য এই পানিকে ফুটিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
থিতানো: একটি কলসি বা পাত্রে পুকুরের পানি কিচুক্ষণ রেখে দিয়ে পানিতে থাকা বালি, কাদা ইত্যাদি পাত্রের তলায় তলানি হিসেবে জমা হয় এবং উপরের অংশে পরিষ্কার পানি পাওয়া যায়। এই পানিকেও ফুটিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হয়।
ফুটানো: পুকুরের পানিকে ২০ মিনিটের বেশি সময় ধরে ফুটিয়ে আমরা নিরাপদ পানি পেতে পারি।
রাসায়নিক পদার্থের সাহায্যে বিশুদ্ধকরণ: পুকুরের পানিতে ফিটকিরি, ব্লিচিং পাউডার, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ইত্যাদি পরিমাণমতো মিশিয়ে আমরা পানি নিরাপদ করতে পারি।
০৬। ঠান্ডা পানির গ্লাসের গায়ে লেগে থাকা পানির কণা এবং শিশির কেন একই রকম?
উত্তর: ঠান্ডা পানির গ্লাসের গায়ে লেগে থাকা পানির কণা এবং শিশির একই রকম। কারণ এরা উভয়ই জলীয় বাষ্প থেকে তৈরি হয়।
বায়ু যখন ঠান্ডা কোনো বস্তুর সংস্পর্শে আসে, তখন বায়ুতে থাকা জলীয়বাষ্প ঠান্ড হয়ে পানির ফোঁটা হিসেবে জমা হয়। গ্লাসের ঠান্ডা পানির সংস্পশে বায়ুর জলীয় বাষ্প ঠান্ডা হয়ে পানিকণায় পরিণত হয় এবং গ্লাসের গায়ে লেগে থাকে। অন্যদিকে রাতে ঘাস, গাছের পাতা ইত্যাদির উপর বিন্দু বিন্দু পানি জমার ফলে যে শিশির দেখা যায় সেটিও একইভাবে বায়ুতে থাকা জলীয় বাষ্প ঠান্ডা হয়ে তৈরি হয়। এ কারণেই ঠান্ডা পানির গ্লাসের গায়ে লেগে থাকা পানির কণা এবং শিশির একই রকম।
অতিরিক্ত রচনামূলক প্রশ্নোত্তর
০১। পানি দূষণ কী? পানি দূষণের চারটি ফলাফর লেখ।
উত্তর: প্রাকৃতিক পানিতে বিভিন্ন ক্ষতিকর পদার্থ মিশ্রিত হয়ে যে দূষণ সৃষ্টি হয়, তাকে পানি দূষণ বলে।
পানি দূষণের ৪টি ফলাফলÑ
(র) জলজ প্রাণী মারা যায়।
(রর) জলজ খাদ্যশৃঙ্খলে ব্যাঘাত ঘটে।
(ররর) বিশুদ্ধ পানির সংকট সৃষ্টি হয়।
(রা) ডায়রিয়া ও কলেরার মতো পানিবাহিত রোগে মানুষ আক্রান্ত হয়।
০২। পানি চক্র কাকে বলে? চিত্রসহ পানি চক্রের উপায় তিনটি বাক্যে লেখ।
উত্তর: ভূপৃষ্ঠের পানি থেকে জলীয় বাষ্প, জলীয় বাষ্প থেকে মেঘ, মেঘ থেকে বৃষ্টি হিসেবে পানির আবার ভূপৃষ্ঠে ফিরে আসাকে পানি চক্র বলে।
পানি চক্রের উপায় বা সংঘটন প্রক্রিয়া:
(র) সূর্যতাপ পুকুর, খাল, বিল, নদী ও সমুদ্রের পানিকে জলীয় বাষ্পে পরিণত করে।
(রর) জলীয় বাষ্প বায়ুমন্ডলের ওপরের দিকে উঠে ঠা-া হয়ে ক্ষুদ্র পানিকণায় পরিণত হয়।
(ররর) ক্ষুদ্র পানিকণা একত্র হয়ে আকাশে মেঘ হিসেবে ঘুরে বেড়ায় এবং পরবর্তী সময়ে আকারে বড় হয়ে বৃষ্টিরূপে মাটিতে ঝড়ে পড়ে।
০৩। পানি দূষণের দুইটি কারণ এবং তিনটি ক্ষতিকর প্রভাব লেখ।
উত্তর: পানি দূষনের দুটি কারণ:
(র) খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে জমিতে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার, যা বৃষ্টির মাধ্যমে পুকুর, ডোবা, খাল-বিল, নদীর পানিতে এসে মিশে।
(রর) কল কারখানার বর্জ্য পদার্থ পানিতে ফেলা।
পানি দূষণের ৩টি ক্ষতিকর প্রভাব হলো:
(র) দূষিত পানি ব্যবহারের ফলে মানুষ পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। যেমনÑ কলেরা, আমাশয়, টাইফয়েড, ডায়রিয়া ইত্যাদি।
(রর) জলজ উদ্ভিদ ও মাছসহ অন্যান্য জীব ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
(ররর) দীর্ঘদিন আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করলে হাত-পায়ে এক ধরনের ক্ষত বা ঘা তৈরি হয়।
০৪। পানি দূষণ কী? পানি দূষণের চারটি কারণ লেখ।
উত্তর: পানিতে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর পদার্থ মিশ্রিত হয়ে যে দূষণ সৃষ্টি হয় তাকে পানি দূষণ বলে।
পানি দূষণের চারটি কারণ:
(১) পুকুর বা নদীর পানিতে বাসন-কোসন, ময়লাযুক্ত কাপড় ও রোগীর কাপড় ধোঁয়া।
(২) পুকুর বা নদীর পানিতে সাবান ব্যবহার করে গোসল করা।
(৩) পুকুর বা নদীর পানিতে গরু, মহিষ গোসল করানো।
(৪) পানিতে প্রাণীর মৃত দেহ ফেলা।
০৫। পানি আমাদের বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য হলেও আমরাই বিভিন্ন উপায়ে এর দূষণের জন্য দায়ী। এ দূষণের মানবসৃষ্ট ২টি কারণ ও ৩টি ফলাফল লেখ।
উত্তর: পানি দূষণের মানবসৃষ্ট দুটি কারণ হলো-
(১) কৃষিকাজে ব্যবহৃত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক বৃষ্টির পানি দ্বারা বাহিত হয়ে পুকুর, নদীনালা, খাল বিলের পানিতে মিশে পানিকে দূষিত করে।
(২) কলকারখানার রাসায়নিক বর্জ্য পানিতে ফেললে পানি দূষিত হয়।
পানি দূষণের তিনটি ফলাফল হলো-
(১) দূষিত পানি পান করলে ডায়রিয়া বা কলেরার মতো পানিবাহিত রোগ হয়।
(২) এ দূষণের ফলে জলজ প্রাণী মারা যায়।
(৩) এ দূষণের ফলে জলজ খাদ্যশৃঙ্খল ব্যাহত হয়।
০৬। পানি দূষণ বলতে কী বোঝায়? পানি দূষণের দুটি কারণ লেখ। খাবার পানি কীভাবে বিশুদ্ধ করবে সে সম্পর্কে দুটি বাক্য লেখ।
উত্তর: মানুষের অসাবধানী কাজের ফলে পানিতে রোগজীবাণু বা ক্ষতিকর পদার্থ মিশে পানি দূষিত হওয়াকে পানি দূষণ বলে।
পানি দূষণের দুইটি কারণ হলো-
(১) বাড়ির ময়লা-আবর্জা পুকুর বা জলাশয়ে ফেললে তা পচে পানি দূষিত করে।
(২) কৃষিকাজে ব্যবহৃত অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে খাল-বিল ও নদীর পানিতে মিশে পানিকে দূষিত করে।
খাবার পানি বিশুদ্ধকরণ:
(১) খাবার পানিকে বিশুদ মিনিটের বেশি সময় ধরে ফুটিয়ে বিশুদ্ধ করা সম্ভব।
(২) খাবার পানিতে ফিটকিরি মিশিয়ে তা বিশুদ্ধ করা যায়।
০৭। বরফ কীভাবে পানিতে পরিণত হয়? দুধ কেন তরল পদার্থ? তিনটি কারণ লেখ। কোনো কিচু দিয়ে না মুছে বোতলের ভেতরে লেগে থাকা পানি দূর করার ১টি উপায় লেখ।
উত্তর: বরফকে তাপ দিলে বরফ পানিতে পরিণত হয়। দুধ তরল পদার্থ কারণ:
(১) তরল অবস্থায় দুধের আকার ঠিক থাকে না, অর্থাৎ দুধ যে পাত্রে রাখা হয় সে পাত্রের আকার ধারণ করে।
(২) দুধের পরমাণুগুলোর মধ্যে বন্ধন শিথিল থাকে।
(৩) দুধ তাপ দিয়ে এমন অবস্থায় আনা যায় যে এর পরমাণুগুলোর মধ্যে কোন বন্ধন থাকে না। তখন তা জায়গা দখল করে কিন্তু তা নির্দিষ্ট থাকে না।
(৪) কোনো কিছু দিয়ে না মুছে তাপ প্রয়োগ করে বোতলের ভিতরে লেগে থাকা পানি দূর করা সম্ভব।