পঞ্চম শ্রেণি, বাংলা ১ম পত্র, বীরের রক্তে স্বাধীন এ দেশ, অনুশীলনীর প্রশ্নের উত্তর

বীরের রক্তে স্বাধীন এ দেশ


অনুশীলনীর প্রশ্নের উত্তর
১.    শব্দগুলো পাঠ থেকে খুঁজে বের করি। অর্থ বলি।
    টহল, আসন্ন, অবধারিত, রক্তস্রোতে, রঞ্জিত, শায়িত।
    উত্তর :
শব্দ                      অর্থ
টহল                -       পাহারা দেওয়া।   
আসন্ন              -        নিকট।
অবধারিত       -      অনিবার্য, যা হবেই, নির্ধারিত।
রক্তস্রোতে        -      রক্তের ধারায়।   
রঞ্জিত             -     রক্ত দিয়ে লাল করা হয়েছে এমন।
শায়িত            -    শুয়ে আছে এমন।   
২.    ঘরের ভিতরের শব্দগুলো খালি জায়গায় বসিয়ে বাক্য তৈরি করি।
নূর মোহাম্মদ শেখ    নান্নু মিয়া    শিপইয়ার্ডের    ১৯৪৩  ১লা মে    রুহুল আমিন
ক)    ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখের দলে ছিলেন অসীম সাহসী মুক্তিযোদ্ধা নান্নু মিয়া
খ)    নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে  নূর মোহাম্মদ শেখ সেদিন এভাবেই রক্ষা করেছিলেন মুক্তিযোদ্ধাদের জীবন।
গ)    সিপাহি মুন্সী আবদুর রউফ ১৯৪৩ সালের ১লা মে ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারি থানার সালামতপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
ঘ)    খুলনা শিপইয়ার্ডের কাছেই চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন।


৩.    প্রশ্নগুলোর উত্তর বলি ও লিখি।
ক)    নূর মোহাম্মদ শেখ কীভাবে নিজের জীবন তুচ্ছ করে মুক্তিযোদ্ধাদের জীবন বাঁচিয়ে ছিলেন?
    উত্তর : পাকিস্তানি হানাদাররা নূর মোহাম্মদ শেখ ও তাঁর সাথী মুক্তিযোদ্ধাদের তিন দিক থেকে ঘিরে আক্রমণ চালিয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধারাও পাল্টা জবাব দিচ্ছিলেন। একপর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা নান্নু মিয়া প্রতিপক্ষের গুলিতে আহত হলে নূর মোহাম্মদ শেখ তাঁকে এক হাত দিয়ে কাঁধে তুলে নিয়ে অন্য হাত দিয়ে গুলি ছুড়তে থাকেন। হঠাৎ শত্রুর গোলার আঘাতে তাঁর পা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে গেল। তিনি বুঝতে পারলেন মৃত্যু আসন্ন। যতক্ষণ সম্ভব গুলি চালাতে চালাতে তিনি শহিদ হলেন। এভাবেই সাথী মুক্তিযোদ্ধাদের জীবন বাঁচাতে নিজের জীবনকে তুচ্ছ করেন নূর মোহাম্মদ শেখ।
খ)    সিপাহি মুন্সী আবদুর রউফের যুদ্ধের ঘটনাটা লিখি।
    উত্তর : ১৯৭১ সালের ৮ই এপ্রিল। মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি নৌসেনাদের ওপর আক্রমণের জন্য মহালছড়ির কাছে বুড়িরঘাট এলাকার চিংড়ি খালের দুই পাশে অবস্থান নেন। পাকিস্তানিরা সাতটি স্পিডবোট ও দুটি মটর লঞ্চ নিয়ে এগিয়ে আসে।
    সংখ্যায় অল্প হলেও মুক্তিযোদ্ধারা দমে গেলেন না। মুন্সী আব্দুর রউফ সিদ্ধান্ত নিলেন নিজের জীবন দিয়ে হলেও সবাইকে রক্ষা করবেন। মুক্তিযোদ্ধাদের দৃঢ়তায় হানাদারদের সাতটি স্পিডবোটই ডুবে গেল। লঞ্চ দুটি থেকে গুলি ছুড়তে ছুড়তে শত্রুরা পিছু হটতে থাকে। একপর্যায়ে শত্রুর একটি গোলা এসে পড়ল মুন্সী আবদুর রউফের ওপর। শহিদ হলেন এই অসীম সাহসী মুক্তিযোদ্ধা।
গ)    বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন কীভাবে শহিদ হয়েছিলেন?
    উত্তর : মংলা বন্দর জয় করে খুলনা জয়ের উদ্দেশ্যে ছুটে আসছিল মুক্তিযোদ্ধাদের নৌ-জাহাজ বিএনএফ পলাশ ও পদ্মা। খুলনার কাছাকাছি পৌঁছামাত্রই একটি বোমারু বিমান থেকে জাহাজ দুটির ওপর বোমা ফেলা হয়। রুহুল আমিন ছিলেন বিএনএফ পলাশের ইঞ্জিনরুমে। ইঞ্জিনরুমের ওপর বোমা পড়েছিল। এতে তাঁর ডান হাতটি উড়ে যায়। প্রাণ বাঁচাতে জাহাজ থেকে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে সাঁতরে তীরে উঠলেন তিনি। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। নদীতীরে অবস্থানরত বিশ্বাসঘাতক রাজাকাররা তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করে। এভাবেই শহিদ হন বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন।
ঘ)    গল্প থেকে মুক্তিযুদ্ধের সময় বীরযোদ্ধাদের সম্পর্কে যা জেনেছি তা নিজের ভাষায় লিখি।
    উত্তর : গল্প থেকে মুক্তিযুদ্ধের সময় বীরযোদ্ধাদের সম্পর্কে যা জেনেছি তা নিচে উল্লেখ করা হলোÑ
    মুক্তিযোদ্ধারা ছিলেন অসীম সাহসী।
    মুক্তিযোদ্ধারা দেশকে গভীরভাবে ভালোবাসতেন।
    মুক্তিযোদ্ধারা বীরের মতো হানাদার পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন।
    অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা দেশের মুক্তির জন্য হাসিমুখে জীবন দিয়েছেন।
    মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের কারণেই আমরা স্বাধীন দেশ পেয়েছি।
    মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের গর্ব।
৪.    ব্যাখ্যা করি।
    দেশের এ বীরশ্রেষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য গর্বিত আমরা।
    উত্তর :
    উৎস : আলোচ্য অংশটুকু ‘বীরের রক্তে স্বাধীন এ দেশ’ রচনা থেকে নেওয়া হয়েছে।
    প্রসঙ্গ : বীরশ্রেষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি আমাদের ভালোবাসার কথা প্রকাশিত হয়েছে আলোচ্য বাক্যটিতে।
    বিশ্লেষণ : ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে জয়ী বাহিনী হিসেবে মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের স্বাধীন দেশ উপহার দিয়েছেন। বীরশ্রেষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধারা দেশের জন্য হাসিমুখে নিজেদের প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন। তাঁরা এ দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাঁদের নিয়ে আমাদের গর্বের শেষ নেই।
৫.    বিপরীত শব্দ লিখি এবং তা দিয়ে একটি করে বাক্য লিখি।
    উত্তর :
মূল শব্দ    বিপরীত শব্দ    বাক্য
দুরন্ত    শান্ত    শান্ত ছেলেটি শুধু পড়তে ভালোবাসে।
অসীম    সসীম    আকাশ অসীম না সসীম তা কেউ জানে না।
সুনাম    দুর্নাম    চোর হিসেবে সেলিমের দুর্নাম আছে।
বীর    ভীতু    পপি খুব ভীতু মেয়ে।
জয়    পরাজয়    সোহরাব সাহেব নির্বাচনে পরাজয় মেনে নিলেন।
জীবন    মৃত্যু    মৃত্যুকে সবারই একদিন বরণ করতে হবে।
৬.    ঠিক উত্তরটিতে টিক () চিহ্ন দিই।
ক.    বাবা মারা যাওয়ার পর নূর মোহাম্মদ কিসে যোগ দিলেন?
    ১.    বাংলাদেশ রাইফেলসে           ২.     ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলসে 
    ৩.    বাংলাদেশ নেভিতে              ৪.    কোনটিই না
খ.    বীরশ্রেষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা নূর মোহাম্মদ শেখ এর জন্ম
    ১.    ১৯৩৬ সালের ২৬এ ফেব্রুয়ারি        ২.     ১৯৩৮ সালের ২৬এ ফেব্রুয়ারি
    ৩.    ১৯৩৬ সালের ২৬এ জানুয়ারি          ৪.    ১৯৩৭ সালের ২৬এ জানুয়ারি
গ.    মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে পাকিস্তানিদের কয়টি স্পিডবোট ডুবে গিয়েছিল?
    ১.    পাঁচটি                  ২.     আটটি
    ৩.    সাতটি             ৪.    নয়টি
ঘ.    বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আবদুর রউফকে সমাহিত করা হয়
    ১.    বরিশাল                  ২.     বক্সিবাজার
    ৩.    বোর্ড বাজার        ৪.    বুড়িঘাট
ঙ.    খুলনা শিপইয়ার্ডের কাছেই চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা
    ১.    নূর মোহাম্মদ শেখ     ২.     মুন্সী আবদুর রউফ
    ৩.    মতিউর রহমান       ৪.    মোস্তফা কামাল
[বি:দ্র: সঠিক উত্তর- মোহাম্মদ রুহুল আমীন।]
৭.    আমাদের জাতীয় দিবসগুলোর পাশে তারিখবাচক শব্দ লিখি।
      উত্তর :
ক)    শহিদ দিবস                        ২১এ ফেব্রুয়ারি
খ)    স্বাধীনতা দিবস                   ২৬এ মার্চ
গ)    বাংলা নববর্ষ                     ১লা বৈশাখ/১৪ই এপ্রিল
ঘ)    শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস         ১৪ই ডিসেম্বর
ঙ)    বিজয় দিবস                      ১৬ই ডিসেম্বর
Previous Post Next Post

نموذج الاتصال