জ্ঞানমূলক
নমুনা প্রশ্নোত্তর
১. কোনটি
কবিকে আকুল করে? - ফুলের
গন্ধ।
২. কবির
কাছে মাতৃভূমি কীসের মতো? - মায়ের
মতো।
৩. কার
জনম সার্থক? - কবির।
৪. কবি
দেশকে কী বলে সম্বোধন
করেছেন? - মা।
৫. দেশের
ছায়ায় কার অঙ্গ জুড়ায়?
- কবির।
৬. বনের
ফুলের ঘ্রাণ কী রকমের?
- আকুল করা।
৭. চাঁদ
কোথায় ওঠে? - গগনে (আকাশে)।
৮. আঁখি
মেলে কবি প্রথম কী
দেখেছেন? - দেশের আলো।
৯. কবির
চোখ কী দেখে জুড়াল?
- দেশের আলো দেখে।
১০. ‘জন্মভূমি’
কবিতা কোন দেশকে উদ্দেশ্য
করে লেখা? - বাংলাদেশকে।
১১. দেশের
আলোতে নয়ন রেখে কবি
কী করবেন? - নয়ন মুদবেন।
১২. ‘মুদব
নয়ন’
দ্বারা কবি কী ইঙ্গিত
করেছেন? - মৃত্যুকে।
১৩. কবি
তার মাতৃভূমির কী খোঁজেননি? - ধনরতœ।
১৪. জন্মভূমির
ছায়ায় এসে কার অঙ্গ
জুড়ায়? - কবির।
গুরুত্বপূর্ণ
চরণের ভাবার্থ
‘সার্থক জনম আমার
জন্মেছি এই দেশে।’
ভাবার্থ
: ‘সার্থক জনম আমার জন্মেছি
এই দেশে’ পঙ্ক্তিটি
দ্বারা কবি বাংলাদেশে জন্ম
গ্রহন করে নিজের জনমকে
সার্থক মনে করেছেন।
কবি তার জন্মভূমিকে অনেক
বেশি ভালোবাসেন। হৃদয়ের
মাঝে তিনি জন্মভূমির প্রতি
গভীর টান অনুভব করেন। এজন্যই
জন্মভূমিতে কবি পেয়েছেন জীবনের
স্বাদ। এজন্যই
কবি নিজের জনমকে সার্থক
হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন।
‘কোন বনেতে জানি
নে ফুল/গন্ধে এমন
করে আকুল।’
ভাবার্থ
: “কোন বনেতে জানি নে
ফুল/গন্ধে এমন করে
আকুল”
পঙ্ক্তিদ্বয় দ্বারা কবি তার
দেশের সৌন্দর্য অর্থাৎ ফুলের প্রাচুর্যকে প্রকাশ
করেছেন।
কবির দেশে অনেক প্রকারের
ফুল আছে। সব
বনেই নানা রঙের নানা
গন্ধের ফুল ফোটে।
কোন বনে কোন ফুল
ফোটে, কবি সেটা ঠিক
মনে করতে পারেন না,
কিন্তু ফুলের ঘ্রাণে কবি
আকুল হয়ে যান।
‘কোন গগনে ওঠে
রে চাঁদ এমন হাসি
হেসে।’
ভাবার্থ
: : ‘কোন গগনে ওঠে রে
চাঁদ এমন হাসি হেসে’
এ পঙ্ক্তিটিতে কবি জন্মভূমির প্রতি
সৌন্দর্যের অভিভূত হয়ে একথা
ব্যক্ত করেছেন। কবি
বলেছেন চাঁদ এভাবে আর
পৃথিবীর কোথাও উদয় হয়
না।
দেশের
প্রতি কবির মনে অনেক
বেশি আবেগ, ভালোবাসা আর
শ্রদ্ধা রয়েছে। যার
কারণে দেশের প্রকৃতির প্রতিটি
বস্তুই কবিকে বিমোহিত করে। কবি
দেশের আকাশে চাঁদ দেখে
ভেবেছেন, এত সুন্দরভাবে চাঁদ
পৃথিবীর আর কোনো দেশেই
উদয় হয় না।
‘জানি নে তোর
ধন রতন/আছে কি
না রানির মতন।’
ভাবার্থ
: ‘জানি নে তোর ধনরতন/আছে কি না
রানির মতন।’ পঙ্ক্তি দুটি দ্বারা কবির
মাতৃভূমির সম্পদের প্রতি তার অবহেলা
এবং প্রকৃতি ও জন্মভূমির প্রতি
তার অপরিসীম ভালোবাসা
প্রকাশ পেয়েছে।
কবির জন্মভূমিতে অনেক ধনসম্পদ লুকানো
আছে কি না, এটা
নিয়ে কবির মনে আগ্রহ
নেই। মাতৃভূমিতে
সম্পদ থাক বা না
থাক, এর প্রতি কবির
কোনো প্রশ্ন নেই।
মাতৃভূমিই কবির কাছে সবচেয়ে
বড় সম্পদ। আলোচ্য
পঙ্ক্তি দুটি দ্বারা মাতৃভূমির
প্রতি কবির প্রবল বিশ্বস্ততা
আর ভালোবাসা প্রকাশ পেয়েছে।
‘শুধু জানি আমার
অঙ্গ জুড়ায় তোমার ছায়ায়
এসে।’
ভাবার্থ
: জন্মভূমির শীতল ছায়ায় কবির
অঙ্গ জুড়িয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে
আলোচ্য উক্তিটি করা হয়েছে।
এদেশের
অপরূপ রূপে কবি মুগ্ধ
ও অভিভূত। এমন
একটি সুন্দর দেশে জন্মগ্রহণ
করে কবি নিজেকে সার্থক
মনে করেন। বাংলার
আকাশ, বাতাস, মাঠ, পাহাড়,
পর্বত, ফুলের গন্ধ, চাঁদের
আলো সবই কবিকে আকৃষ্ট
করে। কবির
দৃষ্টিতে জন্মভূমি মাতৃসম, তাই মা এবং
দেশ উভয়ের প্রতি তিনি
একই ভালোবাসা পোষণ করেন।
জন্মভূমিতে কবির অঙ্গ জুড়ায়
কারণ দেশ তথা দেশের
সব কিছুই কবির কাছে
আদরণীয়, জন্মভূমির শীতল ছায়ায় কবির
অঙ্গ জুড়িয়ে যায়।
‘ওই আলোতে নয়ন
রেখে মুদব নয়ন শেষে।’
ভাবার্থ
: ‘ওই আলোতে নয়ন রেখে
মুদব নয়ন শেষে’ বলতে
কবির মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত
স্বদেশের আলো-বাতাসে নিজের
শরীর জড়িয়ে রাখার ইচ্ছাকে
বোঝানো হয়েছে।
জন্মভূমির
বিচিত্র সৌন্দর্যের অফুরন্ত উৎস হচ্ছে বাগানের
ফুল, চাঁদের জ্যোৎস্না, সূর্যের
আলো। এসব
কবির মনকে আকুল করে। এদেশের
মাটিতে কবির জন্ম।
এর সূর্যালোকে কবির চোখ জুড়িয়েছে। তাই
তিনি এই আলোতেই, এই
দেশের মাটিতেই চিরনিদ্রায় শায়িত হতে চান। কবির
মৃত্যুপূর্ব ইচ্ছা ব্যক্ত হয়েছে
আলোচ্য উক্তিটিতে।
অনুধাবনমূলক
নমুনা প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন
-১ : কবি
দেশের আলোতে নয়ন রেখে
মৃত্যুবরণের ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন
কেন?
উত্তর
: দেশের
প্রতি অগাধ ভালোবাসা থাকার
কারণে কবি দেশের আলোতে
চোখ রেখে মৃত্যুবরণ করার
ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন।
জন্মের
পর চোখ মেলে প্রথমে
কবি দেশের আলো দেখেছেন,
যা কবির চোখ জুড়িয়ে
দিয়েছে। দেশকে
কবি ভালোবেসেছেন সমস্ত সত্তা দিয়ে
এবং দেশের প্রতি অসীম
ভালোবাসা থাকার কারণে দেশের
আলোতে চোখ রেখে মৃত্যুবরণ
করার ইচ্ছা করেছেন।
প্রশ্ন
-২ : ‘জন্মভূমি’
কবিতায় কোন দিকটি ফুটে
উঠেছে? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর
: ‘জন্মভূমি’
কবিতায় জন্মভূমির প্রতি কবির মমত্ব
ও দেশপ্রেমের গভীর আবেগ ফুটে
উঠেছে।
কবি তার জন্মভূমিকে মায়ের
মতো ভালোবাসেন। এদেশের
প্রাকৃতিক শোভা কবিকে মুগ্ধ
করে। এদেশের
প্রকৃতির উজ্জ্বল আলো আর মিষ্টি
বাতাসে কবির দেহ ও
মন জুড়িয়ে যায়।
এদেশের সুন্দর প্রকৃতি কবির
মনে যে শিহরণ জাগায়
তাতে কবি আনন্দিত।
কবির জন্মভূমি অজস্র ধনরতেœর
আকর কি না তাতে
তার কিছু আসে যায়
না। কারণ
তিনি তার মাতৃভূমির স্নেহছায়ায়
যে সুখ পেয়েছেন তা
তার অঙ্গ জুড়িয়েছে।
কবিতাটির প্রতিটি ছত্রে কবির দেশপ্রেমের
গভীর আবেগ ফুটে উঠেছে।
প্রশ্ন
-৩ : জন্মভূমির
ছায়ায় এসে কবির অঙ্গ
জুড়ায় কেন?
উত্তর
: জন্মভূমির
ছায়ায় এসে কবি অপরূপ
শান্তি অনুভব করেন বলে
এর ছায়ায় এসে কবির
অঙ্গ জুড়ায়।
মাতৃভূমির
স্নেহ ছায়ায় কবির অতুলনীয়
সুখ ও শান্তি লাভ
করেন, মাতৃভূমির ধন রতেœ কবির
কোনো আগ্রহ নেই।
তাই এর স্নেহ ছায়ায়
কবির অঙ্গ জুড়ায়।
প্রশ্ন
-৪ : কী
দেখে প্রথমেই কবির চোখ জুড়ালো?
উত্তর
: এদেশের
প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যে কবি
মুগ্ধ। তাই
এদেশের সূর্যের উজ্জ্বল আলো প্রথম দেখায়
তার চোখ জুড়িয়ে গেল।
কবি জন্মগ্রহণ করে যখন প্রথম
চোখ খুলে দেখেছেন জন্মভূমির
সূর্য আলোর পসরা সাজিয়ে
তাকে অভ্যর্থনা জানিয়েছে। কবির
কাছে জন্মভূমি মায়ের মতো, মায়ের
পানে তাকালে সন্তানের হৃদয়
যেমন আনন্দে পরিপূর্ণ হয়,
চোখ জুড়িয়ে যায়।
ঠিক তেমনি জন্মের পর
চোখ মেলে যখন দেশমাতার
আলো দেখেছেন তখন কবির চোখও
একইভাবে জুড়িয়ে গেছে।