পঞ্চম শ্রেণি, বাংলা ১ম পত্র, অনুশীলনীর প্রশ্নের উত্তর
কবিতা- সংকল্প
অনুশীলনীর প্রশ্নের উত্তর
১. কবিতাটির মূলভাব জেনে নিই।
অসীম বিশ্বকে জানার এক অদম্য কৌতূহল মানুষের। কিশোরেরও তাই। সে জানতে চায় বিশ্বের সকল কিছুকে, আবিষ্কার করতে চায় অসীম আকাশের সকল অজানা রহস্যকে। সে বুঝতে চায় কেন মানুষ ছুটছে অসীমে, অতলে, অন্তরীক্ষে। বীর কেন জীবনকে অনায়াসে উৎসর্গ করে, কেন বরণ করে মৃত্যুকে। সে জানতে চায় ডুবুরি কেন ডুবছে, দুঃসাহসী কেন উড়ছে। তাই কিশোর মনে মনে প্রতিজ্ঞা করে- সে বদ্ধ ঘরে বসে থাকবে না। পৃথিবীটাকে সেও ঘুরে ঘুরে দেখবে।
২. শব্দগুলো পাঠ থেকে খুঁজে বের করি, অর্থ বলি এবং বাক্য তৈরি করে বলি ও লিখি।
সংকল্প, বদ্ধ, যুগান্তর, দেশান্তর, কিসের নেশায়, বরণ, মরণ-যন্ত্রণা, ডুবুরি, দুঃসাহসী, চন্দ্রলোক, অচিনপুর, ফেড়ে।
উত্তর :
শব্দ অর্থ বাক্য
সংকল্প - তীব্র ইচ্ছা, প্রতিজ্ঞা। ভালো কাজ করার জন্য সংকল্প থাকা দরকার।
বদ্ধ - বন্ধ। বদ্ধ ঘরে আলো বাতাস ঢুকতে পারে না।
যুগান্তর -এক যুগের পর আরেক যুগ, অন্য যুগ। দেশি গণনা মতে ১২ বছরে এক যুগ হয়। অনেক যুগ-যুগান্তর পার হয়ে আমরা বর্তমান সময়ে এসেছি।
দেশান্তর - এক দেশ থেকে আরেক দেশ। অন্য দেশ। বড় হলে আমি দেশ-দেশান্তরে ঘুরে বেড়াব।
কিসের নেশায় - কী উদ্দেশ্যে, কী আকর্ষণে। কিসের নেশায় তুমি এমন ছুটোছুটি করছ?
বরণ - কোনো কিছু সাদরে গ্রহণ। পয়লা বৈশাখে আমরা বাংলা নতুন বছরকে বরণ করে নিই।
মরণ-যন্ত্রণা - মৃত্যুর মতো কঠিন যন্ত্রণা। যারা সাহসী তারা মরণ-যন্ত্রণাকে ভয় পায় না।
ডুবুরি - যারা গভীর পানিতে ডুব দিয়ে কোনো জিনিস উদ্ধার করে আনে। মেঘনা নদীর তলদেশ থেকে ডুবুরিরা ডুবে যাওয়া লঞ্চটি উদ্ধার করেছেন।
দুঃসাহসী - অত্যধিক সাহসী। দুঃসাহসী মুক্তিযোদ্ধারা দেশ স্বাধীন করেছেন।
চন্দ্রলোক - চাঁদের দেশ। মানুষ এখন চন্দ্রলোক ছাড়িয়ে মঙ্গল গ্রহেও যাত্রা করছেন।
অচিনপুর - অচেনা জায়গা। এক ছিল অচিনপুরের রাজকন্যা।
ফেড়ে - চিরে, দুই ফাঁক করে। কাঠুরে কুড়াল দিয়ে কাঠটা ফেড়ে ফেলল।
৩. একই শব্দের বিভিন্ন অর্থ শিখি ও বাক্য তৈরি করি।
সংকল্প - প্রতিজ্ঞা ভালো কাজ করার জন্য সবাইকে মনে মনে প্রতিজ্ঞা করা উচিত।
বদ্ধ - বন্ধ সে বন্ধ জানালাটি খুলে দিল।
সিন্ধু - সাগর সাগরে ঝিনুক পাওয়া যায়।
জগৎ - পৃথিবী পৃথিবীর সবাই সুখী হোক।
ইঙ্গিত - ইশারা শিক্ষক ক্লাসে চুপ থাকতে ইশারা করলেন।
বরণ - সাদরে গ্রহণ আমরা অতিথিকে সাদরে গ্রহণ করলাম।
৪. নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর বলি ও লিখি।
ক. কবি বদ্ধ ঘরে থাকতে চান না কেন?
উত্তর : বিশ্বের সব অজানা রহস্যকে জানার অদম্য কৌতূহল রয়েছে কবির। তাঁর ইচ্ছা গোটা জগৎটা ঘুরে দেখবেন। তাই কবি বদ্ধ ঘরে থাকতে চান না।
খ. যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে মানুষ ঘুরছে বলতে কী বোঝ লেখ।
উত্তর : যুগান্তর অর্থ হলো এক যুগের পর আরেক যুগ। যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে মানুষ ঘুরছে বলতে বোঝায় মানুষ যুগের পর যুগ পার হয়ে নতুন দিনের পানে এগিয়ে চলছে।
গ. চন্দ্রলোকের অচিনপুরে কারা যেতে চায়?
উত্তর : দুঃসাহসীরা চন্দ্রলোকের অচিনপুরে যেতে চায়।
ঘ. কিসের আশায় বীর মরণকে বরণ করছে?
উত্তর : বীরেরা পৃথিবীর সব রহস্যকে জানতে চায়। মানুষের জীবনকে সুখী ও সুন্দর করতে চায়। সেই আশাতেই তারা নিজেদের জীবনকে অনায়াসে বিপন্ন করছে।
ঙ. কবি হাতের মুঠোয় পুরে কী এবং কেন দেখতে চান?
উত্তর : কবি হাতের মুঠোয় পুরে বিশ্বজগৎ দেখতে চান। এই বিশ্বজগৎ অসীম রহস্যে ঘেরা। সমস্ত রহস্যকে জানার জন্য কবির কৌতূহলের শেষ নেই। এ কারণেই তিনি বিশ্বজগৎকে হাতের মুঠোয় পুরে দেখতে চান।
৫. ক্রিয়াপদের সাধু ও চলিত রূপ শিখি।
চলিত রূপ সাধু রূপ চলিত রূপ সাধু রূপ
আঁকব Ñ আঁকিব ছুটছে Ñ ছুটিতেছে
দেখব Ñ দেখিব আসছে Ñ আসিতেছে
ঘুরছে Ñ ঘুরিতেছে চলছে Ñ চলিতেছে
মরছে Ñ মরিতেছে
৬. ক্রিয়ার কাল সম্পর্কে জেনে নিই।
ক) আমি কাজটি করি।
আমি কাজটি করেছিলাম।
আমি কাজটি করব।
উপরের বাক্যগুলোতে ব্যবহৃত করি, করেছিলাম ও করব, করা ক্রিয়াপদটির বিভিন্ন রূপ। যে সময়ে ক্রিয়া বা কাজটি সম্পন্ন হয় সেই সময়টিকেই ক্রিয়ার কাল বোঝানো হয়েছে। যেমন বর্তমান কাল, অতীত কাল, ভবিষ্যৎ কাল।
খ) নিচের বাক্যের ক্রিয়াবাচক শব্দগুলির নিচে দাগ দিই।
আমি বড় হয়ে মানুষের জন্য কাজ করতে চাই।
আমি আমার দক্ষতা অপরের উপকারে ব্যবহার করি।
কিশোর বর্ষাকালে তার গ্রামে গাছ লাগাবে।
তরুণ চিকিৎসক হবে। মানুষের চিকিৎসা করবে।
উত্তর :
আমি বড় হয়ে মানুষের জন্য কাজ করতে চাই।
আমি আমার দক্ষতা অপরের উপকারে ব্যবহার করি।
কিশোর বর্ষাকালে তার গ্রামে গাছ লাগাবে।
তরুণ চিকিৎসক হবে। মানুষের চিকিৎসা করবে।
গ) নিচের ভবিষ্যৎ কালবাচক ক্রিয়াপদগুলোকে বর্তমান ও অতীত কালবাচক ক্রিয়াপদে রূপান্তর করি।
থাকব, দেখব, শুনব, খাব, বেড়াব, ঘুরব, পড়ব, খেলব, চড়ব, নামব, ধরব, হাসব, ভবিষ্যৎ, বর্তমান অতীত
উত্তর :
ভবিষ্যৎ বর্তমান অতীত
থাকব থাকি থেকেছিলাম
দেখব দেখি দেখেছিলাম
শুনব শুনি শুনেছিলাম
খাব খাই খেয়েছিলাম
বেড়াব বেড়াই বেড়িয়েছিলাম
ঘুরব ঘুরি ঘুরেছিলাম
পড়ব পড়ি পড়েছিলাম
খেলব খেলি খেলেছিলাম
চড়ব চড়ি চড়েছিলাম
নামব নামি নেমেছিলাম
ধরব ধরি ধরেছিলাম
হাসব হাসি হেসেছিলাম
৭. শব্দগুলোর বানান লিখি।
বরণ, মরণ, যন্ত্রণা (র-এর পরে ‘ণ’ বসে), বদ্ধ, যুগান্তর, সিন্ধু, সেঁচে, বিশ্বজগৎ, ইঙ্গিত।
৮. কবির সংকল্পগুলো লিখি।
উত্তর : কবির সংকল্পগুলো হলো :
ক) কবি বদ্ধ ঘরে বসে থাকবেন না।
খ) কবি জগৎটাকে ঘুরে ঘুরে দেখবেন।
গ) যুগে যুগে মানুষ কীভাবে এগিয়ে যাচ্ছে সে কথা জানবেন।
ঘ) মানুষ কীভাবে দেশ-দেশান্তরে ছুটে বেড়াচ্ছে সে সম্পর্কে জানবেন।
ঙ) বীরেরা কিসের আশায় জীবন বিপন্ন করছে সে কথা জানবেন।
চ) বীর ডুবুরি কীভাবে সিন্ধু সেঁচে মুক্তা সংগ্রহ করে সেই কৌশল সম্পর্কে জানবেন।
ছ) দুঃসাহসীরা কীভাবে চাঁদের দেশ থেকে ঘুরে আসে সে রহস্য জানবেন।
জ) মঙ্গল গ্রহের অজানা রহস্য অনুসন্ধান করবেন।
ঝ) পাতালপুরী ও মহাকাশের সব অজানা রহস্য আবিষ্কার করবেন।
ঞ) বিশ্বজগৎ হাতের মুঠোয় বন্দি করে সব কৌতূহল মেটাবেন।
৯. আমার সংকল্পগুলো লিখি।
উত্তর : আমার সংকল্পগুলো হলো :
ক) মনোযোগ দিয়ে লেখাপড়া করব।
খ) মানুষের সাথে ভালো ব্যবহার করব।
গ) গুরুজনকে শ্রদ্ধা করব এবং ছোটদের স্নেহ করব।
ঘ) মানুষের বিপদে-আপদে এগিয়ে যাব।
ঙ) মানুষের অনিষ্ট করব না।
চ) দেশকে ভালোবাসব।
ছ) মানুষের মতো মানুষ হব।
জ) বড় হয়ে পৃথিবীটাকে ঘুরে ঘুরে দেখব।
১০. কবিতাটি আবৃত্তি করি ও মুখস্থ লিখি।
উত্তর : পাঠ্য বই থেকে কবির নামসহ কবিতাটি মুখস্থ কর। শিক্ষকের সহায়তা নিয়ে নিজে নিজে আবৃত্তি করার চেষ্টা কর।