দুই প্রবাসীর করোনা শনাক্ত, এখন আতঙ্ক সাদুল্যাপুর || Again Corona identified in two immigrants, now Sadullapur in risk



অনেকটা ফাঁকা হয়ে গেছে গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলা শহর। আজ ২৩ মার্চ সোমবার সকালে উপজেলা শহরের হাট-বাজারে তেমন লোকজন দেখা যায়নি। অফিস-আদালতেও লোকজনের উপস্থিতি অনেকটাই কম। দুই প্রবাসীর শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

অন্যান্য দিন উপজেলা শহর সকাল ৮টা থেকে জমে উঠত মানুষ। কিন্তু আজ বেলা ১১টার সময়ও লোকজনের তেমন দেখা মেলেনি হাটে–ঘাটে। উপজেলা শহরে সরেজমিনে দেখা গেছে, লোকজন ও যানবাহন চলাচল তুলনামূলকভাবে অনেকটাই কম। মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া ঘরের বাইরে তেমন বের হচ্ছেন না। যারা ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন তারা মাস্ক পড়ে বের হচ্ছেন। আবার দ্রুত কাজ সেরে বাড়ি ফিরছেন।


উপজেলা শহরের কাঁচা বাজারের ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, 'প্রতিদিন সকালে ক্রেতাদের ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হয়। কিন্তু আজ মাত্র দুই-তিনজনের কাছে জিনিসপত্র বিক্রি করেছি।' একই বাজারের চাল ব্যবসায়ী কাশেম মিয়া বলেন, 'আমার দোকানে সকালেই বেশি চাল বিক্রি হয়। দুই থেকে তিনজন কর্মচারী দিয়ে চাল বিক্রি করতে হয়। কিন্তু আজ দুপুর পর্যন্ত মাত্র একজনের কাছে চাল বিক্রি করেছি।'

সাদুল্যাপুর উপজেলার দামোদরপুর গ্রামের রিকশাচালক বাবলু মিয়া বলেন, 'ছয় বছর ধরে উপজেলা শহরে রিকশা চালাই। এমন কখনো হয়নি। আজ বেলা ১১টা পর্যন্ত একটি ভাড়া পেয়েছি। লোকজন কম। রিকশায় উঠবে কে? প্রতিদিন রিকশা চালিয়ে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা আয় হয়। এ দিয়ে সংসার চলে।' মাস্ক পরে তাই রিকশা নিয়ে বের হয়েছেন তিনি।



সকাল সোয়া ১১টার দিকে উপজেলা শহরে দেখা হয় কলেজশিক্ষক তাজুল ইসলামের সঙ্গে।কলেজশিক্ষক তাজুল ইসলাম বলেন, সাদুল্যাপুর উপজেলার একটি গ্রামে দুজন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বিয়ের দাওয়াত খেতে এসেছিলেন। তাঁরা দুই-তিন এখানে ছিলেন। বিয়ে বাড়ির লোকজন ২১ মার্চ উপনির্বাচনে ভোটও দিয়েছেন। সব মিলিয়ে মানুষ উদ্বিগ্ন। সাদুল্যাপুর লকডাউন করে দেওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন।

উপজেলা শহরের কলেজ রোডের চাকরিজীবী ফারুক মিয়া বলেন, 'আমরা সর্তক আছি। কিন্তু অনেকে সর্তক নেই। বিশেষ করে ওই বিয়ে বাড়ির লোকজন প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তাদের কারণে আমাদের মধ্যে এই রোগ ছড়াতে পারে। তাই উপজেলাকে লকডাউন করা উচিত।' তবে সাদুল্যাপুর উপজেলা চেয়ারম্যান সাহারিয়া খান বলেন, মানুষের মধ্যে আতঙ্ক আছে। কিন্তু উপজেলা শহরে লোকজনের চলাফেরা স্বাভাবিক আছে।

উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শাহিনুর ইসলাম বলেন, ১১ মার্চ দুই প্রবাসী বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেন। তাঁরা ওই বাড়িতে ১১ ও ১২ মার্চ অবস্থান করেন। ১৩ মার্চ তাঁরা গাইবান্ধা শহরে নিজেদের বাড়িতে চলে যান। বিষয়টি জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের নজরে এলে তাদের দুজনকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। তাদের নমুনা ঢাকায় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইইডিসিআর) পাঠানো হয়। তবে ২২ মার্চ গতকাল রোববার আইইডিসিআর থেকে জানা যায়, ওই দুজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত।

১৩ মার্চের ওই অনুষ্ঠানে ৫ শতাধিক অতিথি উপস্থিত ছিলেন। তাদের বেশির ভাগই ২১ মার্চ গাইবান্ধা-৩ (সাদুল্যাপুর-পলাশবাড়ী) আসনের উপনির্বাচনে ভোট দেন। এ ছাড়া তাঁরা হাট-বাজারসহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়েছেন। এই অবস্থায় ভাইরাসটি দ্রুত সংক্রামিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ নিয়ে উপজেলা করোনা 

প্রতিরোধ কমিটি গতকাল এক জরুরি সভা করে। সভায় সাদুল্যাপুর উপজেলা লকডাউন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নবীনেওয়াজ জানান, উপজেলা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুমোদনের জন্য গাইবান্ধা জেলা করোনা প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কমিটির সভাপতি গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো হয়েছে।

আজ দুপুরে গাইবান্ধা জেলা করোনা প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কমিটির সদস্য সচিব এবং গাইবান্ধার সিভিল সার্জন এসএম আবু হানিফ বলেন, সাদুল্যাপুরে পর্যবেক্ষণ চালানো হচ্ছে। ওই বিয়ে বাড়ির সংস্পর্শে যারা এসেছিলেন তাদের চিহ্নিত করে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। বাকিদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। দুই প্রবাসী হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন। ঢাকা থেকে একটি দল গাইবান্ধায় আসবে। লকডাউন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, লকডাউন করার মতো কোনো পরিস্থিতি সাদুল্যাপুরে হয়নি।
আমাদের এ লেখাটি যাদ আপনার ভালে লাগে, তাহলে অবশ্যই আমাদের ফেসবুক পেজ এ লাইক দিয়ে আমাদের সাথে থাকবেন। যদি আরো কিছু জানার থাকে তাহলে আমার এই পোস্টের নিচের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করবেন, আমি আমার সাধ্যমত আপনাদেরকে সঠিক তথ্যটি জানানোর চেষ্টা করব। আমাদের ফেসবুক পেজ এ লাইক বাটন ক্লিক করে পরবর্তী নিউজের সাথে আপডেট থাকবেন। বন্ধুদের সাথে পোস্টটি শেয়ার করতে ভুলবেন না। ধন্যবাদ সবাইকে। ভালো থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
Image Source: www.google.com
Previous Post Next Post

نموذج الاتصال