আগামীকাল ৯ এপ্রিল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে সারা দেশে পবিত্র শবে বরাত পালিত হবে।
বুধবার সন্ধ্যায় দেশের আকাশে কোথাও পবিত্র শাবান মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। এজন্য আগামীকাল বৃহস্পতিবার রজব মাসের ৩০ দিন পূর্ণ হচ্ছে। আগামী শুক্রবার থেকে শাবান মাস গণনা শুরু হবে। সেই হিসেবে আগামী ৯ এপ্রিল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে পবিত্র শবে বরাত পালিত হবে।
আজ সন্ধ্যায় বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) আনিস মাহমুদ।
বুধবার সন্ধ্যায় দেশের আকাশে কোথাও পবিত্র শাবান মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। এজন্য আগামীকাল বৃহস্পতিবার রজব মাসের ৩০ দিন পূর্ণ হচ্ছে। আগামী শুক্রবার থেকে শাবান মাস গণনা শুরু হবে। সেই হিসেবে আগামী ৯ এপ্রিল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে পবিত্র শবে বরাত পালিত হবে।
আজ সন্ধ্যায় বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) আনিস মাহমুদ।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শাবান মাসের ১৫তম রাতে (১৪ শাবান দিবাগত রাত) শবেবরাত পালিত হয়। সেই হিসেবে আগামী ৯ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) দিবাগত রাতই শবেবরাতের রাত। শবে বরাতের পরের দিন বাংলাদেশে নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি। এবার এ ছুটি পড়েছে ১০ এপ্রিল (শুক্রবার), অর্থাৎ সাপ্তাহিক ছুটির মধ্যেই।
শাবান মাস শেষেই মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতরের আনন্দ বারতা নিয়ে শুরু হয় সিয়াম সাধনার মাস রমজান। ‘ভাগ্য রজনী’ হিসেবে পরিচিত লাইলাতুল বরাতের পুণ্যময় রাতটি বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের মুসলমানরা নফল নামাজ, কোরআন তিলাওয়াতসহ ইবাদত বন্দেগির মাধ্যমে কাটিয়ে থাকেন।
শবে বরাতে করণীয়ঃ শব অর্থ রাত আর বরাত অর্থ ভাগ্য অর্থ্যাৎ এর সমষ্টিগত অর্থ হলো ভাগ্যের রাত বা ভাগ্য নির্ধারণের রাত। এ ছাড়া শবে বরাত মুক্ত হওয়া বা বিচ্ছেদের রাত অর্থে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যেহেতু, অপরাধীরা আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত থাকে। এ ক্ষেত্রে বান্দার বন্দেগির সম্পর্ক বিচ্ছেদ হয়। শবে বরাতে যা যা করণীয়: বিভিন্ন হাদিস থেকে জানা যায় এ রাতে আমাদের করণীয় কী কী করণীয় । নিম্নে বিশদ আলোচনা করা হলো-
১) ইবাদত করা: এ রাতে গোসল করা মোস্তাহাব, গোসলের পর দুরাকাত তাহিয়াতুল অজুর নামাজ, অতঃপর দুরাকাতের নিয়তে প্রত্যেক রাকাতে আলহামদু (সুরা ফাতিহা) সুরা ইখলাছ সহকারে ৮ রাকাত নামাজ পড়তে হয় বলে বর্ণিত আছে। আরও দুই রাকাত নামাজ আছে, যিনি পড়বেন তাকে আল্লাহ তায়ালা তিনটি পুরস্কার দেবেন।
ক. রিজিক বাড়িয়ে দেবেন।
খ. দুঃখ-দুর্দশা লাঘব করবেন।
গ. গুনাহ মাফ করবেন।
২) রোজা রাখা: রোজা রেখে ইবাদত করা, ইবাদত করে রোজা রাখা-দুটোই উত্তম। কেন না, সারা দিন রোজা রেখে ইবাদত করলে ইবাদতে মন বসে। যাবতীয় গুনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে। কোরআন তিলাওয়াত করতে হবে। রিজিকের জন্য দোয়া করতে হবে। তওবা করতে হবে। তওবা তিনটির সমন্বয়ে হয়-
ক. কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হতে হবে।
খ. পাপ সম্পূর্ণভাবে পরিহার করতে হবে।
গ. ভবিষ্যতে পাপ না-করার অঙ্গীকার করতে হবে।
এছাড়াও--উভয় জাহানের কল্যাণ কামনা করতে হবে, নফল নামাজ পড়তে হবে,কবর জিয়ারত করতে হবে, আল্লাহর রহমত কামনা করতে হবে, আর ইবাদত করার পর কবুল হবে না কারণ, আল্লাহর রহমত না-হলে ইবাদত কবুল হবে না। এ জন্য ইবাদতের বড়াই বা অহংকার করা যাবে না।
৩) এ রাতে আমাদের বর্জনীয়: আতশবাজি, অপ্রয়োজনীয় আলোকসজ্জা, হালুয়া রুটি এ রাতেই বানাতে হবে —এমন ধারণা দূর করতে হবে। শিরনি বা জিয়াফতের নিয়মে খাদ্য পাকানো বা অন্য যেকোনো খাদ্যোপকরণ শুধু এ রাতেই নয়, অন্য যেকোনো দিনও তা করা যেতে পারে। মসুর ডাল পাকাতে হবে এ ধারণাও দূর করতে হবে। শবে বরাতে প্রচুর শিরনি বানাতে গিয়ে মহিলাদের ইবাদত থেকে বঞ্চিত রাখার প্রথা বর্জন করতে হবে।
হিন্দু, খ্রিস্টান ও ইহুদি তথা সবাই মনে করে, নবী মোহাম্মদ (স.)-এর উম্মত সবাই যদি এ রাতে ইবাদত করে, চোখের পানি ফেলে দোয়া করে, তবে তাদের দোয়া কবুল হবে এবং এদের সঙ্গে আমরা বিজয়ী হতে পারব না। তাই তারা তরুণদের হাতে সুকৌশলে আতশবাজি, পটকা তুলে দিয়েছে যাতে মোহাম্মদ (স.)-এর উম্মতেরা ইবাদতে একাগ্রতা ও মনোযোগ হারিয়ে ফেলে, আর এভাবে দাবিয়ে রাখা যাবে। অতএব, আগে থেকেই কিশোর, যুবক ও অজ্ঞ লোকদের বোঝাতে হবে। সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। মসজিদে, মহল্লায়, বাসায় ওয়াজ মাহফিলে আগে থেকেই এ রাতের করণীয় ও বর্জনীয় দিকগুলো বুঝিয়ে দিতে হবে।
৪) খালেছ তওবা ব্যতীত যাদের দোয়া এ রাতে কবুল হবে না
মুশরিক: যারা আল্লাহর সঙ্গে অন্য কাউকে শরিক করে। মনে করে অর্থনীতি, সমাজনীতি ও রাজনীতিতে মানুষ বা শয়তানের দেওয়া ব্যবস্থাই সঠিক। তারা যদি এ রাতে খালেছ তওবা করে এভাবে যে, আল্লাহ সার্বভৌমত্বের মালিক, তিনিই বিধানদাতা, আইনদাতা, রিজিকদাতা—তবে তার দোয়া কবুল হতে পারে।
সুদখোর: যে ব্যক্তি সুদ খায়, দেয় ও সাক্ষী হয়, সবাই হারামে লিপ্ত। সুদি কারবার হলো আল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধ ঘোষণা করার শামিল। তাই এ নিষিদ্ধ কর্ম তওবা করে পরিহার করতে হবে। তবেই ক্ষমা আশা করা যাবে।
মাদকাসক্ত: আল্লাহ মদ হারাম করেছেন, যারা মদসহ অপরাপর হারাম নেশা গ্রহণে অভ্যস্ত, খালেছ তওবা ব্যতীত তাদের দোয়াও কবুল হবে না।
গণক: গণক ও গণকের কথায় যারা বিশ্বাস করে তাদের দোয়া তওবা ছাড়া কবুল হবে না।
বাবা-মায়ের অবাধ্য সন্তান: যে সন্তান মা-বাবাকে কষ্ট দিয়েছে যতক্ষণ না তাদের কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নেবে ততক্ষণে তাদের দোয়া কবুল হবে না।
আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী: যারা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করে আত্মকেন্দ্রিক জীবনযাপন করে, আত্মীয়ের হক আদায় করে না, তাদের দোয়াও আল্লাহ কবুল করবেন না। আল্লাহ তায়ালা যেন আমাদের এ জাতীয় কোনো শ্রেণির কোনো একটিতে শামিল না-করেন। এ শ্রেণির লোকদের আগে থেকেই খালেছ তওবা করে পাপ কাজ পরিহার করে এ রাতের বরকত লাভের আশায় নিজেদের সংশোধন করে নেওয়া উচিত। অন্যথায় দোয়া কবুলের এই রাতে তাদের কোনো আবদারই আল্লাহর দরবারে গ্রহণযোগ্য হবে না।
শবে বরাত ও সামাজিক গুরুত্ব: আমাদের সমাজে মিলাদুন্নবী (স.), আশুরা, শবে মিরাজ, মাহে রমজান মুসলমানদের মধ্যে দ্বীনি প্রেরণা ও দ্বীনি মানসিকতা সৃষ্টিতে প্রত্যক্ষ মদদ জোগায়। কাউকে কাউকে কখনো মসজিদে দেখা যায় না। কিন্তু তাকে এ রাতে ভালো পোশাক পরে মসজিদে আসতে দেখা যায়। তারা এসে ওয়াজ শোনে, মুসল্লিগণ অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে আলেমদের ওয়াজ শোনেন। কোরআনের তাফসির ও হাদিস শোনেন। সবার সঙ্গে দুহাত তুলে মোনাজাত করার ফলে পরস্পরের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব-সৌহার্দ্য গড়ে ওঠে। মাতা-পিতার কবরের পাশে গিয়ে কাঁদে। হতে পারে এতে তার জীবনের মোড় ঘুরে যাবে। অতএব এ সুস্থ মানসিকতাকে খাটো করে দেখার অবকাশ নেই।
আমাদের এ লেখাটি যাদ আপনার ভালে লাগে, তাহলে অবশ্যই আমাদের ফেসবুক পেজ এ লাইক দিয়ে আমাদের সাথে থাকবেন। যদি আরো কিছু জানার থাকে তাহলে আমার এই পোস্টের নিচের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করবেন, আমি আমার সাধ্যমত আপনাদেরকে সঠিক তথ্যটি জানানোর চেষ্টা করব। আমাদের ফেসবুক পেজ এ লাইক বাটন ক্লিক করে পরবর্তী নিউজের সাথে আপডেট থাকবেন। বন্ধুদের সাথে পোস্টটি শেয়ার করতে ভুলবেন না। ধন্যবাদ সবাইকে। ভালো থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।Image Source: www.google.com