শ্রেণি: চতুর্থ, ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা, তৃতীয় অধ্যায়- আখলাক, রচনামুলক প্রশ্ন

চতুর্থ শ্রেণি
তৃতীয় অধ্যায়- আখলাক
রচনামুলক প্রশ্ন :

১.    আমাদের মহানবি (স) এর চরিত্র কেমন ছিল?
উত্তরঃ আমাদে মহানবি (স) ছিলেন উত্তম চরিত্রের অধিকারী। তিনি গরিব, দুঃখি ও এয়াতিমদের সাহায্য করতেন তিনি মেহমানের সম্মান করতেন। বড়দের সম্মান করতেন। ছোটদের ¯েœহ করতেন। তিনি সর্বদা সত্য কথা বলতেন। তিনি ছিলেন মজলুমের পরম বন্ধু। মহানবি (স) এর চরিত্র সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন :- নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য আল্লাহর রসুলের মদ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।”
মহানবি (স) বলেন, “উত্তম চারিত্রিক গুনাবলির পূর্নতা দানে জন্যই আমি প্রেরিত হয়েছি।

২.    আব্বা-আম্মার সাথে কিরূপ ব্যবহার করব?
উত্তরঃ আব্বা-আম্মা আমাদের সবচেয়ে আপনজন। তাঁরা আমাদের জন্য অনেক কষ্ট করেন। ¯েœহ-মমতা ও দরদ দিয়ে লালনপালন করে। আমাদের অসুখ-বিসুখ হলে তাঁরা সেবাযতœ করেন। তদারা সবসময় আমাদে রকল্যাণ কামনা করন। দোয়া করেন। তাই সবসময় আব্বা-আম্মার সাথে বালো ব্যবহার করা আমাদে কর্তব্য। আমরা তাঁদের সম্মান করব, শ্রদ্ধা করব। তাঁদে সাথে রাগারাগি করব না। ঝগড়াবিবাদ করব না, কর্কশ ভাষায় কথা বলব না। তাদে মনে কষ্ট দেব না। সবসময় হসিমুখে কথা বলব। বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় ও ফিরে এসে সালাম দেব। সুন্দর সুন্দর কথা বলব। আল্লাহ তায়া বলেন- “তুমি আব্বা-আম্মার সাথে সুন্দর সুন্দর ব্যবহার কর।”

৩.    শিক্ষকের সাথে দেখা হলে কী করব?
উত্তরঃ আব্বা-আম্মার মতো শিক্ষক আমাদে আপনজন। তিনি আমাদে প্রকৃত মানুষরূপে গড়ে তোলেন। তাঁর সাথ দেখা হলে তাঁকে সালাম দেব। তাঁকে বালোমন্দ জিজ্ঞাসা করব। তিনি শ্রেণিকক্ষে যা পড়াবেন মনোযোগ দিয়ে শুনব। তাঁর সথে সবসময় ন¤্রভাবে কথা বল। তিনি শ্রেণিতে থাকা অবস্থায় যদি বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন হয় তাহলে তাঁর অনুমতি নিয়ে যাব। তিনি অসুখ হলে তাঁকে দেখতে যাব।

৪.    দাদা-দাদি ও নানা-নানি আমাদের কী করেন?
উত্তরঃ আব্বিা-আম্মার মতো দাদা-দাদি ও নানা-নানী আমাদের আপনজন। তাঁরা আমাদের আদর করেন। তাঁরা আমদে রজন্য অনেক কস্ট করেন। ¯েœহ-মমতা ও দরদ দিয়ে লালপালন করেন। আমাদের অসুখ-বিসুখ হরে তাঁরা সেবাযতœ করেন। পিদ-আপদে তারা সবার আগে এগিয়ে আসেন। তারা সবসময় আমাদে কল্যান কামনা করেন, দায়া করেন।

৫.    মহানবি (স) বড়দের সথে কেমন ব্যবহার করতেন?
উত্তরঃ মহানবি (স) বড়দের সম্মান করতেন, শ্রদ্ধা করতেন। তিনি বড়দের সালাম দিতেন। তাদের আদেশ নিষেধ মেনে চলতেন। কখনো বড়দের সাথে বেয়াদবি করতেন না। বড়রা দাঁড়িয়ে থাকলে তিনি নিচে দাঁড়িয়ে তাদের বসার ব্যবস্থা করে দিতেন। সকলের সাথে ভালো ব্যবহার করতেন। মহানবি (স) বলেন- “যে ছোটদের ¯েœহ করে না, আর বড়দের সম্মান দেখায় না, সে আমার উম্মমত না।”

৬.    মহানবি (স) ছোটদের সাথে কেমন ব্যবহার করতেন?
উত্তরঃ মহানবি (স) বড়দের সম্মান করতেন, ছোটদের ¯েœহ করতেন। ছোটদের কল আবদার পূরণ করার চেষ্ট করতেন। তাদেরকে সুন্দর আচরণ শিক্ষা দিতেন, তাদে সুশিক্ষা দিতেন। ন্যয়-নীতি শিক্ষা দিতেন। তাদের সাথে সুন্দর ব্যবহার করতেন। মহানবি (স) বলেন- “যে ছোটদের ¯েœহ করে না, আর বড়দের সম্মান দেখায় না, সে আমার উম্মমত না।”

৭.    আমরা কাজের লোকদের সাথে কেমন ব্যবহার করব?
উত্তরঃ আমরা কাজের লোকদের সাথে সব সময় ভালো ব্যবহার করব। মহানবি (স) কাজের লোকদের সম্পর্কে বলেছেন- “যারা কাজ করে তার তোমাদের ভাই। নিজে যা খাবে তাদের তা খাওয়াবে। নিজে যা পরিধান করবে তাদেরও তা পরতে দেবে। কাজকর্মে তাদের সাহায্য করবে। তাদের বেমি কষ্ট দেবে না। তাদের মর্যদা করবে। তাদের শ্রমের মর্যাদা দেবে।” আমরা কাজের লোকদের সাথে কেমন ব্যবহার করব তা নিচে দেয়া হলো:-
ক. আমরা কজের লোকদের সাথে খারাপ আচরণ করব না।
খ. তাদেরকে শারীরিকভাবে কষ্ট দেবনা।
গ. তাদেরকে গালাগালি করব না।
ঘ. তাদের পাওনা সঠিকভাবে বুঝিয়ে দেব।
ঙ. তাদের কাজে যথাসম্ভব সাহায্য করব।
চ. নিজেরা যা খাব তাদেরকেও তা খেতে দেব।
ছ. তাদের শিক্ষার সুযোগ করে দেব।
জ. কাজের লোকেরা বয়সে বড় হলে শ্রদ্ধা করব এবং ছোট হলে স্নেহ করব।
ঝ. নিজেরা যা পরব তাদেরকে তা পরতে দে।
ঞ. তারা অসুস্থ হলে তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করব এং তাদের সেবা যত্ন করব।

৮.    প্রতিবেশী ক্ষুধার্ত হলে আমরা কী করব?
উত্তরঃ আমাদের আশেপাশে যারা বসবাস করে তার আমাদের প্রতিবেশী। বাস, ট্রেন, লঞ্চ, স্টিমারে সহযাত্রী আমাদে প্রতিবেশী। বিভিন্ন ছাত্রাবাসে অবস্থানকারী একে অপরের প্রতিবেশীর মতো। আমরা প্রতিবেশীর সাথে ভালো ব্যবহার করব। কেউ ক্ষধার্ত হলে তাকে কাদ্য দেব। তাকে সাধ্য মত সাহায্য করব। মহানবি (স) বলেছেন- “যে নিজে পেটভরে কায় অথচ তাদের প্রতিবেশী ক্ষধার্ত থাকে সে মুমিন নয়।” মহানবি (স) আরও বলেন, “আল্লাহর কাছে সেই সবচেয়ে উত্তম, যে তার প্রতিবেশীর কাছ উত্তম।”
আমরা সর্বদা প্রতিবেশীর সাথে ভালো ব্যবহার করব।, বিপদে সাহায্য করব, অসুখ হলে সেবা করব, ঝগড়া করব না, কষ্ট দেব না, মিলেমিশে থাকব, শান্তি বজায় রাখব।

৯.    আমরা রোগীর কী করব?
উত্তর ঃ আমাদের বাড়িতে আব্বা-আম্মা, দাদা-দাদি, ভাইবোন আছেন। বাড়ির আশেপাশে প্রতিবেশীরা আছেন। বিদ্যলয়য়ে সহপাঠীরা আছে। আতÍ¥ীয় স্বজন ও কেলার সাথি আছে। আমাদে মদ্যে কারো জ্বর হলে বা অন্য কোনো রোগ হলে শরীর দুর্বল হয়ে যায়। অসহায় বোধ করি। জ্বর হলে মাথায় পানি দেব। জ্বরের মাত্রা বেশি হলে সমস্ত শরীর ভেজা কাপড় দিয়ে মুছিয়ে দিব। ডাক্তারের পরামর্শে ওষুধ খেতে দেব। রোগীর সেবা করব। রোগ মুক্তির জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করব। মহানবি (স) সবসময় রোগীর সেবা করতেন। মহানবি (স) বলেছেন- তোমরা রোগীর সেবা কর।”
আমরা রোগীর সেবাযতœ করব, তার খোঁজ খবর নেব, আল্লাহর কাছে আরোগ্যে জন্য দোয়া করব।

১০.    সত্যবাদী কাকে বলে?
উত্তর ঃ সত্য কথা বলা মহৎ গুণ। যে সত্য কথা বলে তাকে সত্যবাদী বলে। সত্যবাদীকে আরবিতে (صادق) সাদিক বলা হয়। যে সত্যকথা বলে তাকে সকলে ভালোবাসে। সকলে তাকে বিশ্বাস করে। আল্লাহও তাকে ভালোবাস। সে আল্লাহর কাছে পি্িরয়। পৃথিবীতে সে করলের কাছে প্রিয় ও সম্মানিত । পরকালে সে জান্নাত লাভ করবে। আমাদের মহানবি (স) ছোটবেলা থেকে আজীবন সকলের স্যবাদী বলে পরিচিত ছিলেন। তিনি সবসময় সত্য কথা বলেছেন। অন্যদেরকে সত্য কথা বলতে নির্দেশ দিয়েছন।
মহানবি (স) বলেন, “সত্য মানুষকে মুক্তি দেয়, আর মিথ্যা ধ্বংস করে।” মহানবি (স) আরও বলেন- “তোমরা সবসময় সত্য বলবে। কেননা সত্য পুন্যের পথে নিয়ে যায়। আর পুন্য জান্নাতে নিয়ে যায়।”
১১.    সব পাপের মূল কোনটি/
উত্তরঃ মিথ্যা সকল পাপের মূল। যে মিথ্যা কথা বলে তাকে মিথ্যাবাদী বলা হয়। আরবিতে তাকে (كاذب) কাযিব বলা হয়। মিথ্যাবাদীকে কেউ ভালোবাসেনা, বিশ্বাস করে না। সকলে তাকে ঘৃণা করে। অপছন্দ করে। তার বিপদে কেউ সাহায্য করে না। আল্লাহও তাকে ঘৃণা করে, ভালোবাসে না। পরকালে তার জন্য জাহান্নাম।

১২.    ওয়াদা পালন কর  অর্থ কী?
উত্তর ঃ ওয়াদা পালন করা অর্থ কথা দিয়ে কথা রাখা। কথামতো কাজ করা। চুক্তি রক্ষা করা। করো সাথে কোন কথা দিলে তা রক্ষা করার নাম ওয়াদা পালন করা। আরমা কথাবার্তার বা কাজেকর্মে কারো সাথে কোন কথা দিয়ে থাকলে বা চুক্তি করলে তা পূরণ করব। তাহলে সবাই বিশ্বাস করবে, ভালোবাসবে। আল্লাহও খুশি হবেন। আল্লাহ বলেন- “হে মুমিনগণ! তোমরা ওয়াদা পূরণ কর।” যে ওয়াদা পালন করে সে সকলের কাছে প্রিয় হয়। সকলে তাকে বিশ্বাস করে, ভালোবাসে। বিপদে পড়লে সাহায্য করে। আল্ল্হা তার প্রতি খুশি থাকে। ওয়াদা পালন না করলে ধর্ম থাকে না।
মহানবি (স) বলেন- “যে ওয়াদা পালন করে না, তার ধর্ম নেই। ” আমরা কথা দিয়ে কথা রাকব, ওয়াদা পালন করব। কথা মতো কজ করব, মানুষের ভালোবাসা ভাল করব। কখনো ওয়াদা ভঙ্গ করব না, অবিশ্বাসী হবো না। আল্লাহর প্রিয় হবো, জান্নাত লাভ করব।

১৩.    যে লোভ করে তাকে কী বলে ?
উত্তর ঃ যে যত পায় সে আরও চায়। আর এই বেশি চাওয়ার নামই লোভ। লোভ করা পাপ। লোভ আমাদের অনেক ক্ষতি করে। অনেক অশান্তি সৃষ্টি করে । দুঃখ কষ্ট বাড়ায়। লোভের কারণে মানুষ নানা অন্যায়ে লিপ্ত হয়। ফলে সে পাপ করে। সে সুখী হয় না। সে শানিত পায় নরা। যে লোভ করে তাকে লোভী বলে। লোভী মানুষকে কেউ ভালোবাসে না। সম্মান দেয় না। সকলে তাকে ঘৃণা করে। কেউ তার সাথ বন্ধুত্ব করে না, মেলামেশা করে না। তার বিপদে কেউ সাহায্য করে না সে পাপী। আর এই পাপ তাকে মৃত্যুর দিকে টেনে নেয়। ধ্বংসের দিকে নিয় যায়। কথায় বলে- ‘লোভে পাপ, আর পাপে মৃত্যু’

১৪.    অপচয় অর্থ কী?
উত্তর ঃ অপচয় অর্থ ক্ষতি, অপব্যয়, নষ্ট। বিনা প্রয়োজনে কোনো কিছু নস্ট করাকে অপচয় বলে। অপচয় করা বড় পাপ। আল্লাহ বলেন, অর্থ : “নিশ্চয় অপচয়কারীরা শয়তানের ভাই।”
আমরা অনেক সময় অনেক জিনিষ নষ্ট করি, অপচয় করি। প্রয়োজনের বেমি খাবার নিই। খেতে পারি না, ফেলে দেই। বিনা প্রয়োজনে স্কুলের ও ঘরের বাতি জ্বালিয়ে রাখি। ফ্যান চালাই। পারিন কল খুলে রাখি, এতে বিদ্যুৎ অপচয় হয়। পানি নষ্ট হয়। অকারণে গ্যাসের চুলা জ্বালিয়ে রাখি। মনে করি যে একটা দিয়াশলাইয়ের কাঠি বেঁচে গেল। কিন্তু এতে প্রচুর গ্যাস অপচয় হলো। আমদের মধ্যে অনেকে বাজি পোড়ায়, পটকা ফোটায়, এসব অপচয়। অনেকে বিড়ি, সিগারেট খায় এগুলো স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এগুলো খেলে ক্যান্সার হয়। টাকা পয়সার অপচয় হয়। অনেকে দুষ্টুমির করে করকুটায় আগুদেয়। এতে অনেক ময় বিপদ ঘটে। ঘরে আগুণ লাগে, দোকানে আগুণ লাগে, এ সব কিছুই অপচয়।

১৫.    কারো অনুপস্থিতিতে তার দোষের কথা বলার নাম কী?
উত্তর ঃ পরনিন্দা করা অর্থ গিবত করা, পরচর্চা করা, পরচর্চা মকরা, দুর্ণাম রটানো। কারো অনুপস্থিতিতে তার দোষের কথা বলার নাম গিবত বা পরনিন্দা। যে পরনিন্দা করে তাকে পরনিন্দুক বলে। পরনিন্দা করা হারাম। মহান আল্লাহ পরনিন্দা করতে নিষেধ করেছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন,  তোমরা একে ঃঅপরের দোষ খুঁজে বেড়াবে না।” আল্লাহ তায়ালা পরনিন্দা করাকে মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়ার সাথে তুলনা করেছেন। কোনো ভাই তার মৃত ভাইয়ের গোমত কখনো খেতে পারে না। এটা জঘন্যতম অপরাধ । এটা মহাপাপ।

বর্ণনামূলক প্রশ্ন ঃ-
১.    সচ্চরিত্র কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ আখলাক (            ) এর অর্থ স্বভাব, চরিত্র। আখলাক দুই প্রকার। একটি আখলাকে হামিদা অপরটি আখলাকে যামিমা। সুন্দর ও ভালো চরিত্রকে আরবিতে আখলাক হামিদা বলে। যেমন সত্য কথা বলা। রোগীদের সেবা করা। আব্বা-আম্মার কথা শুনা। আব্বা-আম্মাকে সম্মান করা। শিক্ষককে ম্মান করা। আল্লাহর ইবাদত করা। বড়দের শ্রদ্ধা করা। প্রতিবেশীর সাথে ভালো ব্যবহার করা।

২.    আব্বা-আম্মার সাথে ভালো ব্যবহারের তালিকা তৈরি কর।
উত্তর ঃ আব্বা-আম্মা আমাদের সবচেয়ে আপনজন। তাঁরা আমাদের জন্য অনেক কষ্ট করেন। ¯েœহ-মমতা ও দরদ দিয়ে লালনপালন করেন। আমাদে অসুখ-বিসুখ হলে তাঁরা সেবাযতœ কনে। তাঁরা সবসময় আমাদের কল্যান কামনা করেন। দোয়া করেন। তাই সবসময় আব্বা-আম্মার সাথে ভালো ব্যবহার করা আমাদের কর্তব্য। আল্লাহ বলেন- আব্বা-আম্মার সাথে উত্তম ব্যবহার কর।” আব্বা-আম্মার সাথে ভালো ব্যবহারের একটি তালিকা নিচে দেওয়া হলো:-
ক.    আমরা তাঁদের সম্মান করব।
খ.    শ্রদ্ধা করব।
গ.    তাঁদের সাথে রাগারাগি করব না।
ঘ.    ঝগড়াবিবাদ করব না।
ঙ.    কর্কশ ভাষায় কথা বলব না।
চ.    তাদের মনে কষ্ট দেব না।
ছ.    সবসময় হাসিমুখে কথা বলব।
জ.    বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় ও ফিরে এসে আব্বা-আম্মাকে সালাম দিয়ে বের হব।
ঝ.    সুন্দর সুন্দর কথা বলব। আল্লাহ তায়ালা বলেন- অর্থ: তুমি আব্বা-আম্মার সাথ সুন্দর কথা বল।
ঞ.    তাঁদের ভালো খাওয়া-পরার ব্যবস্থা করব।
ট.    তাঁদের অসুখ হলে সেবাযতœ করব।
ঠ.    তাঁদের আদেশ-নিষেধ মেনে চলব।
ড.    তাঁরা বুড়ো হয়ে গেলে তাঁদের সাত খুব ভালো ব্যবহার করব।
ঢ.    কাঁদের বাজে ও চলাফেরায় সাহায্য করব।

৩.    আব্বা-আম্মার জন্য কুরআন মজিদে বর্ণিত দোয়াটি আরবিতে লিখ।
উত্তর ঃ আব্বা-আম্মার আমাদের সবচেয়ে আপনজন। তাঁরা আমাদের জন্য অনেক কষ্ট করেন। ¯েœহ-মমতা ও দরদ দিয়ে লালনপালন করেন। না খেয়ে আমাদের খাওয়ান। আমাদের অসুখ-বিসুখ হলে তাঁরা সেবাযতœ করেন। আমাদে সুখে তাঁরা সুখী হন। আমাদের সুখে তাঁরা সুখী হন। আমাদের কষ্টে কষ্ট পান। তাঁরা সবসময় আমাদের কল্যাণ কামনা করেন। দোয়া করেন। তাই সবসময় আব্বা-আম্মার সাথে ভালোব্রবহার করা আমাদের কর্তব্য। আব্বা-আম্মার মৃত্যুর পর আমরা কি বরে দোয়া করব তা কুরআন মাজিদে আল্লা বলে দিয়েছেন। দোয়াটি হলো-
অর্থ:- হে আমার প্রতিপালক, আমার আব্বা-আম্মা আমাকে ছোটবেলায় যেমনি সেবাযতেœ লালনপালন করেছেন, আপনি তাঁদের প্রতি তেমনি দয়া করুন।

৪.    বড়দের সাথে আমাদের কেমন ব্যবহার করা উচিৎ?
উত্তর ঃ আব্বা-আম্মা আমাদে আদর করেন। দাদা-দাদি ও নানা-নানি আদর করেন। শিক্ষক আমাদে স্œেহ করেন। যারা বয়সে বড় তাঁরা আমাদের ভালোবাসেন, ¯েœহ করেন। আমরা বড়দের সম্মান করব। যেসব ছেলেমেয়েরা আমাদের উপরের শ্রেণিতে পড়ে আমরা তাঁদের সম্মান করব। আমাদের বাড়ির যেসব কাজের লোক বয়সে বড় আমরা তাঁদের শ্রদ্ধাদ করব, সম্মান করব। যারা বয়সে বড় তাদের সাথে দেখা হলে আমরা তাঁদের সালাম দেব। আদরের সাথে কথা বলব, ভালো ব্যবহার করব, আদেশ-নিষেধ মেনে চলব। তাদের সাথে কখনো বেয়াদতবি করব না। মহানবি (স) বলেন- “যে ছোটদের ¯েœহ করে না, আর বড়দের সম্মান করেন না, সে আমার উম্মত না।”

৫.    শিক্ষক আমাদের কী কী শেখান?
উত্তর ঃ আব্বা-আম্মার মতো শিক্ষক আমাদের আপনজন। আমরা তাঁকে সম্মা করব, শ্রদ্ধা করব। শিক্ষক আমাদের যা যা শেখান তা হলো-
ক.    আব্বা-আম্মার মতো শিক্ষক আমাদের প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলেন।
খ.    তিনি আমাদের কুরআন, সালাত ও আদ-কায়দা শেখান।
গ.    তিনি সৎ ও ন্যায়ের পথে চলতে শেখান।
ঘ.    অন্যায় ও অসৎ পথে চলতে নিষেধ করেন।
ঙ.    কেমনভাবে লিখতে হয়? কীভাবে পড়তে হয়? এসব শিক্ষক শেখান।
চ.    জ্ঞান-বিজ্ঞানের নানা বিষয় আমরা তাঁর কাছে শিখি।
ছ.    কুরআন ও হাদিসের কথা শিখি। দেশ ও দশের কথা শিখি।
তাই আমরা ওয়াদা করব, আমরা শিক্ষকের আদেশ-ইপদেশ মানব, তাঁকে সালাম দেব, তাঁর সেবা করব, তিনি যা শেখাবেন তাই মন দিয়ে শিখব, তাঁকে সম্মান করব, তার জন্য দোয়া করব।

৬.    প্রতিবেশী কারা/ আমরা প্রতিবেশীর সথেকীরূপ ব্যবহার করব?
উত্তর ঃ আমাদের আশেপাশে যারা বসবাস করে তার আমাদের প্রতিবেশী। বাস, ট্রেন, লঞ্চ, স্টিমারে সহযাত্রী আমাদে প্রতিবেশী। বিভিন্ন ছাত্রাবাসে অবস্থানকারী একে অপরের প্রতিবেশীর মতো। আমরা প্রতিবেশীর সাথে ভালো ব্যবহার করব। কেউ ক্ষধার্ত হলে তাকে কাদ্য দেব। তাকে সাধ্য মত সাহায্য করব। মহানবি (স) আরও বলেন, “আল্লাহর কাছে সেই সবচেয়ে উত্তম, যে তার প্রতিবেশীর কাছ উত্তম।” আব্বা-আম্মার সাথে ভালো ব্যবহারের একটি তালিকা নিচে দেওয়া হলো-
ক.    আমরা প্রতিবেশীর সাথ ভালো ব্যবহার করব।
খ.    তাদের সাথে কুশল বিনিময় করব।
গ.    কেউ ক্ষুধার্ত হলে তাকে খাদ্য দেব।
ঘ.    প্রতিবেশী অসুস্থ হলে সেবা করব। বিপদে সাহায্য করব।
ঙ.    তার যাতায়াদের রাস্তা বন্ধ করব করে দেব না।
চ.    প্রতিবেশীর সুখে খুশি হবো। তার কষ্টে কষ্ট পাব।
ছ.    যেখাবে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলব না।
জ.    জোরে টেলিভিশন, রেডিও-ক্যাসেট বাজাব না, যাতে প্রতিবেশীর অসুবিধা হয়।
ঝ.    প্রতিবেশীর সাথে ঝগড়া করব না।
আমরা প্রতিবেশীর সাথে মিলেমিশে থাকব। তাহলে পরিবেশ সুন্দর হবে। সুখ-শান্তি বজায় থাকবে। প্রতিবেশীর মৃত্যু হলে তার বাসায় যাব। বাসার সবাইকে সান্তনা দেব। সহানুভূতি জানাব। জনাজায় শরিক হবো। যদি প্রতিবেশী অন্য ধর্মের হয় তাদের সাথেও সুন্দর ব্যবহার করব।

৭.    ফুয়াদের আম্মার জ্বর হলে ফুয়াদ কী করেছিল?
উত্তর ঃ ফুয়াদ খুব ভালো ছেলে। একবার তার আম্মার ভীষণ জ্বর হলো। বাসায় আর কেউ নেই। সে তার আম্মার চিকিৎসার জন্য ডাক্তার ডেকে নিয়ে আসর। ডাক্তার সাহেব তার আম্মাকে পরীক্ষা করে বলঅ, “ফুয়াদ তোমার আম্মার মাথায় পানি দাও। আর এই ওয়ুধ সময়মতো খাওয়াবে। ” ফুয়াদ সময়মতো তার আম্মাকে ওষুধ খাওয়াল। মাথায় পানি দিল। আল্লাহর কাছে তার আম্মার আরোগ্য লাভের দোয়া করল। আল্লাহর রহমতে তার আম্মা সুস্থ হয়ে উঠল। ফুয়াদ আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করল। মহানবি (স) বলেছন- “তোমরা রোগীর সেবা কর।”
আমরা রোগীর সেবাযতœ করব, তার খুঁজখবর  নেব, আল্লাহর কাছে আরোগ্যের জন্য দোয়া করব।

৮.    সত্যবাদীর প্রতি মানুষের ধারণ কেমন?
উত্তর ঃ সত্যকথা বলা মহৎ গুণ। যে সত্যকথা বলে তাকে সত্যবাদী বলে। সত্যবাদীকে আরবিতে সাদিক বলা হয়। যে সত্যকথা বলে তাকে সকলে ভালোবাসে। সকলে বিশ্বস করে। আল্লাহও তাকে ভালোবাসে। পৃথিবীতে সে সকলের প্রিয় ও সম্মানি। তার বিপদে সবাই সাহায্য করে। আমাদের মহানবি (স) বলেন- “সত্য মানুষকে মুক্তি দেয়, আর মিথ্যা ধ্বংস করে।” মহানবি (স) আরও বলেন- “তোমরা সবসময় সত্য বলবে। কেননা সত্য পুণ্যের পথে নিয়ে যায়। আর পুণ্য জান্নাতে নিয়ে যায়।”

৯.    ওয়াদা পালন করার উপকারিতা কী?
উত্তর ঃ ওয়াদা পালন করা অর্থ কথা দিয়ে কথা রাখা। কথামতো কাজ করা। চুক্তি রক্ষা করা। কারো সাথে কোনো কথা দিলে তা রক্ষা করার নাম ওয়াদা পালন করা। আমরা কথাবার্তায় কাজেকর্মে কারো সাথে কোনো কথা দিয়ে থাকলে বা চুক্তি করলে তা পূরণ করব।। তাহলে সবাই বিশ্বাস করবে, ভালোবাসবে, আল্লাহও খুশি হবেন। আল্লাহ বলেন- “হে মুমিনগণ! তোমরা ওয়াদা পূরণ কর।” যে ওয়াদা পালন করে সে সকলের কাছে প্রিয় হয়, সম্মানিত হয়। সকলে তাকে বিশ্বাস করে, ভালোবাসে। বিপদে পড়লে সাহায্য করে। আল্লাহ তার প্রতি খুশি হয়। আখিরাতে সে সুখ-শান্তি পায়, জান্নাত লাভ করে।
আমাদের মহানবি (স) কাউকে কোন কথা দিলে তা রক্ষা করতেন। ওয়াদা পালন না করলে ধর্ম থাকে না। মহানবি (স) বলেন- “যে ওয়াদা পালন করে না, তার ধর্ম নেই।” আমরা কথা দিয়ে কথা রাখব, ওয়াদা পালন করব। কথা মতো কাজ করব।

১০.    লোভ মানুষের কী কী ক্ষতি করে?
উত্তর ঃ যে যত পায় সে আরও চায়। আর এই বেশি চাওয়ার নামই লোভ। লোভ করা পাপ। লোভ আমাদের অনেক ক্ষতি করে। অনেক অশান্তি সৃষ্টি করে । দুঃখ কষ্ট বাড়ায়। লোভের কারণে মানুষ নানা অন্যায়ে লিপ্ত হয়। ফলে সে পাপ করে। সে সুখী হয় না। সে শানিত পায় নরা। যে লোভ করে তাকে লোভী বলে। লোভী মানুষকে কেউ ভালোবাসে না। সম্মান দেয় না। সকলে তাকে ঘৃণা করে। কেউ তার সাথ বন্ধুত্ব করে না, মেলামেশা করে না। তার বিপদে কেউ সাহায্য করে না সে পাপী। আর এই পাপ তাকে মৃত্যুর দিকে টেনে নেয়। ধ্বংসের দিকে নিয় যায়। কথায় বলে- ‘লোভে পাপ, আর পাপে মৃত্যু’। মহানবি (স) বলেন, “তোমরা লোভ থেকে সাবধান থাক। লোভ তোমারদের পূর্ববর্তী লোকদের ধ্বংস করে দিয়েছে।” তাই আমরা সবসময়  লোব থেকে বেঁচে থাকব এবং সাবধান করব।

১১.    অপচয় থেকে বিরত থাকার জন্য আমরা কী করব?
উত্তর ঃ অপচয় অর্থ ক্ষতি, অপব্যয়, নষ্ট। বিনা প্রয়োজনে কোনো কিছু নস্ট করাকে অপচয় বলে। অপচয় করা বড় পাপ। আল্লাহ বলেন, অর্থ- “নিশ্চয় অপচয়কারীরা শয়তানের ভাই।” অপচয় থেকে বিরত থাকার জন্য আমরা যা করব-
ক.    প্রয়োজনের বেশি খাবার নিব না।
খ.    বিনা প্রয়োজনে স্কুলের ও ঘরের বাতি জ্বালিয়ে রাখব না। ফ্যান চালাব না। এতে বিদ্যুতের অপচয় হয়।
গ.    পানির কল খুলে রাখব না। এতে পারিন অপচয় হয়।
ঘ.    অকারণে গ্যাসের চুলা জ্বালিয়ে রাখব না। এতে প্রচুর গ্যাস অপচয় হয়।
ঙ.    বাজি পেড়াবা না, পটকা ফোটাব না।
চ.    বিড়ি, সিগারেট কাব না। এগুলো খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। টাকা পয়সার অপচয় হয়।
ছ.    দুষ্টুমির করে খড়কুটায় আগুন  দেব না, অপচয় করব না, যথাযত ব্যবহার করব। ব্যক্তিগত ও জাতীয় সম্পদ রক্ষা করব। আল্লাহর হুকুম মেনে চলব।

১২.    আল্লাহ পরনিন্দা না করার জন্য কী বলেছেন?
উত্তর ঃ পরনিন্দা করা অর্থ গিবত করা, পরচর্চা করা, পরচর্চা মকরা, দুর্ণাম রটানো। কারো অনুপস্থিতিতে তার দোষের কথা বলার নাম গিবত বা পরনিন্দা। যে পরনিন্দা করে তাকে পরনিন্দুক বলে। পরনিন্দা করা হারাম। মহান আল্লাহ পরনিন্দা করতে নিষেধ করেছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন,  তোমরা একে ঃঅপরের দোষ খুঁজে বেড়াবে না।” আল্লাহ তায়ালা পরনিন্দা করাকে মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়ার সাথে তুলনা করেছেন। কোনো ভাই তার মৃত ভাইয়ের গোমত কখনো খেতে পারে না। এটা জঘন্যতম অপরাধ , এটা মহাপাপ। পরনিন্দুক মহাপাপী, সে সমাজে শান্তি নষ্ট করে। আল্লাহ তাকে ঘৃণা করেন, ভালো বাসেন না। যে ব্যক্তি পরনিন্দা বা গিবত করে সে জান্নাতে যেতে পারবে না।
আমরা পরনিন্দা করব না, পরনিন্দা শুনব না। সুন্দর জীবন গড়ব, সুন্দর সমাজ গড়ব।

অনুশীলনীর নমুনা প্রশ্ন
Previous Post Next Post

نموذج الاتصال