ষষ্ঠ অধ্যায়
প্রশ্নোত্তর
সুস্থ জীবনের জন্য খাদ্য
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর:
০১। খাদ্য সংরক্ষনের ৩টি উপায় বর্ণনা কর।উত্তর: খাদ্য সংরক্ষণের ৩টি উপায় হলোÑ
(র) রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ: চাল, ডাল, গম ইত্যাদি খাদ্যশস্য রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করা যায়।
(রর) হিমাগারে সংরক্ষণ: শাকসবজি, মাছ, মাংস ইত্যাদি হিমাগারে সংরক্ষণ করে বছরের বিভিন্ন সময় বাজারে সরবরাহ করা হয়।
(ররর) বায়ুরোধী পাত্রে সংরক্ষণ: ফল থেকে তৈরি জ্যাম, জেলি, আচার ইত্যাদি বায়ুরোধী পাত্রে সংরক্ষণ করা হয়।
০২। খাদ্য সংরক্ষণের উপকারিতা কী?
উত্তর: খাদ্য সংরক্ষণ অপচয় রোধ করে দ্রুত পচন থেকে খাদ্যকে রক্ষা করে। এছাড়া খাদ্য সংরক্ষণের মাধ্যমে মৌসুমি খাদ্যদ্রব্য সারা বছর পাওয়া যায় এবং অকে দূরবর্তী এলাকায় সহজে খাবার সরবরাহ করা যায়।
০৩। সুষম খাদ্য গ্রহণ করা প্রয়োজন কেন?
উত্তর: দেহের বৃদ্ধি ও বিকাশ স্বাভাবিক রাখতে এবং কর্মক্ষমতা বাড়াতে সুষম খাদ্য গ্রহণ করা প্রয়োজন।
০৪। ৬টি খাদ্য দল কী কী?
উত্তর: ৬টি খাদ্য দল হলোÑ
(র) শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট
(রর) আমিষ বা প্রোটিন
(ররর) ¯েœহ পদার্থ বা ফ্যাট
(রা) ভিটামিন বা খাদ্যপ্রাণ।
(া) খনিজ লবণ
(ার) পানি
০৫। কীভাবে আমরা সুষম খাদ্য পেতে পারি?
উত্তর: যেসব খাদ্য শর্করা, আমিষ, ¯েœহ, ভিটামিন, খনিজ লবণ ও পানি এ ছয়টি খাদ্য উপাদান নির্দিষ্ট অনুপাতে থাকে সেসব খাদ্য বয়স ও কাজের ধরন অনুযায়ী প্রতিদিন গ্রহণ করে আমরা সুষম খাদ্য পেতে পারি।
০৬। কোন কোন খাদ্যে কৃত্রিম রং ব্যবহার করা হয়?
উত্তর: মিষ্টি, জেলি, চকলেট, আইসক্রিম, কেক, চিপস, কোমল পানীয় ইত্যাদি খাদ্যে কৃত্রিম রং ব্যবহার করা হয়।
অতিরিক্ত সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর:
০১। সুষম খাদ্য কাকে বলে?
উত্তর: খাদ্যের ৬টি উপাদান যে খাদ্যে নির্দিষ্ট অনুপাতে থাকে, তাকে সুষম খাদ্য বলে।
০২। মানুষের খাদ্য ও পুষ্টির চাহিদার পরিমাণ কম-বেশি হয় কিসের ভিত্তিতে?
উত্তর: মানুষের খাদ্য ও পুষ্টির চাহিদার পরিমাণ কম-বেশি হয় বয়স ও কাজের ধরনের ওপর ভিত্তি করে।
০৩। খাবারের কৃত্রিম রং শরীরে কী ক্ষতি করে?
উত্তর: খাবারের কৃত্রিম রং ক্যান্সার রোগ, অমনোযোগিতা, অস্থিরতা ইত্যাদি সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
০৪। খাবারের রাসায়নিক পদার্থ শরীরে কী ক্ষতি করে?
উত্তর: খাবারের রাসায়নিক পদার্থ বৃক্ক ও যকৃতকে অকার্যকর করে এবং ক্যান্সারের মতো রোগ সৃষ্টি করতে পারে।
০৫। জাঙ্ক ফুডে কী কম থাকে?
উত্তর: জাঙ্ক ফুডে পুষ্টি উপাদান কম থাকে।
০৬। জাঙ্ক ফুডে কী বেশি থাকে?
উত্তর: জাঙ্ক ফুডে চর্বি, লবণ ও চিনি উচ্চমাত্রায় থাকে।
০৭। চাল, ডাল, কীভাবে সংরক্ষণ করা যায়?
উত্তর: চাল, ডাল রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করা যায়।
০৮। কোন খাবারে খাদ্য আঁশ নেই?
উত্তর: জাঙ্ক ফুডে কোনো খাদ্য আঁশ নেই।
০৯। জাঙ্ক ফুড কী?
উত্তর: জাঙ্ক ফুড হলো এক ধরনের কৃত্রিম সুস্বাদু খাবার, যাতে চর্বি, লবণ ও চিনি অধিক মাত্রায় থাকে।
১০। খাদ্যে ব্যবহৃত স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর একটি রাসায়নিক পদার্থেল নাম লেখ।
উত্তর: খাদ্যে ব্যবহৃত স্বাস্থ্যে জন্য ক্ষতিকর একটি রাসায়নিক পদার্থ হলো ফরমালিন।
১১। খাদ্যদ্রব্যকে আকর্ষণীয় করতে কী কী ব্যবহার করা হয়?
উত্তর: খাদ্যদ্রব্যকে আকর্ষণীয় করতে কৃত্রিম রং ও রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয়।
১২। খাবারের পচন সৃষ্টিকারী একটি অণুজীবের নাম লেখ।
উত্তর: খাবারের পচন সৃষ্টিকারী একটি অণুজীব হলো ব্যাকটেরিয়া।
১৩। মৌসুমি খাদ্যদ্রব্য সারা বছর পাওয়া যায় কীভাবে?
উত্তর: খাদ্য সংরক্ষণের মাধ্যমে মৌসুমি মেশানো খাদ্যদ্রব্য সারা বছর পাওয়া যায়।
১৪। খাবারের কৃত্রিম রং মেশানো হয় কেন?
উত্তর: খাবারকে আকর্ষণীয় ও লোভনীয় করতে কৃত্রিম রং মেশানো হয়।
১৫। ফরমালিন কী?
উত্তর: ফরমালিন হলো খাবার সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত এক ধরনের ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ।
১৬। কার্বাইড কী?
উত্তর: কার্বাইড হলো ফল পাকানোর জন্য ব্যবহৃত এক ধরনের ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ।
১৭। দুটি জাঙ্ক ফুডের নাম লেখ।
উত্তর: দুটি জাঙ্ক ফুড হলোÑ বর্গার ও পটেটো চিপস।
১৮। জাঙ্ক ফুড খেলে কী সমস্যা হতে পারে?
উত্তর: জাঙ্ক ফুড খেলে পুষ্টিহীনতা, অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি, মোটা হয়ে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে।
বর্ণনামূলক প্রশ্নোত্তর:
০১। একটি বার্গারে বিভিন্ন ধরনের খাবার যেমনÑ গরু ও মুরগির মাংস, টমেটো, লেটুস, পনির, পাউরুটি ইত্যাদি থাকে। তারপরেও বেশি বার্গার খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর কেন?
উত্তর: বার্গারে অধিক পরিমাণে চিনি, লবণ ও চর্বি থাকে, যা শরীরে পুষ্টিহীনতা, অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধির মতো মস্যার জন্য দায়ী। তাই অতিরিক্ত বার্গার খাওয়া শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
বার্গার সুষম খাদ্য নয়। এটি এক ধরনের কৃত্রিম খাদ্য, যাতে গরু ও মুরগির মাংস, টমেটো, লেটুস, পনির, পাউরুটি ইত্যাদি থাকে। বার্গারে বিদ্যমান টমেটো, লেটুস ইত্যাদি আমাদের জন্য যতটা না উপকারী তার চেয়েও অনেক বেশি ক্ষতিকর হলো গরু ও মুরগির মাংস, পনির, পাউরুটি ইত্যাদি বিদ্যমান উচ্চমাত্রার চর্বি ও লবণ। এসব চর্বি বা লবণ আমাদের শরীরে খুব সামান্যই দরকার হয়। আমরা যখন অধিক পরিমাণে চর্বিজাতীয খাবার গ্রহণ করি তখন আমাদের দেহ এগুলোকে চর্বিকণায় রূপান্তরিত করে। ফলে আমাদের শরীরের ওজন বৃদ্ধি পায়, দেহ স্থূলকায় হয়ে পড়ে। খুব বেশি বর্গার খেলে পুষ্টিহীনতা, অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি বা মোটা হয়ে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে।
০২। খাদ্য সংরক্ষণের মাধ্যমে আমরা নানাভাবে উপকৃত হই। কিন্তু খাদ্যে রাসায়নিকের ব্যবহার আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হয় কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: খাদ্যে ব্যবহৃত রাসায়নিক পদার্থগুলো বৃক্ক, যকৃতের মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের স্বাভাবিক কাজে বাধা প্রদান করে। এর ফলে দেহ অকার্যকর হয়ে পড়ে বলে উক্ত পদার্থগুলো স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
বিভিন্নভাবে খাদ্য সংরক্ষণ করা যায়। খাদ্য সংরক্ষণ অপচয় রোধ করে ও দ্রুত পচন থেকে খাদ্যকে রক্ষা করে। এছাড়া খাদ্য সংরক্ষণের মাধ্যমে বিভিন্ন মৌসুমি খাদ্যদ্রব্য সারা বচর পাওয়া যায় এবং অনেক দূরবর্তী এলাকায় সহজে সরবরাহ করা যায়। কিন্তু খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন থেকে শুরু করে খাদ্য তৈরি, খাদ্য সংরক্ষণ, ফল পাকানো ও বাজাজাতকরণে রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয়। সাধারণত অসাধু ব্যবসায়ীরা খাবারে বিভিন্ন ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ মিশিয়ে থাকে। খাবার সংরক্ষণের জন্য ফরমালিন, ফল পাকানোর জন্য বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ যেমনÑ কার্বাইড ব্যবহার করা হয়। এ সকল ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ মিশ্রিত খাদ্য গ্রহনের ফলে বৃক্ক ও যকৃত অকার্যকর হয়ে যেতে পারে। ক্যান্সারের মতো রোগ হতে পারে।
অতিরিক্ত বর্ণনামূলক প্রশ্ন:
০১। খাদ্য সংরক্ষণের গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: খাদ্যের অপচয় রোধ করে সারা বচর সরবরাহ নিশ্চিত করতে খাদ্য সংরক্ষণ অপরিহার্য। খাদ্য সংরক্ষণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সব খাদ্যদ্রব্য সব দেশে হয় না। কিন্তু এমন অনেক খাদ্যদ্রব্য আছে যা সারা বছরই প্রয়োজন হয়। তাই সব দেশেই প্রায় সব ধরনের প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য সংরক্ষণ করতে হয়। খাদ্য সংরক্ষণের মাধ্যমেÑ
(র) খাদ্যের অপচয় রোধ করা যায়।
(রর) দ্রুত পচন থেকে খাদ্যকে রক্ষা করা যায়।
(ররর) খাবারে পচন সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া বিস্তার রোধ করা যায়।
(রা) মৌসুমি খাদ্যদ্রব্য সারা বছর পাওয়া যায়।
(া) দূরবর্তী এলাকায় সহজে খাবার সরবরাহ করা যায়।
তাই বলা যায়, খাদ্য সংরক্ষণের গুরুত্ব অপরিসীম।
০২। খাদ্যে ব্যবহৃত দুটি রাসায়নিক পদার্থের নাম লেখ। খাদ্যে রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহারের ৩টি ক্ষতিকর প্রভাব উল্লেখ কর।
উত্তর: খাদ্যে ব্যবহৃত দুটি রাসায়নিক পদার্থ হলোÑ
(র) ফরমালিন, যা খাদ্য সংরক্ষণে ব্যবহৃত হয়।
(রর) ক্যালসিয়াম কার্বাইড, যা ফল পাকানোর জন্য ব্যবহৃত হয়।
খাদ্য দ্রব্য উৎপাদন থেকে শুরু করে খাদ্য তৈরি, খাদ্য সংরক্ষণ, ফল পাকানো, বাজারজাতকরণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহারের ফলে মানুষের শরীরের নানা রকম ক্ষতি হয়। এর তিনটি ক্ষতিকর প্রভাব হলোÑ
(র) বৃক্ক অকার্যকর হয়ে যেতে পারে।
(রর) যকৃত অকার্যকর হয়ে যেতে পারে।
(ররর) ক্যান্সারের মতো রোগ হতে পারে।
০৩। জাঙ্ক ফুড কী? জাঙ্ক ফুড বেশি খেলে কী ক্ষতি হয়?
উত্তর: জাঙ্ক ফুড হলো অত্যধিক চিনি, লবণ ও চর্বিযুক্ত পুষ্টিহীন কিন্তু সুস্বাদু এক ধরনের কৃত্রিম খাবার। জনপ্রিয় জাঙ্কুফুডের মধ্যে রয়েছে বার্গার, পিজা, পটেটো চিপস, ফ্রাইড চিকেন, কোমল পানীয় ইত্যাদি।
জাঙ্ক ফুড সুস্বাদু হলেও সুষম নয়। এসব খাবারে পুষ্টি উপাদানের পরিমাণ খুব কম বা নেই বললেই চলে। জাঙ্ক ফুডে অধিক পরিমাণে চিনি, লবণ ও চর্বি থাকে, যা আমাদের শরীরে খুব সামান্য দরকার হয়। তাই সাধারণ খাবারের বদলে জাঙ্ক ফুড বেশি খেলে পুষ্টিহীনতা, অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি বা মেটা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
০৪। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে খাদ্য সংরক্ষণের উপায় পাঁচটি বাক্যে লেখ।
উত্তর: বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে খাদ্য সংরক্ষণের পাঁচটি উপায় হলো:
(র) খাদ্যের বৈশিষ্ট্য বা গুণাগুণ ঠিক রেখে খাদ্য দ্রব্যকে উচ্চতাপে শুকানো, যেমনÑ মুড়ি, খই ইত্যাদি।
(রর) উচ্চতাপে খাদ্যদ্রব্যের জীবাণু ধ্বংস করে বদ্ধ পাত্রে এক বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করা, যেমনÑ মাছ, মাংস, ফল ইত্যাদি।
(ররর) বরফ জমানো ঠা-ায় মাছ, মাংস, মটরশুটি, টমেটো ইত্যাদি সংরক্ষণ করা।
(রা) লবণ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের মাছ সংরক্ষণ করা, যেমনÑ নোনা ইলিশ।
(া) তেলের সাহায্যে খাদ্য সংরক্ষণ করা, যেমনÑ আচার।
০৫। খাদ্যে কৃত্রিম রং ও রাসায়নিক দ্রব্য মেশানোর জন্য সম্প্রতি ভ্রাম্যমাণ আদালত জনতা সুপার মার্কেটের অনেক খাদ্য ও ফল ব্যবসায়ীকে শান্তি ও জরিমানা করেছে। খাদ্যে এ সকল দ্রব্য মেশালে জনস্বাস্থ্যের কী সমস্যা হয়?
উত্তর: খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন থেকে শুরু করে খাদ্য তৈরি, খাদ্য সংরক্ষণ, ফল পাকানো ও বাজারজাতকরণে কৃত্রিম রং ও রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয়। সাধারণত খাবারকে আকষর্ণীয় ও লোভনীয় করতে মিষ্টি, জেলি, চকলেট, আইসক্রিম, কেক, চিপস, কোমল পানীয় ইত্যাদি খাবারে কৃত্রিম রং মেশানো হয়। কৃত্রিম রং মেশানো খাবার খেলে মানুষের ক্যান্সার, অমনোযোগিতা, অস্থিরতা ইত্যাদি রোগ সৃষ্টি হতে পারে। সাধারণত অসাধু ব্যবসায়ীরা খাবারে বিভিন্ন ক্ষতিকর রাসায়নিক পর্দা মিশিয়ে থাকে। খাবার সংরক্ষণের জন্য ফরমালিন, ফল পাকানোর জন্য কার্বাইড ব্যবহার করে। এ সকল ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ মিশ্রিত খাদ্য গ্রহণের ফলে বৃক্ক ও যকৃত অকার্যকর হয়ে যেতে পারে। ক্যান্সারের মতো রোগ হতে পারে।
০৬। একজন ফল ব্যবসায়ী কৃত্রিম রং ও রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহারের কারণে পুলিশের হাতে ধরা পড়ল। কোন কোন খাদ্যে কৃত্রিম রং মেশানো হয়? খাদ্যে মেশানো রাসায়নিক দ্রব্যের নাম লেখ। খাদ্যদ্রব্যে রাসায়নিক দ্রব্য মেশানোর ফলে মানুষের শরীরের কী কী ক্ষতি হতে পারে বলে তুমি মনে কর?
উত্তর: মিষ্টি, জেলি, চকলেট, আইসক্রিম, কেক, চিপস, কোমল পানীয় ইত্যাদি খাদ্যে কৃত্রিম রং মেশানো হয়।
খাদ্যে মেশানো রাসায়নিক দ্রব্য হলোÑ ফরমালিন, ক্যালসিয়াম কার্বাইড ইত্যাদি।
রাসায়নিক দ্রব্য মিশ্রিত খাবার খেলে মানুষের শরীরের বিভিন্ন দরনের ক্ষতি হয়। যেমনÑ
(র) বৃক্ক অকার্যকর হয়ে যেতে পারে।
(রর) যকৃত অকার্যকার হয়ে যেতে পারে।
(ররর) ক্যান্সারের মতো রোগ হতে পারে।
০৭। নায়লা বার্গার, চিপস ও পিজা খেতে পছন্দ করে। কিন্তু শায়লা ভাত, মাছ ও সবজি খেতে পছন্দ করে। দুজনের মধ্যে কার খাবার পুষ্টিসম্মত এবং কেন তা ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: নায়লা ও শায়লার মধ্যে শায়লার খাবার পুষ্টিসম্মত কারণ তা সুষম খাদ্যের সব উপাদান ধারণ করে।
খাবারগুলো হলো জাঙ্কফুড, যেখানে কোনো পুষ্টি উপাদান নেই। এগুলো সুষম খাবার নয়, মুখরোচক কৃত্রিম খার্বা এসব খাবারের উচ্চমাত্রায় চর্বি, লবণ ও চিনি রয়েছে যা আমাদের শরীরের জন্য সামান্য প্রয়োজন হয়। তাই সাধারণ খাবারের বদলে এসব খাবার খেলে নায়লা পুষ্টিহীনতা, অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধির মতো জটিল সমস্যায় ভুগবে। অন্যদিকে শায়লা ভাত, মাছ ও সবজি খেতে পছন্দ করে। এক্ষেত্রে তার খাবারে শর্করা, আমিষ, ভিটামিন ও খনিজ লবণ বিদ্যমান, যা সুষম খাদ্যের উপাদান। এসব খাবার গ্রহণের ফলে শায়লার শরীর কর্মক্ষম থাকে, দেঞের বৃদ্ধি ও বিকাশ স্বাভাবিকভাবে হয়, সে সহজে রোগে আক্রান্ত হয় না। মোটা হয়ে যাওয়া সমস্যার সম্মুখীন হয় না। তাই উপরিউক্ত আলোচানর পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, শায়লার পছন্দকৃত খাবার পুষ্টিসম্মত।
০৮। আমাদের শরীরের জন্য কেন সুষম খাদ্য প্রয়োজন তা দু’টি বাক্যে লেখ। আমাদের জীবনের জন্য পানি কেন তাৎপর্যপূর্ণ তা তিনটি বাক্যে লেখ।
উত্তর: সুষম খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা:
(র) সুষম খাদ্য আমাদের দেহ সুস্থ রাখে এবং আমাদের শক্তিশালী করে।
(রর) এটি দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটায় এবং রোগের আক্রমণ থেকে দেহকে রক্ষা করে।
পানি প্রয়োজনীয়তা:
(র) জীবের খাদ্য পরিাপক ও শরীরে যাবতীয় বিপাকীয় কার্যকলাপ সম্পন্ন করার জন্য পানি মাধ্যম হিসাবে কাজ করে।
(রর) শরীরের সঠিক তাপমাত্রা বজায় রাখতে পানির ভূমিকা অপরিসীম।
(ররর) পুষ্টি উপাদান শোষণ ও দেহের প্রতিটি অঙ্গের পরিবহনের জন্য পানি প্রয়োজন।
০৯। সুষম খাদ্যে কয়টি উাদান থাকে? যারা বেশি পরিশ্রম করে তাদের পরিমিত খাদ্য গ্রহণ প্রয়োজন কেন একটি বাক্যে লেখ। অতিরিক্ত খাবার খাওয়া নিরুৎসাহিত করতে তুমি কী করবে তা তিনটি বাক্যে লেখ।
উত্তর: সুষম খাদ্যে ৬টি উপাদান থাকে।
যারা বেশি পরিশ্রম করে তাদের দেহকে সুস্থ, সবল ও কর্মক্ষম রাখতে, দেহের বৃদ্ধি সাধণ ও ক্ষয়পূরণে এবং দেহে তাপ শক্তি জোগাতে পরিমিত খাদ্য গ্রহণ করতে হয়। অতিরিক্ত খাবার খাওয়া নিরুৎসাহিত করতে আমি নিচে উল্লিখিত কাজ তিনটি করব:
(র) অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে সবাইকে সচেতন করব।
(রর) অতিরিক্ত খাবার খেলে দেহভারী হয়ে যায় সে সম্পর্কে সবাইকে জানাব।
(ররর) অতিরিক্ত খাবার খেলে শিশুরা খেলাধুলায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে সে সম্পর্কে সবাইকে জানাব।
১০। ব্যবসায়ীরা কেন খাদ্যে ক্যালসিয়াম কার্বাইড মেশান, তা একটি বাক্যে লেখ। নিয়মিত রাসায়নিক দ্রব্য মিশ্রিত খাবার খেলে যে সমস্ত রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তার মধ্যে দুটির নাম লেখ। কাউকে খাদ্যে ভেজাল ও রাসায়নিক দ্রব্য মেশাতে নিরুৎসাহিত করতে তাকে দেওয়া দুটি পরামর্শ লেখ।
উত্তর: ফল পাকানোর জন্য ব্যবসায়ীরা ফল-মুলে ক্যালসিয়াম কার্বাইড মেশান।
নিয়মিত রাসায়নিক দ্রব্য মিশ্রিত খাবার খেলে ক্যান্সার ও বৃক্ক অকার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
খাদ্যে ভেজাল ও রাসায়নিক দ্রব্য মেশাতে নিরুৎসাহিত করতে দুটি পরামর্শ হলো:
(র) খাদ্যে ভেজাল ও রাসায়নিক দ্রব্য মেশানোর অপকারিতা সম্পর্কে জানানো।
(রর) এটি যে একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ ও এর কারণে জেল-জরিমানা হতে পারে সে সম্পর্কে সচেতন করা।
০১।