ষষ্ঠ শ্রেণি, বাংলা ১ম পত্র, মিনু , সৃজনশীল, প্রশ্ন উত্তর

 

মিনু

ejvBPuv` gy‡Lvcva¨vq

সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন- ১    গৃহপরিচারিকাদের জীবন বাস্তবতা 


বন্যা সারা সকাল মিসেস সালমার বাসায় কাজ করে, তাকে খালাম্মা বলে ডাকে। সে মিসেস সালমার যাবতীয় কাজে সাহায্য করার চেষ্টা করে। দিবা শাখার একটি স্কুলেও সে পড়ে। পড়ালেখায় সে পিছিয়ে নেই। শুধু প্রকৃতির কোনো কিছুর সঙ্গে তার সখ্য গড়ে ওঠেনি; সে সময়ই বা তার কোথায়? তার নিজের জীবন আর কাজ নিয়েই সে ব্যস্ত। প্রকৃতিতে নয়, নিজের কাজেই শান্তি খুঁজে পায়। বন্যা তার কাজ দিয়ে, কথা দিয়ে মিসেস সালমাকে এমন আপন করে নিয়েছে যে মিসেস সালমাও বন্যাকে পরিবারের অন্য সদস্যের মতোই মনে করে।

ক. মিনু কার বাড়িতে থাকত?
খ. ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. অবস্থানগত দিক থেকে উদ্দীপকের বন্যা ও মিনুর মধ্যে যে বৈসাদৃশ্য লক্ষ করা যায়Ñ তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. বন্যার শিক্ষা ছিল প্রাতিষ্ঠানিক, আর প্রকৃতি হচ্ছে মিনুর পাঠশালা- বিশ্লেষণ কর।

 ক মিনু এক দূরসম্পর্কের পিসিমার বাড়িতে থাকত।

 খ ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় বলতে পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের বাইরে বিশেষ অনুধাবন শক্তিকে বোঝানো হয়েছে।
প্রত্যেক মানুষেরই পাঁচটি ইন্দ্রিয় আছে। সেগুলো হলো- চোখ, কান, নাক, জিভ ও ত্বক। কিন্তু মানুষের ভেতরে এক প্রকার অদৃশ্য অনুভূতির উৎস আছে। সে উৎস হলো মানুষের মন বা হৃদয়। এখানে ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় বলতে পঞ্চইন্দ্রের বাইরের একটি একটি ইন্দ্রিয়কে বোঝানো হয়েছে।

 গ অবস্থানগত দিক থেকে উদ্দীপকের বন্যা ও মিনুর মধ্যে যথেষ্ট বৈসাদৃশ্য লক্ষণীয়।
ভালো-মন্দ এই দুই ধরনের মানুষই রয়েছে আমাদের সমাজে। এদের সংস্পর্শে কিছু মানুষ জীবনে আলোর পথ দেখে আর কারো জীবনে নেমে আসে অন্ধকার।
উদ্দীপকের বন্যা মিসেস সালমার বাসায় কাজ করে। বন্যা তার কাজ দিয়ে, কথা দিয়ে মিসেস সালমাকে এমনভাবে আপন করে নিয়েছে যে মিসেস সালমাও তাকে পরিবারের একজন সদস্য মনে করে। তাই স্কুলেও পড়াশোনার সুযোগ করে দিয়েছে। কিন্তু গল্পের বাবা-মা মরা মিনু পিসিমার বাড়িতে আশ্রয় নিলেও পিসিমার সংসারের যাবতীয় কাজ তাকেই করতে হয়। বোবা-কালা হওয়ার কারণে কাজ আর আত্মভাবনায় ডুবে থাকে সে। বুকের মাঝে জমানো কষ্ট নিয়ে প্রতীক্ষা করতে থাকে বাবার জন্য। বন্যা কাজের মেয়ে হলেও মানুষ হিসেবে সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পেরেছে কিন্তু মিনু আত্মীয়ের বাসায় থেকেও সকল অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। তাই বলা যায়, মিনু ও বন্যার মধ্যে অবস্থানগত পার্থক্য বিদ্যমান।

 ঘ উদ্দীপকের বন্যা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ করতে পারলেও গল্পের মিনু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ করতে পারেনি। মিনুর পাঠশালা ছিল প্রকৃতি।
জন্ম, পারিবারিক পরিবেশ, সামাজিক ও পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণে মানুষের আচরণে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু মিনু ও স্বাভাবিক সুস্থ শিশু বন্যার মাঝে তাই স্বভাবগত বৈসাদৃশ্য দেখা যায়।
উদ্দীপকের বন্যা স্বাভাবিক সুস্থ শিশু। সে মিসেস সালমার বাসায় কাজ করলেও লেখাপড়ার সুযোগ পেয়েছে। কথা আর কাজ দিয়ে আপন করে নিয়েছে মিসেস সালমাকে। কিন্তু গল্পের মিনু বোবা-কালা। এখানেই বন্যার সাথে তার বড় স্বভাবগত বৈসাদৃশ্য। মিনু পিসিমার বাড়িতে আশ্রয় নিলেও সংসারের যাবতীয় কাজ করে। স্কুলে যাওয়ার সুযোগ সে পায়নি। কাজ আর আত্ম ভাবনায় ডুবে থাকে। সে নিজের মতো করে একটা জগৎ তৈরি করে নিয়েছে। সে জগতের বাসিন্দা সে একা। বাবার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে সে। হলদে পাখি দেখলে তার মনে মনে পুলক জাগে। রান্নাঘর, শুকতারা, পিঁপড়া এবং বাইরের জগতের সঙ্গে সম্বন্ধ করেছে সে। বলা চলে প্রকৃতিই যেন মিনুর বিদ্যাশিক্ষা গ্রহণের প্রধান পাঠশালা। অপরদিকে উদ্দীপকের বন্যা কাজ ও কথা দিয়ে মিসেস সালমার মন জয় করলেও প্রকৃতির সাথে তার কোনো মিতালি দেখা যায় না। মিনুর মতো তৈরি করতে পারেনি নিজের কোনো আলাদা জগৎ।
উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে তাই বলা যায়, উদ্দীপকের বন্যার শিক্ষা প্রাতিষ্ঠানিক হলেও মিনুর শেখার পাঠশালা ছিল প্রকৃতি।

প্রশ্ন- ২   

পল্লিপ্রকৃতির কোলে বেড়ে ওঠা বিধবা মায়ের ডানপিটে সন্তান ফটিক। নতুনের আকর্ষণে সে চলে আসে কলকাতার মামা-বাড়িতে। কিন্তু মামি তাকে মোটেও আপন করে নিতে পারেনি; বরং অনাবশ্যক ঝামেলা মনে করে তাকে স্নেহ থেকে বঞ্চিত করে। একদিকে প্রকৃতির টান ও মায়ের ভালোবাসা পাওয়ার আকাক্সক্ষা, অন্যদিকে মামির অবহেলা, অনাদর ও তিরস্কার তার মনকে পীড়িত করে। ফলে এ পৃথিবী থেকে তাকে অসময়ে বিদায় নিতে হয়।

ক. মিনুর বয়স কত?
খ. শুকতারাকে মিনু সই মনে করে কেন? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের ফটিক ও ‘মিনু’ গল্পের মিনুর মধ্যে বৈসাদৃশ্য ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ‘ফটিক ও মিনুর পরিণতি ভিন্ন হলেও উভয়ের বেড়ে ওঠার পরিবেশ ছিল প্রতিকূল।’ -উক্তিটির যথার্থতা যাচাই কর।

 ক মিনুর বয়স দশ বছর।

 খ মিনু বিশ্বাস করে শুকতারা তার সই। কারণ শুকতারাও তার মতো অনেক ভোরে ওঠে।
মিনু খুব ভোরে কয়লা ভাঙতে ওঠে। তখন আকাশে মিটমিট করে জ্বলতে থাকে শুকতারারা। মিনুর সাথে সর্বপ্রথম সাক্ষাৎ ঘটে শুকতারাদেরই। তাই মিনুর দৃঢ় বিশ্বাস শুকতারারাও তার মতো ভোরে ওঠে। শুকতারার জীবনও তার জীবনের মতো কঠিন নিয়মে বাঁধা। এ কারণেই ভোর রাতের শুকতারাকে মিনু সই মনে করে।

 গ উদ্দীপকের ডানপিটে ফটিকের সঙ্গে গল্পের শান্ত-স্বভাবের মিনুর অবস্থানগত ও স্বভাবগত বৈসাদৃশ্য লক্ষ করা যায়।
এ পৃথিবীতে প্রতিটি মানুষই জন্মের পর তার নিজ নিজ পরিবেশে বড় হয়। কিন্তু ভাগ্যের অমোঘ পরিণতিতে কেউ আশ্রয় প্রায় গৃহে, কেউবা অন্যত্র।
পিতৃমাতৃহীন মেয়ে মিনু দূরসম্পর্কের এক পিসিমার বাড়িতে আশ্রয় পেয়েছে। বোবা ও কালা হওয়ার জন্য সে নীরবে সংসারের যাবতীয় কাজ করে যায়। প্রকৃতিকে নিয়ে সে আপন জগৎ সৃষ্টি করে নিয়েছে। জীবনকে সে তুচ্ছ ভাবেনি। অন্যদিকে উদ্দীপকের ফটিক মিনুর মতো বোবা-কালা, আশ্রিতা নয়। পল্লিপ্রকৃতিতে মায়ের কোলে বেড়ে ওঠা ডানপিটে দুরন্ত এক বালক। নতুনের আহ্বানে ফটিক চলে আসে কলকাতা। কিন্তু এখানে এসে সে মামার বাড়িতে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারেনি। বারবার গ্রামে ফিরে যেতে চেয়েছে। মামির অবহেলা আর অনাদরে ব্যথিত মন নিয়ে ফটিক পৃথিবী থেকে অসময়ে বিদায় নিয়েছে। এসব দিক থেকে উভয়েরই মধ্যে নানা বৈসাদৃশ্য লক্ষ করা যায়।

 ঘ উদ্দীপকের ফটিক কথা বলতে পারলেও মামির অত্যাচারে ছিল নির্বাক আর গল্পের মিনু অসহনীয় পরিবেশে প্রকৃতিগতভাবে ছিল নির্বাক।
পিতৃমাতৃহীন মেয়ে মিনু পিসিমার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। পিসিমার সংসারে সে অবিরাম খেটে চলেছে। কিন্তু আত্মীয়ের বাড়িতে থাকা সত্ত্বেও ন্যূনতম কোনো সুযোগ-সুবিধা পায়নি সে। বোবা-কালা হওয়ায় নিজ কাজ আর আত্মভাবনায় ডুবে থাকত মিনু। পিঁপড়া, রান্নাঘর আর বাইরের প্রকৃতির সঙ্গে সে মিতালি পেতেছে । বুকে জমানো কষ্ট নিয়ে বাবার জন্য অধীর আগ্রহে প্রতীক্ষা করেছে। নিজের অনুভূতি, জমানো কষ্ট প্রকৃতি ছাড়া কাউকে বলতে পারেনি সে। তারপরও জীবনকে তুচ্ছ ভাবেনি সে। বাবা আসবে এই স্বপ্নই তাকে সমস্ত প্রতিকূলতা অতিক্রম করতে সাহায্য করেছে।
উদ্দীপকের ফটিককে আমরা দেখি সে উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে কলকাতায় এসেছিল কিন্তু শহুরে পরিবেশ ও মামির অবহেলা তার মনকে দারুণভাবে ব্যথিত করে। শহুরে পরিবেশে সে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে পারেনি। ফলে মায়ের জন্য, গ্রামের জন্য তার মন কাঁদে। এমনি করে বেদনাতুর মন নিয়ে তাকে অসময়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে হয়।
মিনু বাবার জন্য প্রতীক্ষা করেও শেষ পর্যন্ত পিসিমার সংসারে থেকে যায়। কিন্তু ফটিক মামির সংসারে টিকতে না পেরে মৃত্যুর কাছে পরাজয় মেনে নেয়। তাই বলা যায়, ফটিকের পরিণতি আর মিনুর পরিণতি ভিন্ন হলেও উভয়ের বেড়ে ওঠার পরিবেশ ছিল সম্পূর্ণ প্রতিকূল। যদি মিনু ও ফটিক উভয়ে অনুকূল পরিবেশে বেড়ে উঠত তাহলে তাদের পরিণতি ভিন্ন হতো। কাউকে অকালে মৃত্যুর হীমশীতল স্পর্শ গ্রহণ করতে হতো না।

অতিরিক্ত সৃজনশীল প্রশ্ন 

প্রশ্ন- ১ পরিবেশগত বৈপরীত্য 


জয়া প্রীতির মতো গুছিয়ে কথা বলতে এবং দ্রুত কাজ করতে পারে না। তবে ভালো করে বুঝিয়ে বললে সময় নিয়ে সব কাজই মোটামুটি করতে পারে। জয়া প্রীতিদের বাসায় আশ্রিত হলেও প্রীতির মা জয়াকে খুব ভালোবাসেন। তিনি জয়াকে অক্ষরজ্ঞান থেকে শুরু করে রান্না, সেলাই প্রভৃতি কাজ শেখানোর চেষ্টা করেন। তিনি প্রীতিকে বললেন, ‘উপযুক্ত পরিবেশ পেলে এরাও বিভিন্ন প্রতিকূল অবস্থা অতিক্রম করতে পারবে। [পিএন সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, রাজশাহী]

ক. মিনুর বয়স কত?
খ. মিনু তার বাবাকে নিয়ে কী ভাবত- ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে জয়ার সাথে ‘মিনু’ গল্পের মিনুর বৈসাদৃশ্যগুলো নিরূপণ কর।
ঘ. মিনু ও জয়া সম্পর্কে প্রীতির মায়ের উক্তিটি ‘মিনু’ গল্পের আলোকে বিশ্লেষণ কর।

 ক মিনুর বয়স দশ বছর।

 খ মিনু তার বাবাকে নিয়ে ভাবত যে তার বাবা একদিন ফিরে আসবে।
মিনু বোবা-কালা। মাসিমা একদিন চিৎকার করে বলেছিল-তার বাবা বিদেশ থাকে। মিনু বড় হলে ফিরে আসবে। তাই সে বাবার প্রতীক্ষায় ছিল। হঠাৎ একদিন ছাদে থাকা অবস্থায় মিনু দেখতে পায় পাশের বাসার টুনুর বাবা এসেছে বিদেশ থেকে। আর ঐ সময়ে কাঁঠাল গাছের সরু ডালে হলদে পাখি বসা। তখন থেকে মিনু মনে মনে ভাবত, আবার যেদিন এ ডালে হলদে পাখি বসবে। সেদিন বাবা ফিরে আসবে।

 গ উদ্দীপকের জয়ার সাথে ‘মিনু’ গল্পের মিনুর যথেষ্ট বৈসাদৃশ্য রয়েছে।
ভালো মন্দ মিলেই আমাদের সমাজ গড়ে উঠেছে। ভালো মানুষের আশ্রয়ে জীবনে আলো ফোটে আর মন্দের সাহচর্যে জীবনে দুর্দশা নেমে আসে। উদ্দীপকের জয়া ও গল্পের মিনুর জীবনে বিষয়টি সুস্পষ্ট। গল্পের মিনু এতিম। দূরসম্পর্কের এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় মিলেছে। দশ বছর বয়স হলেও পিসিমার সংসারের যাবতীয় কাজ তাকেই করতে হয়। সকল কাজের বিনিময়ে জোটে শুধু তিন বেলা খাবার। আদর-ভালোবাসা, লেখাপড়া সব সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। অন্যদিকে উদ্দীপকের জয়াও মিনুর মতো অন্যের বাসায় আশ্রিত। কিন্তু মিনুর মতো অবহেলা-অযতেœ দিন কাটে না তার। প্রীতির মা তাকে খুব ভালোবাসেন। জয়াকে অক্ষরজ্ঞান থেকে শুরু করে রান্না, সেলাই প্রভৃতি কাজ শেখানোর চেষ্টা করেন। জয়ার জন্য তিনি ভেবেছেন, ভালো পরিবেশে সে ভালো থাকবে। অসুস্থতা কাটিয়ে উঠতে পারবে। কিন্তু মিনুর জন্য ভাববার কেউ ছিল না। এসব ক্ষেত্রেই জয়ার সাথে মিনুর পার্থক্য।

 ঘ ‘উপযুক্ত পরিবেশ পেলে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুরাও প্রতিকূল অবস্থা অতিক্রম করতে পারবে’- মিনু ও জয়া সম্পর্কে প্রীতির মায়ের এ উক্তিটি যথার্থ।
বিচিত্র মানুষের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে আমাদের এ সমাজ। কেউ সুস্থ, কেউবা পুরোপুরি সুস্থ নয়। যারা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু রয়েছে তাদের প্রতি মমত্ববোধ জাগ্রত করলে অবশ্যই তারা সমস্ত বাধা অতিক্রম করতে পারবে। গল্পের মিনু এতিম ও বাকপ্রতিবন্ধী। পিসিমার বাড়িতে আশ্রিত। দশ বছর বয়স হলেও সংসারের যাবতীয় কাজ করে বিনিময়ে পায় শুধু তিনবেলা খাবার। স্নেহ-ভালোবাসা কাকে বলে সে জানে না। তারপরও সে জীবনকে তুচ্ছ ভাবে না। মনের কথা ব্যক্ত করে প্রকৃতির কাছে। স্বপ্ন দেখে একদিন বাবা আসবে। এই স্বপ্নই তাকে বেঁচে থাকতে সাহায্য করে।
উদ্দীপকের জয়া অন্যের বাড়িতে আশ্রিত হলেও পায় ভালোবাসা। প্রীতির মা তাকে অক্ষরজ্ঞান থেকে শুরু করে রান্না, সেলাই প্রভৃতি কাজ শেখান। কীভাবে জয়া ভালো থাকবে, অসুস্থতা কাটিয়ে উঠবে সে চিন্তাও তিনি করেন। প্রীতির মায়ের মতো যদি গল্পের মিনু এবং সমাজের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য এমন চিন্তা ও কাজ করা যেত তাহলে তারাও সব প্রতিকূলতা অতিক্রম করে বাঁচতে শিখত। সকল অসুস্থতা ও বাধা কাটিয়ে ভালো থাকতে পারত।
উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে বলা যায়, সমাজের সবাই যদি প্রীতির মায়ের মতো ভাবত তাহলে মিনু ও জয়ার মতো বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুরা সুস্থ হয়ে উঠত।

প্রশ্ন- ২ শিশুশ্রম 


নিচের চিত্রকল্পটি পর্যবেক্ষণ করে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

ক. মিনুর পিসেমশায়ের নাম কী?
খ. ‘মিনুর জগৎ চোখের জগৎ’Ñ ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের চিত্রকর্মটির সঙ্গে ‘মিনু’ গল্পের কোন দিকটির সাদৃশ্য রয়েছে? নির্ণয় কর।
ঘ. চিত্রটি ‘মিনু’ গল্পের সামগ্রিক বিষয় ধারণ করে কী? মতের পক্ষে যুক্তি দাও।

 ক মিনুর পিসেমশায়ের নাম যোগেন বসাক।

 খ মিনুর জগৎ চোখের জগৎ। কারণ চোখ দিয়েই মিনু জগৎটাকে দেখে, অনুভব করে এবং সে অনুযায়ী সবকিছু করে।
মিনু শুধু বোবা নয়, কালাও। ফলে কথা বলতে যেমন পারে না, তেমনি অনেক চেঁচিয়ে বললে তবে শুনতে পায়। অবশ্য সব কথা শোনার দরকারও হয় না। ঠোঁটনাড়া আর মুখের ভাব দেখেই সব বুঝতে পারে সে। চোখই তার প্রধান ইন্দ্রিয়। দৃষ্টির ভেতর দিয়েই সৃষ্টিকে গ্রহণ করেছে সে। দৃষ্টি দিয়েই সৃষ্টিকে নতুনরূপে, নতুন রঙে আবিষ্কার করেছে। তাই বলা যায়, মিনুর জগৎ মূলত চোখের জগৎ।

 গ উদ্দীপকের চিত্রকর্মটির মধ্যে আলোচ্য ‘মিনু’ গল্পের মিনুর কঠোর পরিশ্রম করার দিকটি ফুটে উঠেছে।
কঠোর পরিশ্রম শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশে বাধা সৃষ্টি করে। অমানবিক পরিশ্রম শিশুদের দিয়ে করানো উচিত নয়। মিনু তার বাবা-মাকে হারিয়ে দশ বছর বয়স থেকে তার দূরসম্পর্কের এক পিসিমার (ফুফুর) বাড়িতে থাকত। সেই অল্প বয়সেই মিনু তার পিসিমার সংসারের সব কাজ করে দিত। সে খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে রান্নাঘরে গিয়ে কয়লা ভাঙত। কয়লা ভাঙার পর সেগুলো উনুনে দিয়ে পোড়াত। পিসিমা ঘুম থেকে ওঠার আগেই মিনু বাড়ির সব কাজ শেষ করে ফেলত। পিসিমার ঘরের সব কাজ করে দিলেও বিনিময়ে মিনু কোনো আদর ও যতœ পেত না। উদ্দীপকের মেয়েটিও মিনুর বয়সি। সে কম বয়সে অনেক হাঁড়ি-পাতিল পরিষ্কার করছে। ছবিতে কাজের প্রতি শিশুটির মনোযোগ মিনুকেই মনে করিয়ে দেয়। মিনুও এভাবে তার পিসিমার বাসায় কাজ করত। তাই উদ্দীপকের শিশুর সঙ্গে মিনুর অক্লান্ত পরিশ্রমের বিষয়টির সাথে সাদৃশ্য রয়েছে।

 ঘ চিত্রে ‘মিনু’ গল্পের কেবল একটি বিষয় (কাজ করার বিষয়) প্রকাশিত হওয়ায় চিত্রটি ‘মিনু’ গল্পের সামগ্রিক বিষয় ধারণ করে না।
‘মিনু’ গল্পে মিনু বাক্ ও শ্রবণপ্রতিবন্ধী। তাই বলে, পিতৃ-মাতৃহীন মিনু নিজের জীবনকে তুচ্ছ মনে করে না। দূরসম্পর্কীয় এক আত্মীয়ের বাসায় তাকে থাকতে হয়। এখানে গৃহকর্মে তার অখণ্ড মনোযোগ। সে খুব পরিশ্রমীও বটে। এছাড়া প্রকৃতির সঙ্গে তার রয়েছে গভীর মিতালি।
প্রকৃতির সবকিছুকে সে নিজস্ব ভাষায় নামকরণ করেছে। তার বাবার আগমনে প্রতীক্ষা করে। বাবা না আসায় তার কষ্ট হয়। এতকিছুর পরও সে স্বপ্ন দেখে। মিনু চরিত্রটির এসব বিষয় নিয়ে ‘মিনু’ গল্পটি রচিত।
উদ্দীপকের চিত্রটিতে একটি শিশুকে পরিশ্রমের কাজ করতে দেখা যাচ্ছে। এতে মিনু গল্পের শুধু মিনুর কাজে মনোযোগ ও পরিশ্রমের বিষয়টিই প্রকাশ পায়। উপরে বর্ণিত ‘মিনু’ গল্পের অন্যান্য বিষয় এতে অনুপস্থিত।

প্রশ্ন- ৩    শারীরিক প্রতিবন্ধকতা 


তপুর ছোট ভাই অপুর একটি পা ভাঙা। এতে সে ঠিকমতো হাঁটতে পারে না। তাই তপু তাকে সাইকেলে করে স্কুলে নিয়ে যায়। তপু যখন গাছে চড়ে, পুকুরে মাছ ধরে কিংবা পাড়ার ছেলেদের সঙ্গে ফুটবল খেলে তখন অপু মনে মনে কষ্ট পায়। তপু মাঝে মাঝে যে খেলাগুলোতে দৌড়াতে হয় না, সেগুলো অপুর সঙ্গে খেলে।

ক. মিনু হাতুড়িটার কী নাম রেখেছিল?
খ. ‘দৃষ্টির ভিতর দিয়ে সৃষ্টিকে গ্রহণ করেছে সে’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকের অপু ও মিনুর মধ্যে যে বৈসাদৃশ্য লক্ষ করা যায় তা নির্ণয় কর।
ঘ. “অপুর মনঃকষ্ট ও মিনুর মনঃকষ্ট ভিন্ন”Ñউক্তিটি বিশ্লেষণ কর।

 ক মিনু হাতুড়িটার নাম রেখেছিল গদাই।

 খ দৃষ্টির ভিতর দিয়ে সৃষ্টিকে গ্রহণ করেছে বলতে বোবা মিনুর দেখার জগৎকে বোঝানো হয়েছে।
বাকা ও শ্রবণপ্রতিবন্ধী মিনু চারপাশের সবকিছু দেখে ও প্রকাশ করে দৃষ্টি দিয়ে। বলতে বা শুনতে না পারলেও সে আশপাশের সবকিছু দেখে তাকে অন্যরকমভাবে মনের মধ্যে সাজায়। তাই দৃষ্টিই তার সব বলেই উক্ত উক্তিটি করা হয়েছে।

 গ নিজস্ব জগতে বিচরণ করে বোবা-কালা মেয়ে মিনু আর অপু তার জগতে বন্দি- এখানেই দুজনের মধ্যে বৈসাদৃশ্য।
বিচিত্র মানুষের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা আমাদের এ সমাজে কেউ সুস্থ, কেউবা পূর্ণ সুস্থ নয়। উদ্দীপকের অপু ও গল্পের মিনু দুজনেই বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু হলেও তাদের মধ্যে কিছু বৈসাদৃশ্য রয়েছে।
উদ্দীপকের অপুর জগৎ তার চোখের সামনে বিচরণ করে। সে ইচ্ছা করলেই তার জগতে বিচরণ করতে পারে না। অন্যের সহায়তা লাগে। সে ইচ্ছা করলেই যেখানে সেখানে যেতে পারে না। তপুর সহায়তায় সে স্কুলে যায়, খেলাধুলা করে। অপরদিকে, মিনু বোবা-কালা হলেও সংসারের যাবতীয় কাজ করে, ঠোঁট নাড়া আর মুখের ভাব দেখেই সব বুঝতে পারে সে। দৃষ্টির ভেতর দিয়েই সৃষ্টিকে গ্রহণ করেছে সে। নিজের মনের কথা অন্যকে বোঝাতে পারে না মিনু। নিজের সাথে নিজের নিয়ন্তর বোঝাপড়া চলে। কিন্তু জীবনকে তুচ্ছ মনে করে না। তাই বলা যায়, অবস্থানগত দিক থেকে দুজনেই বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু হলেও তাদের অবস্থানে বৈসাদৃশ্য লক্ষ করা যায়। মিনু সবখানেই বিচরণ করে মনের সুখে, অপু তা পারে না।

 ঘ ‘অপুর মনঃকষ্ট ও মিনুর মনঃকষ্ট ভিন্ন’ উক্তিটি যথার্থ।
বিচিত্র মানুষের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে আমাদের এ সমাজ। কেউ সুস্থ, কেউবা পুরো সুস্থ নয়। উদ্দীপকের অপু ও গল্পের মিনু দুজনই বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু হলেও তাদের মনের কষ্ট ভিন্ন ভিন্ন।
বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু মিনু পিসিমার বাড়িতে থাকে। জন্মের আগেই বাবাকে হারিয়েছে সে। পিতৃমাতৃহীন মিনু পিসিমার সংসারে যাবতীয় কাজ করলেও কোনো সুযোগ-সুবিধা পায় না। বাইরের প্রকৃতির সাথে তার সম্বন্ধ। আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রিত হয়ে শত কষ্টের মাঝেও সে জীবনকে তুচ্ছ মনে করে না। বাবার জন্য প্রতীক্ষা করে তাই অবসর সময়ে প্রতিদিন ছাদে যায় হলদে পাখির আগমনের আশায়। কিন্তু হলদে পাখি এসে ডালে বসলেও তার বাবা আর আসে না। আর এখানেই মিনুর মনঃকষ্ট।
উদ্দীপকে অপুর মনঃকষ্ট অন্য ক্ষেত্রে। মিনুর মতো সে মনের সুখে বিচরণ করতে পারে না। এক পা ভাঙা হওয়ায় সে পায়ে হেঁটে স্কুলে যেতে পারে না। অন্যরা যখন পুকুরে মাছ ধরে, গাছে চড়ে কিংবা ফুটবল খেলে তখন অপুর খুব কষ্ট হয়। তার মনের মধ্যে কষ্ট বাসা বাঁধে।
অপুর কষ্ট শারীরিক অক্ষমতায় আর মিনুর কষ্ট বাবার আগমনের স্বপ্ন পূরণ না হওয়ায়। তাই বলা যায় অপুর মনঃকষ্ট ও মিনুর মনঃকষ্ট ভিন্ন।

প্রশ্ন- ৪    প্রকৃতির সাথে একাত্মতা 


সেঁজুতি খুব নিঃসঙ্গ। নিঃসঙ্গতার কারণ বাবা-মা দুজনই চাকরিজীবী। তাই বন্ধুহীন সেঁজুতি জানালার পাশে জারুল গাছ, গাছে উড়ে আসা পাখির সাথে নিজের মনে গহীনে লুকিয়ে থাকা কথাগুলো ব্যক্ত করে ওদের সাথে। মাঝে মাঝে আনমনে আকাশে তাকিয়ে থাকতে থাকত সে, স্বপ্ন দেখে পাখি হয়ে আকাশ পথে বিশ্ব ভ্রমণ করার।
[নৌবাহিনীর স্কুল ও কলেজ, চট্টগ্রাম]

ক. মিনুর হাত থেকে একদিন কোন জিনিসটি পড়ে গিয়েছিল?
খ. দুপুরে মিনু ঘুরে বেড়ায় কেন?
গ. উদ্দীপকে সেঁজুতি ‘মিনু’ গল্পের কোন চরিত্রের প্রতিচ্ছবি- ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ‘প্রেক্ষাপট ভিন্ন হলেও মিনু ও সেঁজুতি দুজনেরই আশ্রয় প্রকৃতি’ উক্তিটি উদ্দীপক ও গল্পের আলোকে মূল্যায়ন কর।

 ক মিনুর হাত থেকে একদিন ঘটিটা পড়ে গিয়েছিল।

 খ বোলতা বা ভিমরুলকে মারার জন্য দুপুরে মিনু ঘুরে বেড়ায়।
একবার বোলতা বা ভিমরুল তাকে কামড়েছিল। তাই প্রতিশোধ নিতে মিনু দুপুরে যখন পিসিমা ঘুমোয় তখন কোমরে কাপড় জড়িয়ে গামছায় প্রকাণ্ড গেরো বেঁধে বাড়ি থেকে বের হয়। বোলতা বা ভিমরুল দেখতে পেলেই শোঁ করে গামছা ঘুরিয়ে মারে। সঙ্গে সঙ্গে বোলতা বা ভিমরুল পড়ে যায় মাটিতে। তারপর মরা বোলতা বা ভিমরুল মিনু খেতে দেয় পিঁপড়াদের। মূলত মিনু তার শত্র“ বোলতা ও ভিমরুলের প্রতি প্রতিশোধ নিতেই দুপুরে বাড়ি থেকে বের হয়ে ঘুরে বেড়ায়।

 গ উদ্দীপকের সেঁজুতি ‘মিনু’ গল্পের মিনু চরিত্রের প্রতিচ্ছবি।
প্রত্যেক মানুষই চায় আপনজন বিশেষ করে বাবা-মার সান্নিধ্য, বাবা-মার ভালোবাসা বঞ্চিত শিশু বড়ই অভাগা। অবস্থানগত ভিন্নতা থাকলেও নিঃসঙ্গতার কারণে সেঁজুতি ও মিনু একই সূত্রে গাঁথা।
উদ্দীপকের সেঁজুতি প্রতিবন্ধী নয়, তার মা-বাবাও আছে। কিন্তু মা-বাবা চাকরিজীবী হওয়ায় সে নিঃসঙ্গ। নিজের মনের কথাগুলো সে ব্যক্ত করে জারুল গাছ, গাছে উড়ে আসা পাখির কাছে। মাঝে মাঝে স্বপ্ন দেখে পাখি হয়ে আকাশ ভ্রমণ করার।  অন্যদিকে মিনু এতিম ও প্রতিবন্ধী। আত্মীয়ের বাসায় আশ্রয় পেলেও সংসারের যাবতীয় কাজ করে। নিজের কথা কাউকে বোঝাতে পারে না বলে তার নিঃসঙ্গতা দূর করতে প্রকৃতির সঙ্গে করেছে মিতালি। তাই বলা যায়, অবস্থানের ভিন্নতা থাকা সত্ত্বেও নিঃসঙ্গতা ও প্রকৃতির সাথে বন্ধুত্ব করার দিক দিয়ে সেঁজুতি মিনুর প্রতিচ্ছবি।

 ঘ ‘প্রেক্ষাপট ভিন্ন হলেও মিনু ও সেঁজুতি দুজনেরই আশ্রয় প্রকৃতি’- মন্তব্যটি যথার্থ।
মা-বাবা সন্তানের প্রধান আশ্রয়স্থল। মা-বাবার ভালোবাসা ছাড়া সন্তানের জীবনে নেমে আসে হতাশা।
উদ্দীপকে সেঁজুতি ও ‘মিনু’ গল্পের মিনু তাদের নিঃসঙ্গতা দূর করতে প্রকৃতির সঙ্গে মিতালি করেছে। সেঁজুতির মা-বাবা দুজনেই চাকরিজীবী হওয়ায় সেঁজুতি নিঃসঙ্গতায় ভোগে। বন্ধুহীন সেঁজুতি মনের কথা ব্যক্ত করে জারুল গাছ, গাছে উড়ে আসা পাখির সাথে। স্বপ্ন দেখে পাখি হয়ে আকাশে ওড়ার। আর মিনু মা-বাবা না থাকায় নিঃসঙ্গ। আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় পেলে  কেউ তাকে আপন করে নেয়নি। বোবা-কালা বলে নিজের মনের কথা কাউকে বলতে পারে না। তাই  ভোরবেলার সূর্য, শুকতারা, হলদে পাখি, পিঁপড়া, রান্নাঘর এদের কাছেই নিজেকে ব্যক্ত করেছে।
মিনু ও সেঁজুতি দুজনেই প্রকৃতিকে তাদের বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করেছে।  উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে বলা যায়, প্রেক্ষাপট ভিন্ন হলে প্রকৃতির উপাদানগুলোই যেন তাদের আশ্রয়ের প্রতীক।

প্রশ্ন- ৫    গৃহকর্তার উদারতা 


রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘পোস্টমাস্টার’ গল্পে পোস্টমাস্টারের কাজের মেয়ে ‘রতন’। এই দুনিয়াতে পোস্টমাস্টার ছাড়া রতনের আর কেউ নেই। পোস্টমাস্টারও রতনকে কাজের মেয়ে মনে করে না। সে রতনের সাথে গল্প করে। তার কাজে সাহায্য করে। এমনকি পোস্টমাস্টার রতনকে পড়াশোনাও শেখায়।
ক. বনফুলের প্রকৃত নাম কী?
খ. গৃহপরিচারিকার কাজে মিনুর ভূমিকা কেমন ছিল- ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের রতন ও ‘মিনু’ গল্পের মিনুর অবস্থানগত পার্থক্য ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “পোস্টমাস্টার ও ‘মিনু’ গল্পের পিসেমশাই দুজন বিপরীত প্রান্তের মানুষ” মন্তব্যটি যাচাই কর।
 ক বনফুলের প্রকৃত নাম বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়।

 খ গৃহপরিচারিকার কাজে মিনু অত্যন্ত দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছে।
দশ বছরের বোবা-কালা মেয়ে মিনু পেটভাতায় সর্বগুণান্বিতা চাকরানির মতো খাটে পিসিমার বাড়িতে। সে ভোর চারটার সময় উঠে কয়লা ভাঙতে শুরু করে। তারপর উনুন জ্বালিয়ে দেয়। রান্নাঘরের বাসনগুলো অনেক ভালোবাসে মিনু। তুবড়ে যাওয়া ঘটিটার জন্য তার মায়া হয়। গেলাসগুলো মাজা বা ধোয়ার সময় তার মনে হয় সে যেন ছোট ছেলেদের স্নান করাচ্ছে। গৃহের কাজে মিনুর একাগ্রতা দেখে মনে হয় সত্যিই এক দায়িত্বশীল গৃহপরিচারিকা সে।

 গ সুবিধাবঞ্চিত মিনুর সাথে রতনের অবস্থানগত ভিন্নতা তুলে ধরতে হবে।

 ঘ ‘পোস্টমাস্টার’ গল্পের পোস্টমাস্টার ও ‘মিনু’ গল্পের যোগেন বসাক উভয়ের চরিত্রগত বৈশিষ্ট্য তুলে ধরতে হবে।

প্রশ্ন- ৬  প্রকৃতির সান্নিধ্য 


৫ বছর বয়সে নিতু মা-বাবা দুজনকেই হারায়। এরপর চাচা নিতুকে তার বাড়িতে নিয়ে আসে। নিতু পোলিও রোগে আক্রান্ত হওয়ায় চলাচল ঠিকমতো করতে পারত না। বাসার সবাই তাকে ভালোবাসত। সে খুঁড়িয়ে বাগানে গিয়ে ফুল পাখি ও গাছের সাথে মনের কথা বলত।

ক. সাহিত্যে কর্মের স্বীকৃতি হিসেবে বনফুল কী উপাধিতে ভূষিত হন?
খ. উনুনকে মিনু কেন রাক্ষসী মনে করে?
গ. উদ্দীপকের নিতু ও ‘মিনু’ গল্পের মিনুর কী মিল খুঁজে পাওয়া যায়- ব্যাখ্যা কর।
ঘ. নিতু ও মিনুর মধ্যে কে বেশি পরিশ্রমী? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দিয়ে বুঝিয়ে দাও।

 ক সাহিত্য কর্মের স্বীকৃতি হিসেবে বনফুল পদ্মভূষণ উপাধিতে ভূষিত হন।

 খ উনুনে যা দেওয়া হয় সেটাকেই উনুন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এজন্য উনুনকে মিনু রাক্ষসী মনে করে।
উনুনে ঘুঁটের ওপর কেরোসিন তেল ছড়িয়ে দিয়ে আগুন দিলে অতি সহজেই ঘুঁটেগুলো জ্বলে ওঠে। এ সময় জ্বলন্ত কয়লাগুলোকে দেখে মিনুর মনে হয় রক্তাক্ত মাংস আর আগুনের লাল আভাকে মনে হয় রাক্ষসীর তৃপ্তি। সবকিছু পুড়িয়ে ছারখার করে দেওয়ার কারণে উনুনকে মিনর কাছে রাক্ষসী মনে হয়।
 
 গ মিনু ও নিতু উভয়েই প্রকৃতির কাছে নিজের আবেগ-অনুভূতি ভাগাভাগি করেছেন।-এ বিষয়টি আলোচনা করতে হবে।

 ঘ নিতু ও সম্পর্কিত আলোচনার মধ্য দিয়ে মিনু যে অধিক পরিশ্রমী সে বিষয়টি ফুটিয়ে তুলতে হবে।

Previous Post Next Post

نموذج الاتصال