নবম শ্রেণি, জেনারেল সাইন্স

প্রশ্ন-১ ঃ মিতা ৭ম শ্রেণির ছাত্রী। সে সর্বদা নিজেকে পরিপাটি করে সাজেয়ে রাখতে চায় কিন্তু তার অশিক্ষিত মা এ আচরণ পছন্দ করে না এবং সহযোগিতাও করে না। এ অবস্থায় একদিন তার মা পাশের বাড়ীর রহিমার মেয়েকে রহিমা পরিপাটি হয়ে সাজাতে সহযোগিতা করে এটা দেখে তার দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন ঘটে।

ক. বয়ঃসন্ধিকালে কোন পরিবর্তনগুলো আগে প্রকাশ পায়?
খ. গর্ভধারণ বলতে কী বুঝায়?
গ. মিতা যেভাবে থাকতে চায় তার কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. মিতার মায়ের দৃষ্টিবঙ্গি পরিবর্তন কতটুকু যুক্তিযুক্ত তা বিশ্লেষণ কর।

১ নং প্রশ্নের উত্তর

ক. বয়ঃসন্ধিকালের পরিবর্তনগুলোর মধ্যে দৈহিক বা শারীরিক পরিবর্তনগুলোই আগে প্রকাশ পায়।
খ. গর্ভধারণ হচ্ছে শরীরের একটি বিশেষ পরিবর্তন। সন্তান গর্ভে এলেই শুধুমাত্র শরীরের এই বিশেষ পরিবর্তন ঘটে। পুরুষের শুক্রাণু যখন মেয়েদের ডিম্বাণুর সাথে মিলিত হয় তখনই একটি মেয়ের গর্ভে সন্তান আসে অর্থাৎ সে গর্ভধারণ করে।
গ. মিতা ৭ম শ্রেণির ছাত্রী। এ সময় বয়স ১১-১৭ বছরের মধ্যে হবে। এ অবস্থায় তার বয়ঃসন্ধিকাল চলছে। বয়ঃসন্ধিকালে মেয়েদের দেহে ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টেরন হরমোন সৃষ্টি হয় যার ফলে মেয়েদের শারীরিক, মানসিক ও আচরণিক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। মিতা যে একজন আলাদা ব্যক্তিত্ব তা তার আচরণিক পরিবর্তন দ্বারা প্রকাশ ঘটাতে চায়। বয়ঃসন্ধিকালে মেয়েরা কল্পনাপ্রবণ হয় এবং আবেগ দ্বারা চালিত হয়। পরিপাটি রূপে নিজেকে সাজিয়ে রাখতে চায়। এসময় মেয়েরা বিপরীত লিঙ্গের আকর্ষণ বোধ করে।
তাই মিতা নিজেকে পরিপাটি রূপে রাখতে চাওয়ার কারণ হল সে বয়ঃসন্ধিকালে অবস্থান করছে যার ফলে তার আচরণিক পরিবর্তন ঘটেছে। আর আচরণিক পরিবর্তনের জন্যই মিতা পরিপাটিরূপে সেজে থাকতে পছন্দ করছে।
ঘ. বয়সন্ধিকালে ছেলে-মেয়েদের শারীরিক, মানসিক ও আচরণিক পরিবর্তন ঘটে। এসকল পরিবর্তনের সময় ছেলে-মেয়েরা অন্যের বিশেষ করে নিকটজনের ¯েœহ-ভালবাসা, মনোযোগ-যতœ এ সকল কিছু প্রত্যাশা করে।
কেননা তারা নতুন পরিস্থিতির মুখোমুখী হয় এবং নতুন পরিস্থিতিতে নিজেদের খাপ-খাওয়াতে চেষ্টা করে। এমন সময় নিকটজনেরা সহযোগিতা না করলে ছেলে-মেয়েরা বিপথে পরিচালিত হয়। এতে সমাজে, পরিবারে ও রাষ্ট্রে নেমে আসে বিশৃঙ্খলা। এমন পরিস্থিতিতে অভিভাবকদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আনা এবং সন্তানদের সহচার্যে থাকা একান্ত প্রয়োজন। অন্যথায় ছেলে-মেয়ে নষ্ট হয়ে যায় অর্থাৎ অভিভাবকদের এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে। কেননা বয়ঃসন্ধিতে ছেলে-মেয়েদের আচরণিক, শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন সম্পর্কে নিকটজনের সুস্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে এবং সহযোগিতামূলক আচরণ করতে হবে।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে এটা সুস্পষ্ট যে, মিতার মায়ের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন যুক্তিযুক্ত হয়েছে। বয়ঃসন্ধিকালে নিকটজনের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করা একান্ত অপরিহার্য এবং করণীয়।

প্রশ্ন-২ ঃ

প্রোটোভাইরাস

ভাইরাস

ব্যাকটেরিয়া

প্রোটোজোয়া

বহুকোষী জীব

উদ্ভিদ        প্রাণী
ক. জৈব বিবর্তন কী?
খ. ক্লোমোজোমকে বংশগতির ধারক ও বাহক বলা হয় কেন?
গ. উদ্দিপকে দেখানো প্রক্রিয়াটি ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে দেখানো প্রক্রিয়াটির সপক্ষে সংযোগকারী জীব সম্পর্কিত প্রমাণটি উপস্থাপন কর।


২ নং প্রশ্নের উত্তর

ক. সময়ের সাথে কোনো জীবের পরিবর্তনের ফলে যখন নতুন কোনো প্রজাতি সৃষ্টি হয় তখন তাকে জৈব বিবর্তন বলে।
খ. নিউক্লিয়াসের মধ্যে লম্বা সুতার মতো কতকগুলো বস্তু দেখা যায় সেগুলোই হলো ক্লোমোজোম। অসংখ্য অতি সূক্ষ্ম জীন যা বংশাণু নিয়ে ক্লোমোজোম তৈরি। জীবনের রাসায়নিক গঠন উপাদান হচ্ছে ডি এন এ (উঘঅ)। এটি ক্লোমোজোম ধারণ করে থাকে। ক্লোমোজোমে অবস্থিত জীনের মাধ্যমে বাবা-মা থেকে জীবের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য, যেমনÑ দেহের আকার, আয়তন, রং লিঙ্গ ইত্যাদি সন্তা-সন্তুতিতে পরিবাহিত হয়। এ কারণেই ক্লোমোজোমকে বংশগতির ধারক ও বাহক বলা হয়।
গ. উদ্দীপকে দেখানো প্রক্রিয়াটি হলো জৈব বিবর্তনের। নিচে প্রক্রিয়াটি বর্ণনা করা হলোÑ
প্রোটিন ও নিউক্লিক এসিড সহযোগি সৃষ্টি হয় নিউক্লিওপ্রোটিন। এই নিউক্লিওপ্রোটিন থেকেই সৃষ্ট হয় প্রোটোভাইরাস এবং তা থেকে সৃষ্টি হয় ভাইরাস। ভাইরাস এমন একটা অবস্থা নির্দেশ করে যা জীব ও জড়ের মধ্যবর্তী অবস্থা। এরপর উদ্ভব হয় ব্যাকটেরিয়া এভং আরও পরে সৃষ্টি হয় প্রোটোজোয়া। ব্যাকটেরিয়ার নিউক্লিয়াস আদি প্রকৃতির, তাই্ এদের আদি কোষ বলা হয়। পরে প্রোটোজোয়ানদের দেহে দেখা গেল সুগঠিত নিউক্লিয়াস। কিছু এককোষী জীবদেহে সৃষ্টি হল ক্লোরোফিল, ফলে একদিকে যেমন খাদ্য সংশ্লেষণ সম্ভব হলো তেমনি পরিবেশে অক্সিজেনের সৃষ্টি হলো। তখন সবাত শ্বসনকারী জীবদেহ সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকল। উদ্ভব হলো এককোষী থেকে বহুকোষী জীব। এরপর একদিকে উদ্ভিদ ও অপরদিকে প্রাণী- দুটি ধারায় জীবের অভিব্যক্তিক বিবর্তন শুরু হলো।
ঘ. উদ্দীপকে দেখানো প্রক্রিয়াটি হল বিবর্তনের প্রক্রিয়া। জীবের বিবর্তনের স্বপক্ষে বেশ কিছু যুক্তি বা প্রমাণ রয়েছে। এগুলোর মধ্যে সমসংস্থ অঙ্গভিত্তিক প্রমাণটি নিচে উপস্থাপন করা হলোÑ
পাখির ডানা, বাদুড়ের ডানা, তিমির ফ্লিাপার, সিলের অগ্রপদ, ঘোড়ার অগ্রপদ, মানুষের হাত ইত্যাদি সমসংস্থ অঙ্গ। আপাতদৃষ্টিতে এদের আকৃতিগত পার্থক্য দেখা গেলেও আভ্যন্তরীণ কাঠামো পরীক্ষা করলে দেখা যায় যে এদের অস্থিবিন্যাসের মৌলিক প্রকৃতি একই ধরনের। অর্থাৎ হিউমেরাস, রেডিও-আলনা, কার্পাল, মেটাকার্পাল, ফ্যালাঞ্জেস অস্থিগুলো উপর থেকে নিচের দিকে পরপর সজ্জিত রয়েছে। বহিরাকৃতিতে যে বৈসাদৃশ্য রয়েছে তা বিভিন্ন পরিবেশের সাথে অভিযোজিত হওয়ার জন্যই ঘটেছে। পাখি ও বাদুড়ের অগ্রপদ ওড়ার জন্য, তিমির ফ্লিপার সাঁতারের জন্য, ঘোড়ার অগ্রপদ দৌড়ানো জন্য ও মানুষের অগ্রপদ কোনো জিনিস ধরা ও অন্যান্য সৃজনশীল কাজের জন্য পরিবর্তিত হয়েছে। সমসংস্থ অঙ্গগুলো থেকে বোঝা যায় যে, সংশ্লিষ্ট অঙ্গ তথা জীবগুলো উৎপত্তিগতভাবে এক। যদিও সময়ের সঙ্গে বিভিন্ন প্রাকৃতিক পরিবেশে অভিযোজিত হওয়ার ফলে বর্তমানে তাদের গঠন বিভিন্নভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। তাই বিবর্তনবিদগণ মনে করেন যে সমসংস্থ অঙ্গবিশিষ্ট জীবগুলোর উৎপত্তি, একই পূর্বপুরুষ হতে ঘটেছে এই তথ্য জৈব বিবর্তনকে সমর্থন করে।

প্রশ্ন-৩ ঃ পৃথিবী সৃষ্টি হয়েছিলো প্রায় ২৬০ কোটি বছর পূর্বে। তখন পৃথিবীতে কোন প্রাণের অস্তিত্ব ছিলো না। সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে প্রাণের উদ্ভব হয়েছে এবং বর্তমান অবস্থায় উপনীত হয়েছে। এটি বিবর্তন নামে পরিচিত। বিবর্তন এখনও চলমান।

ক. জীবশ্ম সর্বপ্রথম কে আবিষ্কার করেন?
খ. বিবর্তন ও জৈব বিবর্তন বলতে কী বুঝ?
গ. উদ্দীপকে আলোচিত ঘটনাটি ছকের সাহায্যে দেখাও।
ঘ. রাসায়নিক বিবর্তন ছাড়া উদ্দীপকের ঘটনাটি কখনোই হতো না। Ñউক্তিটির স্বপক্ষে যুক্তি দাও।


৩ নং প্রশ্নের উত্তর

ক. বিজ্ঞানী জেনোফেন (ঢবহড়ঢ়যধহব) সর্বপ্রথম জীবাশ্ম আবিষ্কার করেন।
খ. যে ধীর, অবিরাম ও গতিশীল পরিবর্তন দ্বারা কোন সরলতার উদবংশীয় জীবের পরিবর্তন দ্বারা জটিল ও উন্নততর প্রজাতির বা জীবের উদ্ভব ঘটে তখন তাকে বিবর্তন বলে। বিবর্তন একটি ধীর ও গতিশীল প্রক্রিয়া।
অন্যদিকে, সময়ের সাথে যখন কোন জীবের পরিবর্তনের ফলে নতুন কোন প্রজাতির সৃষ্টি হয় তখন তাকে জৈব বিবর্তন বলে।
গ. ছকের সাহায্যে ধারনাকৃত বিবর্তনের ধাপগুলো দেখান হলো :

কার্বন ডাই-অক্সাইড, নাইট্রোজেন, হাইড্রোজেন

মিথেন, অ্যামোনিয়া, জলীয়বাষ্প

অ্যামাইনো এসিড

নিউক্লিক অ্যাসিড, প্রোটিন

নিউক্লিওপ্রোটিন

প্রোটোভাইরাস

ভাইরাস

ব্যাকটেরিয়া

প্রোটোজোয়া

প্রোটোজোয়া

বহুকোষী জীব

উদ্ভিদ         প্রাণী

ঘ. পৃথিবীতে কিভাবে জীব সৃষ্টি হয়েছিল সে সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের অনুমান, প্রায় ২৬০ কোনটি বছর আঘে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে প্রচুর পরিমাণে মিথেন, অ্যামোনিয়া, হাইড্রোজেন সালফাইড এবং জলীয় বাষ্প, নাইট্রোজেন ও কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস ছিল; কিন্তু অক্সিজেন গ্যাস ছিল না। অহরহ আগ্নেয়গিরির আগ্লুৎপাতের ফলে বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি ঘটত এবং বজ্রপাতের ফলে ও অতিবেগুনী রশ্মির প্রভাবে এই যৌগ পদার্থগুলো মিলিত হয়ে অ্যামাইনো এসিড এবং নিউক্লিক এসিড উৎপন্ন করে। পরে অ্যামাইনো এসিড এবং নিউক্লিক এসিড মিলিত হওয়ায় নিউক্লিওপ্রোটিন অণুর সৃষ্টি হয়। নিউক্লিওপ্রোটিন অণুগুলো ক্রমে নিজেদের প্রতিরূপ- গঠনের (ৎবঢ়ষরপধঃরড়হ) ক্ষমতা অর্জন করে জীবনের সূত্রপাত ঘটায়। পৃথিবীর উৎপত্তি ও জীবনের উৎপত্তির ঘটনা প্রবাহকে বলে রাসায়নিক বিবর্তন বা অভিব্যক্তি।
সুতরাং, উপরোক্ত রাসায়নিক বিবর্তন ছাড়া পৃথিবীতে জীবনের উৎপত্তি কখনোই সম্ভব হতো না।

প্রশ্ন-৪ ঃ শাহানা ৭ম শ্রেণিতে পড়ে। প্রতি মাসেই স্বাভাবিকভাবে তার কিছুটা রক্ত ক্ষরণ হয়। রক্ত ক্ষরণের পর কিছুদিন সে খুবই দুর্বলবোধ করে।

ক. অটোজম কী?
খ. টেস্টটিউব বেবি বলতে কী বুঝায়?
গ. শাহানার এ ধরনের দৈহিক ঘটনার কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. এ অবস্থায় শাহানার দৈনিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখা জরুরি কেন?


৪নং প্রশ্নের উত্তর

ক. একজোড়া লিঙ্গ নির্ধারণকারী ক্রোমোজোম ছাড়া বাকী ২২ জোড়া ক্রোমোজোমকে অটোজম বলে।
খ. কৃত্রিম উপায়ে দেহের বাইরে শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর মিলন ঘটিয়ে প্রাথমিক ভ্রুণ সৃষ্টি করে তাকে স্ত্রীলোকের জরায়ুতে প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে শিশুর জন্ম হলে তাকে টেস্টটিউব বেবি বলা হয়। পর্যায়ক্রমে কতকগুলো পদ্ধতি অনুসরণ করে ইনভিট্টো ফার্টিলাইজেশন ঘটিয়ে টেস্টটিউব বেবির জন্ম দেওয়া হ।
গ. শাহানার বয়স অনুযায়ী তার এখন বয়ঃসন্ধিকাল চলছে। এ সময়ে নানা দৈহিক পরিবর্তন ঘটে। এরুপ দৈহিক পরিবর্তনের জন্য প্রধানত দুটি হরমোন দায়ী। এ দুটোকে বলা হয় ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টেরণ। এ হরমোনের কারণে মেয়েদের ঋতু¯্রাব বা মাসিক শুরু হ। সাধারণত ১০-১৭ বছর বয়সের মধ্যে মাসিক শুরু হয়। এছাড়াও সকল হরমোনের প্রভাবে কণ্ঠস্বরের পরিবর্তন, দ্রুত দৈহিক বৃদ্ধিসহ অন্যান্য পরিবর্তন সাধিত হয়। শাহানার যেহেতু বয়ঃসন্ধিকাল চলছে তাই স্বাভাবিক নিয়মেই তার এ দৈহিক পরিবর্তন ঘটছে।
ঘ. বয়ঃসন্ধিকালে শাহানার মতো অবস্থায় দৈহিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখা অত্যন্ত জরুরি। এ সময় যেহেতু শরীর থেকে অনেক রক্ত বেরিয়ে যায় তাই ক্ষয় পূরণের জন্য মাছ, মাংস, সবজি এবং ফলমূল বেশি পরিমাণে খাওয়া দরকার। এ সময় তলপেটে ব্যাথা, মাথা ব্যাথা ও কোমরে ব্যাথা হতে পারে। ব্যাথা তীব্র হলে ডাক্তারের পরামর্শে ওষুধ খেতে হবে। এ সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন না থাকলে বিভিন্ন জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। দৈহিক স্বাস্থ্য এ সময় ঠিক না থাকলে মেয়েরা নানা রকম অপুষ্টিজনিত রোগে ভুগে। এ সময়ে সঠিক পুষ্টিমান সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণের মাধ্যমে দৈহিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখলে দেহের বৃদ্ধি যেমন ঠিকমতো হবে, তেমনি মানসিক বিকাশেও বাধাগ্রস্থ হবে না। তাই এ সময় শরীর স্বাস্থ্য ঠিক রাখা জরুরি।

প্রশ্ন-৫ ঃ বিবর্তনের আলোচনায় মূলত দুটি বিষয়কে প্রতিষ্ঠিত করার প্রয়াস দেখা যায়; একটি হলো বিবর্তন যে হয়েছে তার প্রমাণ অপরটি হলো বিবর্তনের পদ্ধতি অর্থাৎ, কীভাবে জীবজগতে বিবর্তন এসেছে। সৃষ্টির পর থেকে কোটি কোটি বছর ধরে জীবজগতের বিবর্তন ঘটেছে।

ক. অভিব্যক্তি কী?
খ. জীবন্ত জীবাশ্ম বলতে কী বুঝ? উদাহরণসহ ব্যাখ্যা কর।
গ. বিবর্তন সম্পর্কে ডারউনের মতবাদের সাধারণ সত্যতাগুলো উপস্থাপন কর।
ঘ. বিবর্তন বা অভিব্যক্তির উপর ল্যামার্কের তত্ত্ব বিশ্লেষণ কর।

৫ নং প্রশ্নের উত্তর

ক. পৃথিবীর উৎপত্তি ও জীবনের উৎপত্তির ঘটনা প্রবাহকে অবিব্যক্তি বলে।
খ. জীবন্ত জীবাশ্ম : কতগুলো জীব সুদূর অতীতে উৎপত্তি লাভ করেও কোনোরকম পরিবর্তন ছাড়াই এখনো পৃথিবীতে বেঁচে আছে, অথচ তাদের সমগোত্রীয় এবং সমসাময়িক জীবদের বিলুপ্তি ঘটেছে। এই সকল জীবদের জীবন্ত জীবাশ্ম বলে। লিমুলাস বা রাজকাঁকড়া নামক সন্ধিপদ প্রাণী, স্ফোনোডন নামক সরীসৃপ প্রাণী, প্লাটিপাস নামক স্তন্যপায়ী প্রাণী ইত্যাদি এবং ইকইজিটাম, নিটাম ও গিঙ্কো বাইলোবা নামের উদ্ভিদগুলো জীবন্ত জীবাশ্মের উদাহরণ।
গ. ডারউনের মতবাদÑ
একটি জীব জ্যামিতিক ও গাণিতিক হারে বংশবৃদ্ধি ঘটায়। এজন্য তাদের সীমিত খাদ্য ও বাসস্থানের জন্য প্রতিযোগিতা করতে হয়। বিজ্ঞানী ডারউইনের মতো এটি অস্তিত্বের জন্য সংগ্রাম এবং এটি তিনটি পর্যায়ে সম্পন্ন নিচে তা ব্যাখ্যা করা হলো Ñ
  আন্তঃপ্রজাতিক সংগ্রাম : উদাহরণস্বরূপ বলা যায় ব্যাঙ একদিকে কীটপতঙ্গ ভক্ষণ করে, অন্যদিকে তেমনি ব্যাঙেরা সাপ কর্তৃক ভক্ষিত হয়। আবার, ময়ুর কর্তৃক ব্যাঙ ও সাপ উভয়েই ভক্ষিত হয়Ñ এভাবে নিতান্ত জৈবিক কারণেই বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে খাদ্য-খাদক সম্পর্কযুক্ত একটি নিষ্ঠুর জীবনসংগ্রাম গড়ে ওঠে।
  অন্তঃপ্রজাতিক সংগ্রাম : একই প্রজাতির বিভিন্ন সদস্যদের খাদ্য ও বাসস্থান একই রকমের হওয়ায়, এদের সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে নিজেদের মধ্যেই প্রতিযোগিতা শুরু হয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে একটি দ্বীপে তৃণভোজী প্রাণীর সংখ্যা অধিক হারে বৃদ্ধি পেলে খাদ্য ও বাসস্থান সীমিত থাকায় তারা নিজেরা নিজেদের মধ্যেই সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়। সবল প্রাণীগুলো দুর্বল প্রাণীদের প্রতিহত করে গ্রাসচ্ছাদন করে। ফলে দুর্বল প্রাণীগুলো কিছুদিনের মধ্যেই অনাহারে মরা পড়ে।
  পরিবেশের সাথে সংগ্রাম : বন্যা, খরা, ঝড়-ঝঞ্ঝা, প্রচন্ড বালিঝড়, ভূমিকম্প, অগ্ল্যুৎপাত প্রভৃতি প্রতিকূল পরিবেশ জীবের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত করে। সুতরাং জীবকে তার অস্তিত্ব বজায় রাখার জন্য প্রতিনিয়ত এসব প্রতিকূল পরিবেশের সাথে সংগ্রাম করতে হয়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে, উত্তর ও মধ্য আমেররিকার কোয়েল পাখি প্রচন্ড ও তুষারপাতের ফলেই বিলুপ্ত হয়েছে।
ঘ. ল্যামার্কবাদের প্রতিপাদ্যগুলো নি¤েœ আলোচনা করা হলোÑ
  ব্যবহার ও অব্যবহারের সূত্র : ল্যামার্কের মতে, জীবের প্রয়োজনে জীবদেহে কোনো নতুন অঙ্গের উৎপত্তি অথবা কোনো পুরোনো অঙ্গের অবলুপ্তি ঘটতে পারে। তাঁর মতে, যদি কোনো জীবের কোনো অঙ্গ ধারাবাহিতকভাবে ক্রমাগত ব্যবহৃত হয়, তবে সেই অঙ্গ পরিবেশের প্রয়োজনীয়তার জন্য ধীরে ধীরে সবল ও সুগঠিত হবে। অন্যদিকে, জীবের কোনো অঙ্গ পরিবেশের অপ্রয়োজনীয় হলে ঐ অঙ্গের আর ব্যবহার থাকে নাÑ সুতরা ক্রমাগত অব্যবহারের ফলে অঙ্গটি নিস্ক্রিয় অঙ্গে পরিণত হবে এবং অবশেষে বিলুপ্ত হয়ে যাবে। ল্যামার্কের মতে, অঙ্গের ব্যবহার ও অব্যবহার জীবদেহে পরিবর্তন সূচিত করে, যা জীবের বংশপরম্পরায় অর্জিত বৈশিষ্ট্য।
  পরিবেশের প্রভাব : সদা পরিবর্তনশীল পরিবেশে জীব নিজেকে উপযুক্তভাবে মানিয়ে নেওয়ার জন্য সবসময় চেষ্টা করে। এটি জীবের একটি সহজাত প্রবৃত্তি। স্বাভাবিকভাবে পরিবর্তনশীল পরিবেশে নিজেকে অভিযোজিত করতে জীবদেহে নানা রকমের পরিবর্তন দেখা যায়। ল্যামার্কের মতে, পরিবেশের পরিবর্তন ঘটলে জীবের স্বভাব এবং দৈহিক পরিবর্তন ঘটে। এটাও একটি জীবের অর্জিত বৈশিষ্ট্য।
  অর্জিত বৈশিষ্টের বংশানুসরণ ও নতুন প্রজাতির উৎপত্তি :  ল্যামার্কের মতে, কোনো জীবের জীবনকালে যেসব বৈশিষ্ট্য অর্জিত হয়, সেসব বৈশিষ্ট্য এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে সঞ্চারিত হয় অর্থাৎ, অর্জিত বৈশিষ্ট্যের বংশানুসরণ ঘটে। ল্যামার্কের তত্ত্ব অনুযায়ী, অর্জিত বৈশিষ্টের বংশানুসরণ ঘটে। ল্যামার্কের তত্ত্ব অনুযায়ী, অর্জিত বৈশিষ্টের বংশানুসরণের জন্ম এবং প্রতিটি প্রজন্মে নতুন নতুন বৈশিষ্ট্য অর্জিত হওয়ায় ধীরে ধীরে একটি প্রজাতি থেকে অপর একটি নতুন প্রজাতির সৃষ্টি হয়।

প্রশ্ন-৬ ঃ আমাদের দেশে বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে কন্যা সন্তান হলে এখনও মাকেই দোষারোপ করা হয়। এর কারণ অজ্ঞতা ও কুসংস্কার। বরং এই লিঙ্গ নির্ধারণের অসমতার জন্য পুরুষই দায়ী। পূর্র্বে স্বামী-স্ত্র সন্তান না হলে সন্তান লাভের  কোন উপায় ছিল না। বর্তমান বিজ্ঞানীরা এই সমস্যা সমাধানের উপায়ও বের করেছে।

ক. কখন পৃথিবীতে প্রাণের উৎপত্তি হয়?
খ. বন্ধ্যা স্বামী-স্ত্রীর কীভাবে সন্তান লাভ সম্ভব।
গ. সন্তান ছেলে বা মেয়ে হবে তা সেক্স ক্রোমোজোম দ্বারা নির্ধারিত হয়Ñ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. কন্যা সন্তান জন্মদান মা নয় বরং বাবাই দায়ী-উক্তিটি বিশ্লেষণ কর।


৬ নং প্রশ্নের উত্তর

ক. প্রায় ২৬০ কোটি বছর আগে পৃথিবীতে প্রাণের উৎপত্তি হয়।
খ. টেস্ট টিউব পদ্ধতির মাধ্যমে বন্ধ্যা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সন্তান উৎপন্ন সম্ভব। উক্ত পদ্ধতির মাধ্যমে কৃত্রিম উপায়ে দেহের বাইরে ডিম্বানু ও শুক্রানুর মিলন ঘটিয়ে প্রাথমিক ভ্রুন সৃষ্টি করে তা বন্ধ্যা স্ত্রী জরায়ুতে প্রতিস্থাপন করে সন্তান উৎপাদন সম্ভব।
গ. সন্তান ছেলে হবে না মেয়ে হবে তা সেক্স ক্লোমোজোম দ্বারা নির্ধারিত হয়। আমরা জানি, পুরুষের লিঙ্গ নির্ধারিত ক্লোমোজোম দুটির মধ্যে ঢ ক্লোমোজোম অপরটি ণ ক্লোমোজোম। যৌন জননের সময় যদি পুরুষ থেকে ঢ ক্লোমোজোমবাহী শুক্রানু ডিম্বানুকে নিষিক্ত করে তবে নিষিদ্ধ ডিমের ক্লোমোজোমবাহী শুক্রানু ডিম্বানুকে নিষিক্ত করে তবে নিষিদ্ধ ডিমের ক্লোমোজোম ঢঢ অর্থাৎ মেয়ে সন্তানের জন্ম হবে। আবার পুরুষ থেকে আসা ণ  ক্লোমোজোমবাহী শুক্রানু ডিম্বানুকে নিষিক্ত করে তবে নিষিক্ত ডিমের ক্লোমোজোম হবে ঢণ। তাই সন্তানের লিঙ্গ নির্ধারনে সেক্স ক্লোমোজোম দায়ী।
ঘ. আমাদের দেশে বার বার কন্যা সন্তান প্রসব করার জন্য মাকে দায়ী করা হয়। অজ্ঞতাবশত মানুষ মায়েদের এ অপবাদ দেন। আসলে কাঙ্খিত লিঙ্গের শিশু জন্ম দেওয়ার ব্যাপারে মায়ের কোনো ভূমিকা নেই। কারণ মাতৃজনন কোষে সব সময় কেবল ঢ ক্রোমোজোম বহনকারী ডিম্বাণু তৈরি হয়। অপরদিকে, পিতৃ জনন কোষে ঢ ও ণ  ক্রোমোজোম বহনকারী শুক্রাণু তৈরি হয়। কোন ধরনের শুক্রাণু ঢ বহনকারী ডিম্বাণু দ্বারা নিষিক্ত হবে তার ওপর নির্ভর করে ভবিষ্যতে যে সন্তানটি জন্মাবে সে ছেলে না মেয়ে হবে। যদি ডিম্বাণুটি ণ ক্রোমোজোম বহনকারী শুক্রাণু দ্বারা নিষিক্ত হয় তবে সন্তানের কোষে ঢণ ক্লোমোজোম থাকবে। ফলে ভূমিষ্ঠ হবে পুত্র সন্তান অর্থাৎ ছেলে। তাই কন্যা সন্তান হওয়ার জন্য মা নয় বরং বাবাই দায়ী।

প্রশ্ন-৭ ঃ জাহানারা বেগম ধানমন্ডিতে একটি ফ্ল্যাট বাসায় দুই সন্তান বীথি ও ইতি নিয়ে থাকেন। তিনি ১৫ ও ১৩ বছর বয়সী সন্তানদের খাবার-দাবারের ব্যাপারে খুবই দায়িত্বশীল। তিনি স্কুল টিফিনের বাক্সে প্রচুর খাবার দিয়ে দেন এবং বাসায় নিয়মিত মাছ ও মাংস রান্না করেন। তিনি প্রায়ই সন্তানদের নিয়ে একত্রে বসে টিভি দেখেন এবং সুযোগ পেলে পার্কে ঘুরতে যান।

ক. নিউক্লিও প্রোটিন কাকে বলে?
খ. জীবন্ত জীবাশ্ম বলতে কী বোঝায়?
গ. জাহানারা বেগম কীভাবে তার দুই সন্তানের মানসিক চাহিদা পূরণ করতে পারেন? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. তুমি কি মনে মর জাহানারা বেগম মা হিসেবে যথেষ্ট সচেতন। যুক্তি দাও।

৭নং প্রশ্নের উত্তর

ক. নিউক্লিয়াসের অভ্যন্তরে অবস্থিত প্রোটিন ও নিউক্লিক এসিডকে নিউক্লিওপ্রোটিন বলে।
খ. কতগুলো জীব সুদূর অতীতে উৎপত্তি লাভ করেও কোন রকম পরিবর্তন ছাড়াই এখনো পৃথিবীতে বেঁচে আছে অথচ তাদের সমগোত্রীয় এবং সমসাময়িক জীবদের বিলুপ্তি ঘটেছে। এই সকল জীবদের জীবন্ত জীবাশ্ম বলে।
গ. জাহানারা বেগমের দুই সন্তান বীথি ও ইতি এবং তাদের বয়স যথাক্রমে ১৩ ও ১৫ বছর। এ বয়সটি তাদের জীবনের বয়ঃসন্ধিকাল। এ সময়ে তাদের শরীরে বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন দেখা যায়। যেমন : ঋতু¯্রাব শুরু হওয়া, কণ্ঠস্বরের পরিবর্তন, বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের আকার বৃদ্ধিসহ নানা পরিবর্তন ঘটে। এ সময় জাহানারা বেগম তার মেয়েদের সাথে এরূপ শারীরিক পরিবর্তন সম্পর্কে খোলা মেলা আলাপ করে বুঝাতে পারেন এটা একটি স্বাভাবিক ঘটনা। আরও বুঝাতে পারে এরূপ পরিবর্তনের সাথে নিজেদের খাপ-খাওয়াতে হবে এবং মনে আলোচনা করলে এসবের ক্ষেত্রে কোনো ভয় থাকবে না। এ সময় দৈহিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য পুষ্টিকর খাবার প্রদান করাও জরুরি। এভাবে জাহানারা বেগম তার মেয়েদের মানসিক চাহিদা পূরণ করতে পারে।
জাহানারা বেগম তার মেয়েদের সাথে এরূপ শারীরিক পরিবর্তন সম্পর্কে খোলা মেলা আলাপ করে বুঝতে পারেন এরূপ পরিবর্তনের সাথে নিজেদের খাপ খাওয়াতে হবে এবং এসবের ক্ষেত্রে কোনো ভয় পাওয়ার কারণ নেই।
ঘ. বয়ঃসন্ধিকাল মানুষের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এ সময় অনেকে একা থাকতে পছন্দ করে এবং অস্বাভাবিক আচরণ করতে পারে। এ বয়সে তাদের যে মানসিক পরিবর্তন ঘটে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সে পরিবর্তন বিষয়গুলো মনে রেখে তাদের সাথে বন্ধু সুলভ ও সহানুভূতিশীল আচরণ করা উচিত। জাহানারা বেগম এ বিষয়ে খুব সচেতন। সে মেয়েদের সাথে খোলামেলা আলোচনা করেন। তাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ সময় দেন, পার্কে ঘুরতে নিয়ে যান, একত্রে বসে টিভি দেখেন যা বয়ঃসন্ধিকালে খুবই প্রয়োজন। এছাড়া ভালো গল্পের বই পড়া, সাথীদের সাথে খেলাধূলা করলে মানসিক প্রফুল্লতা বজায় থাকে। বয়ঃসন্ধিকালের সময় ছেলে-মেয়েদের প্রয়োজনীয় মানসিক সহায়তা ও পরামর্শ প্রদান করলে তারা সুস্থ্য সবল মানুষ হিসেবে বেড়ে উঠে সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়তে সক্ষম হয়।
জাহানারা বেগম তার সন্তানদের সাথে উপরে বর্ণিত কাজগুলো করেন এবং এ বিষয়ে সে যথেষ্ট সজাগ। তাই বলা যায় জাহানারা বেগম একজন সচেতন মা।

প্রশ্ন-৮ ঃ নিচের ছকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:

বাল্যকাল      ক       যৌবনকাল   

ক. বাল্যকালের বয়সসীমা কত?
খ. বয়ঃসন্ধিকালের পরিবর্তনের জন্য দায়ী হরমমোনগুলো কি কি?
গ. ‘ক’ অবস্থায় সংঘটিত পরিবর্তনসমূহ আলোচনা কর।
ঘ. প্রক্রিয়াটি একটি শিশুকে পূর্ণাঙ্গ ও প্রাপ্তবয়ষ্ক মানুষে পরিণত করেÑ উক্তিটি বিশ্লেষণ কর।

৮ নং প্রশ্নের উত্তর

ক. ছয় থেকে দশ বছর পর্যন্ত বাল্যকাল।
খ. মেয়েদের বয়ঃস্কাল পরিবর্তনের জন্য দায়ী হরমোন হলো Ñ
  ইস্ট্রাজেন
  প্রজেস্টেরণ
ছেলেদের বয়ঃসন্ধিকাল পরিবর্তনের জন্য দায়ী হরমোন হলো-
  টেস্টোস্টেরন
গ. উদ্দীপকে প্রদর্শিত ‘ক’ অবস্থাটি হলো বয়ঃসন্ধিকাল। বংঃসন্ধিকালে শারীরিক, মানসিক ও আচরণগত পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়। নিচে এ পরিবর্তনসমূহ আলোচনা করা হলো :
শারীরিক পরিবর্তন :
  দ্রুত ওজন বৃদ্ধি ও লম্ব হয়ে ওঠে।
  শরীরে দৃঢ়তা আসা ও গঠন প্রাপ্ত বয়স্কদের মতো হয়ে ওঠা।
  শরীরের বিভিন্ন অংশ লোম গজানো।
  ছেলেদের বীর্যপাত হওয়া।
  মেয়েদের ঋতু¯্রাব শুরু হওয়া।
  মেয়েদের কোমরের হাড় মোটা হওয়া।
ঘ. একটি শিশু যখন ছয় বছর বয়সে পদার্পন করে তখন থেকে দশ বছর বয়স পর্যন্ত সময় বাল্যকাল হিসেবে পরিচিত। দশ বছর বয়স থেকে উনিশ বছর বয়সের মধ্যে একজন মানুষের দৈহিক, মানসিক ও আচরণগত পরিবর্তন হয় এবং এর মধ্যেই সে যৌবনকালে পদার্পণ করে। মানুষের জীবনের এ সময়কে বয়ঃসন্ধিকাল বলে। বয়ঃসন্ধিকালে যেসব পরিবর্তন ঘটে তার জন্য দায়ী বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক পদার্থ যেগুলোকে হরমোন বলা হয়। হরমোন শরীরের ভিতরে স্বাভাবিক শারীরিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরি হয়। ছেলে ও মেয়েদের শরীরে এ হরমোন এক রকম নয়। এ কারণে এদের শরীরে ও মনে যে পরিবর্তন হয় তাও আলাদা। মেয়েদের শরীরে বিভিন্ন পরিবর্তনের জন্য দায়ী প্রধানত দুটি হরমোন। এ দুটিকে বলা হয় ইস্ট্রোজেন ও প্রােজস্টেরন। এ হরমোনের প্রভাবে মেয়েদের ঋতু¯্রাব ও মাসিক শুরু হয়। বয়ঃসন্ধিকালে মেয়েদের শরীরে বিভিন্ন পরিবর্তনের জন্য দায়ী হরমোন হলো টেস্টোস্টেরন। এর ফলে ছেলেদের শরীরে শুক্রাণু তৈরি হয় ও বীর্যপাত শুরু হয়। শারীরিক পরিবর্তনের পাশাপাশি এ সময় মানসিক পরিবর্তনও হয়। ছেলে ও মেয়েরা এ বয়সে কল্পনা প্রবণ হয়, আবেগ দ্বারা চালিত হয়। পরিপাটিরূপে নিজেকে সাজিয়ে রাখতে চায়। এ সময়ে ছেলে-মেয়েরা পরস্পরের প্রতি আকর্ষণবোধ করে এভাবেই ধীরে ধীরে কিশোর-কিশোরীরা প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষে পরিণত হতে শুরু করে।
কাজেই বলা যায় সমগ্র প্রক্রিয়া ‘বাল্যবস্থা হতে যৌবনকাল’ একটি শিশুকে পূর্ণাঙ্গ ও প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষে পরিণত করে এবং উক্তিটি যথাযর্থ।

প্রশ্ন-৯ ঃ মিসেস শান্তা সন্তান ধারণে অক্ষম হওয়ায় বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে গেলেন। ডাক্তার এ সমস্যা সমাধানের জন্য একটি বিশেষ পদ্ধতিতে তার ডিম্বানুর পরিস্ফুটন ঘটান। অন্যদিকে মিসেস শান্তার চাচাত বোন মিতা পুত্র সন্তানের আশায় এখন পাঁচ কন্যা সন্তানের জননী।

ক. নিউক্লিও প্রোটিন কাকে বলে?
খ. জীবন্ত জীবাশ্ম বলতে কী বুঝ?
গ. মিসেস শান্তার ক্ষেত্রে ডাক্তার কোন বিশেষ পদ্ধতি অবলম্বন করলেন? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. মিতার একই রকম সন্তান হওয়ার বিষয়টিকে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ কর।


৯ নং প্রশ্নের উত্তর

ক. নিউক্লিয়াসের অভ্যন্তরে অবস্থিত প্রোটিন ও নিউক্লিক এসিডকে নিউক্লিওপ্রোটিন বলে।
খ. কতগুলো জীব সুদূর অতীতে উৎপত্তি লাভ করেও কোন রকম পরিবর্তন ছাড়াই এখনো পৃথিবীতে বেঁচে আছে অথচ তাদের সমগ্রোত্রীয় এবং সমসাময়িক জীবদের বিলুপ্তি ঘটেছে। এই সকল জীবদের জীবন্ত জীবাশ্ম বলে।
গ. মিসেস শান্তার ব্যাপারে ডাক্তার টেস্টটিউব বেবি জন্মদানের পদ্ধতি অবলম্বন করেন। যে সকল নারী সন্তান ধারণে অক্ষম সে সকল নারীদের জন্য কৃত্রিমভাবে দেহের বাইরে শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর মিলন ঘটিয়ে প্রাথমিক ভ্রুণ সৃষ্টি করে তাকে স্ত্রী লোকের জরায়ুতে প্রতিস্থাপের মাধ্যমে শিশুর জন্মদান করা হয়।
টেস্টটিউব বেবি জন্মানোর জন্য সক্ষম দম্পতি থেকে ডিম্বাণু ও শুক্রাণু সংগ্রহ করে বিশেষ ধরনের পালন মাধ্যমে এদের মিলন ঘটানো হয়।
মিসেস শান্তা যেহেতু সন্তান ধারণে অক্ষম তাই ডাক্তার উপরোক্ত পদ্ধতি অবলম্বন করে টেস্ট টিউব বেবির জন্মদান পদ্ধতিই অবলম্বন করেন।
ঘ. মানবদেহের প্রতি কোষে ২৩ জোড়া ক্রোমোজোম থাকে। এই ২৩ জোড়ার মধ্যে ২২ জোড়া একই রকম এদেরকে অটোজোম বলে। অবশিষ্ট ১ জোড়া ক্রোমোজোমকে সেক্স বা লিঙ্গ নির্ধারক ক্রোমোজোম বলে।
এই ২৩ জোড়া ক্রোমোজোমের মধ্যে পুরুষের ২২ জোড়াকে অঅ  দ্বারা ও ১ জোড়াকে ঢণ দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। মহিলাদের ক্ষেত্রে সেক্স ক্রোমোজোম ঢঢ। যখন পুরুষের সেক্স ক্রোমোজোমের ঢ  এবং স্ত্রীর সেক্স ক্রোমোজোম ঢ এর সঙ্গে মিলিত হয় তখন কন্যা সন্তান জন্মলাভ করে। আর যখন পুরুষের ণ  ক্রোমোজোম স্ত্রীর ঢ ক্রোমোজোমের সঙ্গে মিলিত হয় তখন পুত্র সন্তান জন্ম লাভ করে।
মিতার সন্তান জন্মদানের প্রতিক্ষেত্রে পুরুষের সেক্স ক্রোমোজোম থেকে ঢ  ক্রোমোজোম স্ত্রীর সেক্স ক্রোমোজোমের ঢ-এর সঙ্গে মিলিত হওয়াতে মিতার ৫টি কন্যা সন্তান জন্ম লাভ করেছে। এক্ষেত্রে মিতার কোন ভূমিকা নেই।

প্রশ্ন-১০ ঃ ইমতিয়াজ গত শীতের ছুটিতে সেন্টমার্টিন বেড়াতে যায়। সেখানে সমুদ্র সৈকতে সে একটি সন্ধিপদ প্রাণি দেখতে পায়। কাঁটাযুক্ত প্রাণিটির দেহের ওপর শক্ত আবরণ বিদ্যমান। তার বিজ্ঞান শিক্ষক ক্লাসে সেই প্রাণিটিকে জীবন্ত জীবাশ্ম নামে উল্লেখ করেছিলেন।

ক. বিবর্তনবাদ অনুসারে প্লাটিপাসকে কী বলা হয়?
খ. মিসিং লিংক বলতে কী বুঝায়?
গ. ইতমিয়াজের দেখা প্রাণিটির একটি চিত্র অংকন কর।
ঘ. ইমতিয়াজের দেখা প্রাণিটি বিবর্তনবাদের অনেক প্রমাণ বহন করে বিশ্লেষণ কর।


১০ নং প্রশ্নের উত্তর

ক. সংযোগকারী জীব।
খ. জীবাশ্ম আবিষ্কারের পূর্বে ধারাবাহিক বিবর্তনের মধ্যে উপযুক্ত প্রমাণের অভাব থাকায় বিবর্তনের ইতিহাসে বেশ কিছু ফাঁক থেকে গিয়েছিলো। অনুমান করা হয় যে, ঐ ফাঁকগুলোতে এমন কোনো ধরনের জীব ছিলো, যাদের সন্ধান পাওয়া যায়নি। এই রকম খোঁজ না পাওয়া জীবদের মিসিং লিংক বা হৃত যোজক বলা হয়।
গ. ইমতিয়াজের দেখা প্রাণীটি হলো লিমুলাস বা রাজ কাঁকড়া। নিচে এর চিত্র দেয়া হলো Ñ

চিত্র

ঘ. ইমতিয়াজের দেখা প্রাণীটি হলো রাজকাঁকড়া বা লিমুলাস। এই প্রাণী সুদূর অতীতে উৎপত্তি লাভ করেও কোনো রকম পরিবর্তন ছাড়াই এখনো পৃথিবীতে বেঁচে আছে। অথচ এদের সমসাময়িক জীবদের বিলুপ্তি ঘটেছে। এদেরকে তাই জীবন্ত জীবাশ্ম বলে। এই সন্ধিপদী প্রাণীটি অর্থোপোডা পর্বের প্রাচীর প্রাণী যার উদ্ভব ঘটেছিলো প্রায় ৪০০ বছর পূর্বে। এদের সাথের অন্যান্য অর্থোপোডাগুলো বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। প্রকৃতির প্রতিকূলতার সাথে সংগ্রাম করে অস্তিত্ত্ব টিকিয়ে রাখতে ব্যর্থ হয়ে এদের সমসাময়িক অনেক প্রাণী বিলুপ্ত হলেও এরা অস্তিত্বের সংগ্রামে জয়ী। এদের মতো সন্ধিপদী প্রাণী পরবর্তীতে আরও উন্নত গঠন নিয়ে তৈরি হলেও এরা অপরিবর্তিত অবস্থায় এখনো টিকে আছে। প্রকৃতি এদেরকে নির্বাচন করেছে টিকে থাকার জন্য তাই এদের মতো অনেক নতুন প্রজাতির উৎপত্তি হলেও এরা অপরিবর্তিত আছে বহু বছর ধরে এবং এরা যোগ্যতম বলেই জয়ী হয়েছে।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে দেখা যায় যে, উপরোক্ত প্রাণীটি অর্থাৎ লিমুলাস বিবর্তনের অনেক প্রমাণ বহন করে।


Previous Post Next Post

نموذج الاتصال