পঞ্চম শ্রেণি - ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা, প্রথম অধ্যায় - আকাইদ

                                                 প্রথম অধ্যায় -  প্রশ্নোত্তর

                          আকাইদ  

১. আল্লাহ তায়ালার গুণাবলি সম্পর্কে জানা প্রয়োজন কেন?
উত্তর ঃ
১.    আল্লাহর গুণ সম্পর্কে জানা থাকলে আল্লাহর আদেশ মতো চলা সহজ হয়।
২.    ভালো মানুষ হওয়া যায়।
৩.    আল্লাহ তায়ালার গুণে নিজেকে গুণান্বিত করতে পারলে চরিত্র ভালো হয়।
৪.    অন্যায় থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব হয়।
৫.    ইসলামে আল্লাহর গুণে গুণান্বিত হওয়ার নির্দেশ রয়েছে।

২.    আল্লাহ তায়ালা পানিচক্রের মাধ্যমে আমাদের বিশুদ্ধ পানি জোগান দিচ্ছেন- এ সম্পর্কে ৫টি বাক্য লিখ।
উত্তর ঃ
১.    প্রতিদিন সূর্যের তাপে নদীনালা, খালবিল ও সাগরের পানি জলীয় বাষ্পে পরিণত হয়।
২.    এই জলীয় বাষ্প বাতাসে ভেসে বেড়ায়।
৩.    পরে ঠা-া বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ে।
৪.    এই পানি কিছু অংশ মাটিতে নিচে জমা হয় আর কিছু অংশ পুকুর, নদীনালা, খালবিল ও সাগরে গিয়ে পড়ে।
৫.    মাটির নিচে জমা পানি কূপ ও নলকূপের মাধ্যমে আমরা পাই, এ পানি বিশুদ্ধ।

৩.    আল্লাহ সর্বদ্রষ্টা, তাই আমাদের কোন কোন কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে?
উত্তর ঃ আমরা সর্বদ্রষ্টা, তাই আমাদের যে কাজগুলো থেকে বিরত থাকতে হবে তা হলো-
১.    আমরা কর্তব্য কাজে অবহেলা করব না।
২.    কথা দিয়ে ভঙ্গ করব না।
৩.    অন্যায় কাজ করব না।
৪.    কারো ওপরে অত্যাচার করব না।
৫.    মিথ্যা কথা বলব না কারণ মহান আল্লাহ সব শোনেন, সব দেখেন।
৪.    মৃত্যুর পর মানুষের অবস্থা সম্পর্কে পাঁচটি বাক্য লিখ।
উত্তর ঃ মৃত্যুর পর মানুষের অকবস্থা সম্পর্কে পাঁচটি বাক্য হলো-
১.    মৃত্যুতেই সবকিছু শেষ হয়ে যায় না। মৃত্যুর পরও  এক জগৎ আছে।
২.    মৃত্যুর পরবর্তী জগতকে বলা হয় আখিরাত।
৩.    মৃত্যুর পরের জীবন অনন্তকালের জীবন।
৪.    আখিরাতে মানুষ তার ভালো কাজের জন্য জান্নাতের সুখ পাবে।
৫.    মন্দ কাজের জন্য জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করবে।

৫.    প্রকৃত মুমিনের পরিচয় ও বৈশিষ্ট সম্পর্কে পাঁচটি বাক্য ব্যাখ্যা কর।
উত্তর ঃ প্রকৃত মুমিনের পরিচয় ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে পাঁচটি বাক্য  ব্যাখ্যা করা হলো-
১.    যে ব্যক্তির ইমান আছে সেই মুমিন।
২.    ইসলামের মূল বিষয়গুলোকে মুমিন ব্যক্তি মেনে চলে।
৩.    মুমিন ব্যক্তি আল্লাহকে অন্তরে বিশ্বাস করে।
৪.    মুখে স্বীকার করে। এবং
৫.    তদানুযায়ী আমল করে।

৬.    “তিনি এগুলো শুধু সৃষ্টিই করে নি, এগুলো তিনি লালন-পালনও করছেন।”- উক্তিটি আলোচনা কর।
উত্তর ঃ কত সুন্দর আমাদের পৃথিবী। আমাদের এ সুন্দর পৃথিবীতে আমরা যা কিছু দেখতে পাই সবই মহান আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন। আবার অনেক কিছুই আছে যেগুলো আমরা দেখতে পাই না, সেগুলোও তিনিই সৃষ্টি করেছেন। তিনি এগুলো সৃষ্টি করেই ছেড়ে দেন নি। তিনি তাঁর নিয়ামতসমূহ দ্বারাও এগুলো লালন-পালন করছেন। আমাদের চারপাশে রয়েছে জীবজন্তু, পশুপাখি, গাছপালা আরও কতো কী। এগুলো তিনিই সৃষ্টি করেচেন। আবার তিনিই এগুলোকে খাদ্য, পানি ও আলো-বাতাস দিয়ে লালন-পালন করেন। সকল জীবজন্তু, পশুপাখি, তৃণলতা ও গাছপালা খাদ্য গ্রহন করে বেঁচে থাকা।
৭.    পাপ কাজের জন্য আল্লাহ তায়ালা সাথে সাথে শাস্তি দেন না কেন?
উত্তর ঃ পাপ কাজের জন্য আল্লাহ তায়ালা সাথেই তাকে শাস্তি প্রদান করেন না। তাকে অনুতপ্ত হওয়ার সময় দেন। ভালো হওয়ার সুযোগ দেন। পুনরায় পাপ কাজ না করার সংকল্প গ্রহণের বা তাওবা করার সুযোগ দেন।

৮.    নবি-রাসুলগণের মূল শিক্ষার যে কোনো পাঁচটি লেখ।
উত্তর ঃ আল্লাহ তায়ালা মানুষের হিদায়াতের জন্য যুগে যগে নবি-রাসুল পাঠিয়েছেন। তাঁরা ছিলেন মানুষের মহান ও আদর্শ শিক্ষক এবং পথপ্রদর্শক। নবি-রাসুলগণের মূল শিক্ষার মধ্যে পাঁচটি হলো-
১.    তাওহিদ : আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়। তাঁর কোনো শরিক নেই।
২.    রিসালাত : আল্লাহ তায়ালার বাণী মানুষের নিকট পৌঁছানো।
৩.    দীন : আল্লাহর দেওয়া জীবনব্যবস্থা সম্পর্কে মানুষকে জানানো।
৪.    শরিয়ত : হালাল হারাম এবং জায়েজ না-জায়েজের শিক্ষা প্রদান।
৫.    আখিরাত : মৃত্যুর পরবর্তী জীবন সম্পর্কে জানানো।
পৃথিবীর প্রত্যেক এলাকার মানুষকে এই কথাগুলো শেখানোর জন্য নবি-রাসুলগণ এসেছেন।

৯.    মৃত্যু ব্যক্তিকে কবরে কয়টি প্রশ্ন করা হবে? প্রশ্নগুলো লিখ।
উত্তর ঃ কবরে দুজন ফেরেশতা আসবেন এবং মৃত ব্যক্তিকে তিনটি প্রশ্ন করবেন। প্রশ্নগুলো হলো-
১.    মান রাব্বুকা (               ) অর্থ- তোমার রব কে?
২.    মা দীনুকা (                ) অর্থ- তোমার দীন কী?
৩.    মহানবি (স) কে দেখিয়ে বলা হবে (            ) মান হাজাররাজুল অর্থ- এই ব্যক্তি কে?
মহানবি (স) আমাদের এগুলোর সঠিক উত্তর শিখিয়ে দিয়েছেন। আর তা হলো-
প্রথম প্রশ্নের উত্তর ঃ
(               ) রাব্বি আল্লাহ। অর্থ- আমার রব আল্লাহ।
দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর ঃ
(                  ) দীনী আল ইসলাম। অর্থ- আমার দীন ইসলাম।
তৃতীয় প্রশ্নের উত্তর ঃ
(                 ) হাজা রাসুলল্লাহ। অর্থ- ইনি আমাদের রাসুল।
১০.    ‘আল্লাহ অতি সহনশীল’- কথাটি বুঝিয়ে লিখ।
উত্তর ঃ (             ) আল্লাহ হালিমুন অর্থ- আল্লাহ অতি সহনশীল। আমরা অনেক সময় অপরাধ করি। আল্লাহ আদেশ লঙ্ঘন করি। আল্লাহ তায়ালা সাথে সাথে শাস্তি দেন। আল্লাহ তায়ালা যদি আমাদের সাথে সাথে শাস্তি দিতেন তাহলে আমরা কেউ বঁচতে পারতাম না। আল্লাহ অতি সহনশীল। তিনি সহনশীলতা পছন্দ করেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন।
(    )
অর্থ- আল্লাহ সর্বজ্ঞানী, অতি সহনশীল। (সূরা নিসা, আয়াত- ১২

১১.    আল্লাহ সর্বশক্তিমান- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর ঃ আল্লাহ নিখিল বিশ্বের সৃষ্টিকর্তা। তিনি সর্বশক্তিমান। আকাশ ও পৃথিবী এ দুয়ের মাঝে যা কিছু আছে, সবই তাঁর অধীন। তিনি তাঁর ইচ্ছানুযায়ী মানুষকে ক্ষমতা দেন আবার ক্ষমতা কেড়েও নেন। যাকে ইচ্ছ সম্মান দেন এবং যাকে ইচ্ছ লাঞ্চিত করেন। আল্লাহ আমাদের রিজিকদাতা। তিনিই আমাদের মৃত্যু ঘটাবেন আবার তিনিই জীবত করবেন। এ প্রসঙ্গে কুরআন শরিফে বলা হয়েছে, “নিশ্চয় আল্লাহ সব বিষয়ে সর্বশক্তিমাণ।”
মহান আল্লাহর কাছে আমাদের নিজেকে একান্তভাবে সমর্পণ করা উচিত। কারণ তিনি সর্বশক্তিমান, সকল ক্ষমতার অধিকারী। তাঁর ক্ষমতা অসীম।

১২.    আখিরাত কাকে বলে?
উত্তর ঃ‘আখিরাত’ শব্দের অর্থ পরকাল। মৃত্যুর পরের জীবনকে আখিরাত বলে। এ পৃথিবীতে যত প্রাণী আছে সবাইকে মৃত্যুবরণ করতে হবে। মা, বাবা, দাদা-দাদি ও অনেক বৃদ্ধ লোক মারা গেছেন। তাদের মৃত্যুর পর ইহকালের জীবন সমাপ্ত হয়। পরকালীন জীবন হলো অনন্তকালের। যার কোনো শেষ বা সীমা নেই। হযরত আদম (আ) থেকে শুরু করে শেষ নবি হযরত মুহাম্মদ (স) পর্যন্ত সব নবি-রাসুলই আখিরাত সম্পর্কে বলেছেন। যেখানে মানুষের সৃতকর্মের ওপর ভিত্তি করে জান্নাত ও জাহান্নাম নির্বাচিত হবে। আখিরাতের জীবনে আছে কবর, কিয়ামত, হাশর, মিযান, জান্নাত ও জাহান্নাম। মানুষকে এগুলো অবশ্যই ভোগ করতে হবে।

১৩.    জাহান্নামে মানুষ কী ধরনের শাস্তি ভোগ করবে- এ সম্পর্কে লিখ।
উত্তর ঃ
১.    পৃথিবীতে যারা ইমান আনেনি, ভালো কাজ করেনি, তারা চিরদিন জাহান্নামে বাস করবে।
২.    জাহান্নামে কেবল দুঃখ আর দুঃখ।
৩.    সেখানে আছে ভীষণ ও ভয়ঙ্কর শাস্তি।
৪.    সেখানে আগুণে পেড়ানো, সাপের দংশন ও নানারকম শাস্তি দেওয়া হবে।
৫.    জাহান্নামে কেউ কোনো দিন মৃত্যুবরণ করবে না। শুধু শাস্তি ভোগ করবে।

১৪.    একজন মুসলিম চরিত্র কেমন হওয়া উচিত এ সম্পর্কে পাঁচটি বাক্য লিখ।
উত্তর ঃ একজন মুসলিমের চরিত্র কেমন হওয়া উচিত এ সম্পর্কে পাঁচটি বাক্য হলো-
১.    একজন মুসলিমের চরিত্রে আল্লাহর ভয় থাকবে।
২.    সে সত্য ও ন্যায়কে পৃথিবীর সবকিছুর চেয়ে বেশি প্রিয় মনে করবে। তছার চরিত্রে থাকবে সততা ও মহত্বের সমাবেশ।
৩.    সে কারো প্রতি জুলুম ও অবিচার করবে না এবং কখনো অন্রায়ের পথে পা বাড়াবে না।
৪.    হারাম জিনিস দিয়ে সে জীবিকা নির্বাহ করবে না।
৫.    মাথা কাটা গেলেও সে মিথ্যার সামনে মাথা নত করবে না।

১৫.    ‘জাহান্নাম হলো চিরস্থায়ী সুখের স্থান’- ৫টি বাক্যে ব্যাখ্যা কর।
উত্তর ঃ
১.    পৃথিবীতে যারা ছিল ইমানদার ও ভালো, তারা চিরদিনের জন্য জান্নাতে বাস করবে।
২.    জান্নাতে আছে আরামের সব ব্যবস্থা।
৩.    সেখানে কেবল শান্তি আর শান্তি, আনন্দ আর আনন্দ।
৪.    মন যা চাইবে সেখানে তাই পাওয়া যাবে।
৫.    সেখানে আছে উত্তম খাদ্য, পানীয়, সুন্দর বাগান ও ফলফলাদি।
Previous Post Next Post

نموذج الاتصال