তৃতীয় অধ্যায়, প্রশ্নোত্তর মাটি
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর:
০১। আমাদের জীবনে মাটির পাঁচটি ব্যবহার লেখ।উত্তর: আমাদের জীবনে মাটির পাঁচটি ব্যবহার হলোÑ
(র) বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ জন্মানোর জন্য মাটি ব্যবহৃত হয়।
(রর) বসবাসের জন্য মাটির উপর ঘরবাড়ি ও দালানকোঠা নির্মিত হয়।
(ররর) ইট বা কংক্রিট তৈরিতে মাটি ব্যবহৃত হয়।
(রা) বিভিন্ন ধরনের মৃৎশিল্প তৈরিতে মাটি ব্যবহৃত হয়।
(া) ময়লা আবর্জনা ফেলার জন্য ভাগাড় তৈরিতে মাটি ব্যবহার করা হয়।
০২। উদ্ভিদের বৃদ্ধির জন্য কী কী প্রয়োজন?
উত্তর: উদ্ভিদের বৃদ্ধির জন্য খাদ্য, পানি, আলো ও মাটি প্রয়োজন।
০৩। মাটির উর্বরতা বজায় রাখার উপায় কী কী?
উত্তর: মাটির উর্বরতা বজায় রাখার উপায় হলোÑ
(র) মাটিতে নিয়মিত সার ব্যবহার করা।
(রর) জমিতে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন ফসল চাষ করা।
(ররর) শিম জাতীয় উদ্ভিদের চাষ করা।
অতিরিক্ত সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর:
০১। উদ্ভিদ ও প্রাণীর আবাসস্থল কোনটি?
উত্তর: উদ্ভিদ ও প্রাণীর আবাসস্থল হলো মাটি।
০২। উদ্ভিদ প্রয়োজনীয় পানি ও পুষ্টি কোথা থেকে পায়?
উত্তর: উদ্ভিদ প্রয়োজনীয় পানি ও পুষ্টি মাটি থেকে পায়।
০৩। কনক্রিট কী দ্বারা তৈরি হয়?
উত্তর: কনক্রিট মাটি দ্বারা তৈরি হয়।
০৪। একটি মৃৎশিল্পের নাম লেখ।
উত্তর: একটি মৃৎশিলে।পর নাম হলো রান্নার হাঁড়ি-পাতিল।
০৫। উদ্ভিদের বৃদ্ধি ও সতেজতার জন্য কী প্রয়োজন?
উত্তর: উদ্ভিদের বৃদ্ধি ও সতেজতার জন্য পুষ্টি প্রয়োজন।
০৬। মাটিতে সার ব্যবহার করে কী বাড়ানো যায়?
উত্তর: মাটিতে সার ব্যবহার করে মাটির উর্বরতা বাড়ানো যায়।
০৭। একটি জৈব সারের নাম লেখ।
উত্তর: একটি জৈব সারের নাম হলো কম্পোস্ট সার।
০৮। কৃষি কাজে কীটনাশক ব্যবহারের ক্ষতিকর দিক কী?
উত্তর: কৃষি কাজে কীটনাশক ব্যবহারের ক্ষতিকর দিক হলো মাটি দূষিত হওয়া।
০৯। মাটি সংরক্ষণ বলতে কী বুঝায়?
উত্তর: মাটি সংরক্ষণ বলতে বুঝায় মাটির ক্ষয়রোধ করা বা মাটির উর্বরতা বজায় রাখা।
১০। মাটি ক্ষয়ের একটি কারণ লেখ।
উত্তর: মাটি ক্ষয়ের একটি কারণ হলো অতি বৃষ্টিপাত।
বর্ণনামূলক প্রশ্নোত্তর
০১। কীভাবে আমরা মাটি দূষণ রোধ করতে পারি বর্ণনা কর।
উত্তর: আমরা বিভিন্ন উপায়ে মাটি দূষণ রোধ করতে পারি। যেমনÑ
(র) নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা।
(রর) শিল্পকারখানা ও হাসপাতালের বর্জ্য মাটিতে না ফেলে শোধন করা।
(ররর) জিনিসপত্রের ব্যবহার কমানো, পুনঃব্যবহার ও রিসাইকেল করা।
(রা) জমিতে জৈব সার যেমনÑ কম্পোস্ট ব্যবহার করা।
(া) বনভূমি সংরক্ষণ করা।
০২। জীবের জন্য মাটি গুরুত্বপূর্ণ কেন ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: জীবের বেঁচে থাকার জন্য অত্যন্ত দরকারি একটি উপাদান হলো মাটি। এ মাটিই হচ্ছে উদ্ভিদ ও প্রাণী তথা জীবের আবাসস্থল। বেঁচে থাকার জন্য খাদ্য প্রয়োজন। আর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মাটিই জীবনে খাদ্য সরবরাহ করে। যেমনÑ মাটি থেকে খাদ্য গ্রহণ করে উদ্ভিদ জন্মে। আর প্রাণী এ উদ্ভিদ কাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে। তাছাড়া নানাবিধ কাজে মানুষ মাটি ব্যবহার করে। যেমনÑ কৃষি কাজে, গৃহ নির্মাণে, মৃৎশিল্পে, আবর্জনা ফেলার স্থান হিসেবে মাটি ব্যবহার অত্যন্ত জরুরি। এ সকল কারণে মাটি জীবের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
০৩। মাটি কীভাবে সংরক্ষণ খরা যায়?
উত্তর: মাটি সংরক্ষণ বলতে বুঝায় মাটি ক্ষয় রোধ করা বা মাটির উর্বরতা বজায় রাখা। নি¤œলিখিত উপায়ে মাটি সংরক্ষণ করা যায়Ñ
(র) বনভূমি ধ্বংস না করে।
(রর) পতিত জমিতে ঘাস লাগিয়ে ও বনায়ন সৃষ্টি করে।
(ররর) ধীর গতিতে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে।
(রা) রাসায়নিক সারের পরিবর্তে জৈব সার ব্যবহার করে।
(া) প্লাস্টিকের খেলনা, ব্যাগ বা পলিথিন মাটিতে না ফেলে।
অতিরিক্ত বর্ণনামূলক প্রশ্নোত্তর:
০১। মাটি কী? মাটি কীভাবে প্রাণীকে খাদ্য সরবরাহ করে? ১টি বাক্যে লেখ। আমাদের দৈনন্দিজ জীবনে মাটির ব্যবহার ৩টি বাক্যে লেখ।
উত্তর: পৃথিবীর উপরিভাগের নরম আবরণই হচ্ছে মাটি।
বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ ও খাদ্যশস্য যা মাটিতে জন্মায় তা মানুষ বা প্রাণী খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে।
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে মাটির তিনটি ব্যবহার হলোÑ
(র) আমরা কৃষি কাজে মাটি ব্যবহার করি।
(রর) ঘরবাড়ি তৈরিতে মাটি ব্যবহার করি।
(ররর) মৃৎশিল্পের কাঁচামাল হিসেবে মাটি ব্যবহার করি।
০২। মাটির উর্বরতা কী? উদ্ভিদের বৃদ্ধির জন্য তুমি কেন উর্বরতা বজায় রাখতে যা করতে হবে এমন দুটি পরামর্শ লেখ।
উত্তর: মাটির উর্বরতা হচ্ছে মাটির ফসল উৎপাদনের ক্ষমতা। উদ্ভিদের বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানগুলো সার থেকে পাওয়া যায় বলে আমি সার ব্যবহার করব।
দুটি অজৈব সার হলোÑ ইউরিয়া ও টিএসপি।
মাটির উর্বরতা বজায় রাখতে যা করতে হবেÑ
(র) প্রয়োজনে পরিমাণমতো সার প্রয়োগ করতে হবে।
(রর) জমিতে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন ফসল চাষ অর্থাৎ ফসল আবর্তন পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে।
০৩। কোন ধরনের জমি বেশি উর্বর? তোমাদের একটি জমি অনুর্বর হয়ে গেছে। এ জমির উর্বরতা বৃদ্ধির জন্য ৪টি পরামর্শ লেখ।
উত্তর: যে জমিতে উদ্ভিদের প্রয়োজনীয় উপাদান বেশি থাকে তা বেশি উর্বর।
অনুর্বর জমিটিতে উর্বরতা বৃদ্ধির জন্য পরামর্শÑ
(র) জৈব সার হিসেবে জমিতে সবুজ সার, গোবর সার, খইল, কম্পোস্ট ইত্যাদির যেকোনোটি প্রয়োগ করতে হবে।
(রর) অজৈব সার হিসেবে ইউরিয়া, টিএসপি, এমপি প্রয়ৈাগ করতে হবে।
(ররর) জমিতে প্রতিবছর একই ফসল চাষ না করে পর্যায়ক্রমে ফসল চাষ করতে হবে।
(রা) জমিতে কীটনাশক ও আগাছানাশকের ব্যবহার কমাতে হবে।
০৪। মানুষ কীভাবে মাটি দূষিত করে? ফসল উৎপাদনে মাটি দূষণের একটি প্রভাব লেখ। মাটি দূষণ রোধের ১টি উপায় লেখ। মাটি সংরক্ষণে তোমার দুটি করণীয় লেখ।
উত্তর: মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বিভিন্ন ক্ষতিকর পদার্থ মাটিতে ফেলে মাটি দূষিত করে।
মাটি দূষণের কারণে মাটির উৎপাদন ক্ষমতা হ্রাস পাওয়ায় ফসল উৎপাদন কমে যায়।
মাটি দূষণ রোধের একটি উপায় হলোÑ শিল্পকারখানার রাসায়নিক বর্জ মাটিতে না ফেরৈ শোধন করা।
মাটি সংরক্ষণে আমার দুটি করণীয় হলোÑ
(র) জমিতে ঘাস লাগাব এবং
(রর) বৃক্ষ নিধন বন্ধ করব।
০৫। মাটি সংরক্ষণের ৫টি উপায় লেখ।
উত্তর: মাটি সংরক্ষণের ৫টি উপায় হলোÑ
(র) বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া বন-বাগান ধ্বংস না করা।
(রর) মাটি উন্মুক্ত না রাখা।
(ররর) ফসলের অপ্রয়োজনীয় গোড়া মাটিতে রেখে দেওয়া।
(রা) কৃষি ক্ষেতের মাঝে উঁচু আইল বাঁধা।
(া) ধান কাটার পর জমিতে থাকা এবং গোড়া পোড়ানো বন্ধ করা।
০৬। মাটি দূষণের কারণ ৫টি বাক্যে লেখ।
উত্তর: মাটি দূষণের কারণগুলো নিচে উল্লেখ করা হলোÑ
(র) মাটিতে বর্জ্য ও আবর্জনা অধিক পরিমাণে বেড়ে যাওয়া।
(রর) জমিতে অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার করা।
(ররর) পলিথিন ও প্লাস্টিক মাটিতে ফেলা।
(রা) কলকারখানার বর্জ্য পদার্থ মাটিতে ফেলা।
(া) বন জঙ্গল ধ্বংস করা।
০৭। মাটি দূষণ রোধের উপায় ৫টি বাক্যে লেখ।
উত্তর: মাটি দূষণ রোধের উপায়গুলো হলোÑ
(র) বাড়িঘর ও হাটবাজারের ময়লা-আবর্জনা মলমূত্র মাটিতে পুঁতে ফেলা।
(রর) শিল্প-কারখানা ও হাসপাতালের বর্জ্য শোধনের ব্যবস্থা করা এবং উন্মুক্ত স্থান ও পানিতে না ফেলা।
(ররর) বন ও বাগান সংরক্ষণ এবং বৃদ্ধি করা।
(রা) অজৈব সারের পরিবর্তে সবুজ সার, হিউমাস, গোবর সার, কম্পোস্ট ইত্যাদির ব্যবহার বাড়ানো।
(া) কীটনাশক, আগাছানাশকের ব্যবহার কমানো।