আমাদের এই পৃথিবীর প্রত্যেকটি জীবেরই একদিন মৃত্যু হবে। একদিন আগে বা পরে সকলকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। মানুষও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে কিছু মানুষ আছেন যারা তাদের কাজের মধ্য দিয়ে মরেও অমর হয়ে থাকেন।
ক্ষণস্থায়ী
এ পৃথিবীতে কেউই চিরদিন বেঁচে থাকবে না। মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও এ সংক্ষিপ্ত
জীবনে যারা মানব কল্যাণে কাজ করে যান, নিজের জীবন বিলিয়ে দিয়ে যান,
মৃত্যুর পরও তারা মানুষের হৃদয়ে চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকেন। একজন সাধারণ
মানুষ মারা গেলে মৃত্যুর পর পৃথিবীর মানুষ তাকে আর কেউ মনে রাখে না, তাকে
নিয়ে কোন আলোচনা হয় না। অথচ মহৎ প্রাণ, পরোপকারী, কীর্তিমান কোন মানুষের
মৃত্যু হলে তার শরীরের অবসান হয় বটে কিন্তু তাঁর মহৎ কাজগুলো, তার
কীর্তিগুলো তাঁকে বাঁচিয়ে রাখে। আমরা প্রতিনিয়ত তাদেরকে শ্রদ্ধা ও
সম্মানের সাথে স্মরণ করি।
কীর্তিমান মানুষেরা মৃত্যুর পরেও শত সহস্র বছর মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকেন, আমরা তাদেরকে গভীর শ্রদ্ধার সহিত স্মরণ করি। আমাদের জন্মভূমি বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যেমন আমরা সর্বোৎ শ্রদ্ধার সংগে স্মরণ করি তেমনি বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের শহিদ সালাম, বরকত, রফিক, শফিক কিংবা মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লক্ষ শহিদ বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে চিরকাল অমর হয়ে থাকবেন। তাদের আত্মত্যাগের কীর্তি বাঙালি চিরকাল শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে। তেমনিভাবে পৃথিবীর কল্যানে যারা মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন, জীবন দিয়ে গেছেন, মানুষকে অকৃত্রিম ভালোবাসায় সিক্ত করেছেন, তাঁরা মানুষের মনে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তাদেরকে কেউ কোনদিন ভুলবে না।
নশ্বর পৃথিবীতে মানুষের কর্ম অবিনশ্বর। দেহের মৃত্যু হলেও কর্মের মৃত্যু নেই। মৃত্যুর শত শত বছর পরেও কীর্তিমান মানুষের অমর অবদানের কথা মানুষ স্মরণ করে। সুতরাং নির্দ্বিধায় আমরা বলতে পারি, কীর্তিমানের মৃত্যু নেই।